ঢাকা, ২০ জুন ২০২৫, শুক্রবার, ৬ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২২ জিলহজ্জ ১৪৪৬ হিঃ

বিশ্বজমিন

বিদেশি মিডিয়ার খবর

শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে উত্তাল বাংলাদেশ

মানবজমিন ডেস্ক
১৯ জুলাই ২০২৪, শুক্রবার
mzamin

কোটা সংস্কারপন্থি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে উত্তাল বাংলাদেশ। বিভিন্ন স্থানে তাদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ চলছে। বৃহস্পতিবার পূর্ণাঙ্গ শাটডাউন পালন করেন তারা। এদিন দেশের স্বাভাবিক যান চলাচল ছিল কার্যত অচল। বিদেশি সংবাদ মাধ্যমগুলো এ খবর দিয়ে লিখেছে, চলতি মাসের শুরু থেকেই বাংলাদেশে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করছে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। ১লা জুলাই থেকে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সমাজের’ ব্যানারে প্রথম আন্দোলনের ডাক দেয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোটা সংস্কারপন্থি ছাত্ররা। এরপর তাদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে প্রতিটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ ক্যাম্পাসে কোটা সংস্কারের আন্দোলন শুরু করেন। পরে ধীরে ধীরে আন্দোলনে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীরাও যোগ দেন। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোতে শুরু থেকেই কোটা বিরোধী আন্দোলনের খবর গুরুত্বের সঙ্গে প্রকাশ হতে থাকে। ১৮ই জুলাইয়ের আন্দোলন নিয়ে তুর্কি বার্তা সংস্থা আনাদোলুতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা বাতিলের দাবিতে সারা দেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার দিনের শুরুতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন। আনাদোলুর খবর বলছে, দেশ জুড়ে অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করেছে সরকার। দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে ৭ হাজারের বেশি অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। শেষ দিন যাবৎ আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশের চড়াও হওয়ার বিষয়টিও উল্লেখ করেছে আনাদোলু।
অনলাইন আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে উত্তাল বাংলাদেশ। গণমাধ্যমটি তার খবরে আরও বলছে, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারীদের উত্তরসূরিদের জন্য প্রায় এক-তৃতীয়াংশ কোটা সংরক্ষিত রাখার বিষয়ে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে গত ১লা জুলাই থেকে সরকারি চাকরিতে কোটা অপসারণের দাবিতে দেশ জুড়ে আন্দোলনে নেমেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবি ৫৬ শতাংশ কোটা ব্যবস্থা সংস্কার করতে হবে। এরপর কয়েকদিন আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি বক্তব্যকে কেন্দ্র করে উত্তেজিত হয়ে পড়েন সারা দেশের শিক্ষার্থীরা। এতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর চড়াও হয়েছে ছাত্রলীগ এবং পুলিশ। আল জাজিরার এক বিশ্লেষক বলেছেন, এই বিক্ষোভ শুধু আন্দোলনের আকার প্রকাশ করছে না বরং তাদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের বিষয়টিও এখানে গুরুত্বপূর্ণ। উইলসন সেন্টারের দক্ষিণ এশিয়া ইনস্টিটিউটের পরিচালক মাইকেল কুগেলম্যান বলেছেন, আপনারা দেখুন বাংলাদেশে কারা বিক্ষোভে নেমেছেন। অর্থাৎ তিনি বলতে চেয়েছেন বর্তমানে সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি আদায়ে আন্দোলনে নেমেছেনÑ যাদের দমনের চেষ্টা চলছে।
মালয়েশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ গণমাধ্যম মালয়মেইলের খবরে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতিকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। তারা বিক্ষোভ চালিয়ে যাওয়ার শপথ নিয়েছেন। ১৭ই জুলাই সন্ধ্যায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন। সেখানে তিনি আদালতের রায়ে শিক্ষার্থীরা ন্যায়বিচার পাবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তবে শিক্ষার্থীরা এই প্রতিশ্রুতিকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের পরপরই শিক্ষার্থীরা ১৮ই জুলাই সারা দেশে শাটডাউন কর্মসূচি দেন। তার প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার সারা দেশে আন্দোলনে নামেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। 
বার্তা সংস্থা রয়টার্স লিখেছে, বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ছুড়েছে পুলিশ। ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এ পর্যন্ত এ নিয়ে সংঘর্ষে কমপক্ষে ৬ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন কয়েক শত। তবু এই আন্দোলন স্তিমিত হওয়ার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। রাজধানী ঢাকায় দোকানপাট ও অফিস খোলা থাকলেও রাস্তায় বাস নেই বললেই চলে। বন্দরনগরী চট্টগ্রামে মহাসড়কে অবরোধ সৃষ্টির সময় ছাত্রদের ওপর চড়াও হয় পুলিশ। এ সময় ছাত্রদের ইটপাথর নিক্ষেপের জবাবে কাঁদানে গ্যাস ছুড়েছে পুলিশ। তথ্যপ্রযুত্তি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক বলেছেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা রকম গুজব এবং অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির প্রেক্ষাপটে অস্থায়ী ভিত্তিতে মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এলে এই সেবা আবার চালু হবে। বিরোধী দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’র বর্জনের মধ্যদিয়ে জানুয়ারিতে বাংলাদেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তারপর থেকে টানা চতুর্থ মেয়াদে সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নির্বাচনের পর এই প্রতিবাদ বিক্ষোভই হচ্ছে এই সরকারের সামনে প্রথম বড় কোনো চ্যালেঞ্জ। বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যা প্রায় ১৭ কোটি। এর মধ্যে প্রায় ৩ কোটি ২০ লাখ মানুষ কর্মহীন। বেকার যুবকদের সংখ্যা অনেক বেশি। তাদের ক্ষোভ থেকে এই ছাত্র আন্দোলন। তারা স্বাধীনতা যুদ্ধের মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের জন্য সরকারি চাকরিতে শতকরা ৩০ ভাগ কোটা বাতিল করার আন্দোলন করছেন। মহাসড়কগুলোতে প্রতিবাদ বিক্ষোভে বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষ হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, ঢাকার বিভিন্ন স্থানে দাঙ্গা পুলিশ বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে লড়াই করছিল। বুধবার থেকে কর্তৃপক্ষ সব সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মোতায়েন করা হয়েছে দাঙ্গা পুলিশ ও বিজিবি। বুধবারের ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে, বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাস ছোড়ার ফলে মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে বিচার বিভাগীয় প্যানেল গঠন করবে সরকার। তিনি আরও জানান, ৭ই আগস্ট হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সরকারের আপিল শুনানি করবে সুপ্রিম কোর্ট। সেই রায় পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের শান্ত থাকার আহ্বান জানান শেখ হাসিনা। বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে ভয়াবহ সহিংসতায় লিপ্ত হয় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ছাত্র বিষয়ক সংগঠন ছাত্রলীগের সদস্যরা। পুলিশ বলেছে, মঙ্গলবারের সংঘর্ষে নিহত ৬ জনের মধ্যে কমপক্ষে তিনজন ছাত্র। বিক্ষোভকারীদের দাবি প্রত্যাখ্যান করেন শেখ হাসিনা। এরপরই বিক্ষোভ তীব্র হয়ে ওঠে। সহিংসতা থেকে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের সুরক্ষিত রাখতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল সহ মানবাধিকার সংস্থাগুলো। 
ভারতের বার্তা সংস্থা পিটিআই লিখেছে, নিরাপত্তা রক্ষাকারীদের হাতে কমপক্ষে ৬ জন নিহত হওয়ার পর বৃহস্পতিবার সারা দেশে পুরোপুরি শাটডাউন আহ্বান করে কোটা বিরোধী শিক্ষার্থীরা। এই আন্দোলনের একজন গুরুত্বপূর্ণ সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ ফেসবুক পোস্টে বলেছেন, হাসপাতাল ও জরুরি সেবাখাত বাদে সমস্ত কিছু বন্ধ থাকবে। শুধু এম্বুলেন্স সার্ভিস অনুমোদিত। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে যোগ দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। একই সঙ্গে সন্তানদের সমর্থন দিতে অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। ওদিকে ছাত্র বিক্ষোভের সময় সহিংসতায় হতাহতের ঘটনায় বুধবার জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গভীর অনুশোচনা প্রকাশ করেছেন। বলেছেন, বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। এ সময় তিনি সুপ্রিম কোর্টের প্রতি আস্থা রাখতে আন্দোলনকারীদের প্রতি আহ্বান জানান। 
বার্তা সংস্থা এএফপি লিখেছে, ভয়াবহ প্রতিবাদ বিক্ষোভের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা। তারা বৃহস্পতিবার সারা দেশে পূর্ণাঙ্গ শাটডাউন পালন করেন। বিক্ষোভে নিহত ৭ জনের বিচারের প্রতিশ্রুতি সহ ন্যায়বিচারের প্রতিশ্রুতি দিলেও প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাব মেনে নেননি আন্দোলনকারীরা। তার সরকার সব স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে। সরকারি চাকরিতে সম অধিকারের দাবিতে কয়েক সপ্তাহ ধরে যে বিক্ষোভ চলছে তা নিয়ন্ত্রণের জন্য জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সরকার। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছুড়েছে দাঙ্গা পুলিশ। অন্যদিকে বিক্ষোভকারী এবং প্রধানমন্ত্রীর আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠনের শিক্ষার্থীদের মধ্যে রাস্তায় লড়াই চলছিল। বুধবার জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে বিক্ষোভকারীদের হত্যা করার নিন্দা জানিয়েছেন শেখ হাসিনা। প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন রাজনৈতিক পরিচয় যা-ই হোক এর জন্য দায়ীদের শাস্তি নিশ্চিত করা হবে। কিন্তু এ মাসের বিক্ষোভের প্রধান গ্রুপ স্টুডেন্টস এগেইনস্ট ডিসক্রিমিনেশন বা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র’রা বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য আন্তরিক ছিল না। এই গ্রুপের একজন সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ বলেছেন, তার দলের নেতাকর্মীরা যে হত্যাকাণ্ড ও  নৈরাজ্য সৃষ্টি করেছে তা তার কথায় প্রতিফলিত হয়নি। গ্রুপটি বৃহস্পতিবার সারা দেশে পূর্ণাঙ্গ শাটডাউন আহ্বান করে। 
দোকানপাট বন্ধ রাখার আহ্বান জানায় তারা। এই আহ্বান রাজধানী ঢাকায় ব্যাপকভাবে পালিত হয়েছে। স্বাভাবিক সময় ঢাকার রাজপথে যানজট থাকে। সেই রাজপথে যানবাহন দেখা যায়নি বললেই চলে। ঢাকার বাসিন্দারা বৃহস্পতিবার মোবাইল নেটওয়ার্ক না পাওয়ার ব্যাপক অভিযোগ করেছেন। ফেসবুকের সুবিধা দু’দিন আগে বন্ধ করে দেয় ইন্টারনেট প্রোভাইডাররা। আগের দিন রাতে সপ্তম একজন প্রতিবাদকারী নিহতের ঘোষণা বৃহস্পতিবার দিয়েছে পুলিশ। এদিন ১৮ বছর বয়সী ওই কিশোরকে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশ ইন্সপেক্টর বাচ্চু মিয়া বলেছেন, রাবার বুলেট বিদ্ধ হয়েছিলেন তিনি। তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়েছিল। কিন্তু হাসপাতালে ভর্তির আগেই তিনি মারা যান। এ রাতে আহত হয়েছেন কয়েক শত। 
বুধবার রাতে আহতের সংখ্যা কমপক্ষে ৫০০। এর আগে মঙ্গলবার হত্যা করা হয়েছে ৬ জনকে। এ সপ্তাহে মানবাধিকার গ্রুপ অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, ভিডিও তথ্যপ্রমাণ বলছে যে- বেআইনি শক্তি ব্যবহার করেছে বাংলাদেশি নিরাপত্তা বাহিনী। 
 

বিশ্বজমিন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

বিশ্বজমিন সর্বাধিক পঠিত

ইরানের আকাশসীমা দখলের দাবি ইসরাইলের/ ‘আকাশে যুদ্ধবিমান দেখা যাবে, তেহরান জ্বলবে’

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status