প্রথম পাতা
যাত্রাবাড়ীতে ৪৮ ঘণ্টা ধরে সংঘর্ষ
স্টাফ রিপোর্টার
১৯ জুলাই ২০২৪, শুক্রবারকোটা সংস্কারের দাবিতে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর শনির আখড়ায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ৪৮ ঘণ্টা ধরে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। এতে চারজন নিহতসহ গুলিবিদ্ধ ও ইটপাটকেলের আঘাতে উভয়পক্ষের শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে একজন সাংবাদিকও রয়েছেন।
বুধবার সকাল ১০টা থেকে যাত্রাবাড়ীর শনির আখড়া থেকে সাইনবোর্ড পর্যন্ত এলাকায় দনিয়া কলেজের শিক্ষার্থীরাসহ স্থানীয় কলেজের শত শত শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেন। এ সময় তাদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দিতে পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ বাধে। ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় রণক্ষেত্রে রূপ নেয় যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পুরো এলাকা। দিনের সংঘর্ষ চলে পুরো রাত জুড়ে। সংঘর্ষের একপর্যায়ে আন্দোলনকারীরা মেয়র হানিফ উড়ালসড়কের কাজলা অংশের টোল প্লাজায় আগুন ধরিয়ে দেন। এ সময় সড়কের প্রায় ২০টি স্পটে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা থেকে মাতুয়াইল মা ও শিশু হাসপাতাল পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা সড়কে গাছের গুঁড়ি জ্বালিয়ে সড়ক অবরুদ্ধ করে রাখে। তাদের নিভৃত করতে যাত্রাবাড়ী থানা এলাকায় পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, আনসার সদস্যরা অবস্থান নিয়ে টিয়ারশেল, রাবার বুলেট, সাউন্ড গ্রেনেড, গুলি ছুড়তে থাকে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ছোড়া গুলিতে বুধবার রাতেই বাবা-ছেলেসহ ৬ জন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত অর্ধশত আহত হন। শিক্ষার্থীদের চালানো সারারাতের আন্দোলনে সকাল থেকে যোগ দেয় স্থানীয় সাধারণ মানুষও। বৃহস্পতিবার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা থেকে সাইনবোর্ড পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। ওই সময় থেকে গতকাল রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ ছিল। শুধু এম্বুলেন্স ছাড়া ওই সড়কে আর কোনো যানবাহন চলছে না। পুলিশ সড়ক দখল নেয়ার জন্য মুহুর্মুহু রাবার বুলেট, সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করেও ব্যর্থ হয়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ৪৮ ঘণ্টা চলা সংঘর্ষে পুলিশের গুলিতে যাত্রাবাড়ীর কাজলা ও শনির আখড়া এলাকায় সাংবাদিক ও শিক্ষার্থীসহ মোট ৫ জন নিহত হয়েছেন।
যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান বলেন, বিক্ষোভকারীরা এখনো সড়ক অবরোধ করে রেখেছেন। ফলে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। তারা থানা ভবনেও ইটপাটকেল ছুড়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে পুলিশ।