খেলা
সিংহাসন ধরে রেখে আলকারাজ বললেন, ‘অনেক দূর যেতে হবে’
স্পোর্টস ডেস্ক
১৬ জুলাই ২০২৪, মঙ্গলবার
উইম্বলডনের ফাইনালে কার্লোস আলকারাজের কাছে আবারো হারলেন নোভাক জকোভিচ। নারী-পুরুষ মিলিয়ে গ্র্যান্ড স্লাম শিরোপা জয়ের রেকর্ডে মার্গারেট কোর্টকে ছাড়িয়ে এককভাবে নিজের করে নিতে পারেননি সার্বিয়ান তারকা। গতবারের ফাইনালে হারের প্রতিশোধও নেওয়া হলো না। এবারের ফাইনালটা আলকারাজ জিতলেন অনেকটা হেসেখেলেই। রোববার লন্ডনে উইম্বলডনের ফাইনালে আলকারাজ জেতেন সরাসরি সেটে ৬-২, ৬-২, ৭-৬ (৭/৪) গেমে । লড়াই স্থায়ী ছিল মাত্র ২ ঘণ্টা ২৭ মিনিট। আর তাতে চতুর্থ গ্র্যান্ড স্লাম শিরোপার দেখা পেয়ে গেলেন এই স্প্যানিশ তরুণ। অথচ গতবার কী মহাকাব্যিক এক ফাইনালই না হয়েছে। ৪ ঘণ্টা ৪২ মিনিটের পাঁচ সেটের লড়াই শেষে ১-৬, ৭-৬ (৮/৬), ৬-১, ৩-৬, ৬-৪ গেমে জিতেছিলেন আলকারাজ। তাতেই এক বছরে জকোভিচের সবক’টি গ্র্যান্ড স্লাম জয়ের অভিযানে ছেদ পড়েছিল। ২০২৩ সালে উইম্বলডন ছাড়া অন্য তিনটি গ্র্যান্ড স্লামই জিতেছেন জকোভিচ। সেই জকোভিচ এ বছর দেখেন মুদ্রার উল্টোপিঠ। তাতে অবশ্য তার হাঁটুর ইনজুরিও কম দায়ী নয়।
বছরের প্রথম গ্র্যান্ড স্লাম অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের সেমিফাইনাল থেকে বাদ পড়া জকোভিচ ফ্রেঞ্চ ওপেনের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে নাম প্রত্যাহার করে নেন হাঁটুর চোটের কারণে। এরপর অস্ত্রোপচার করানোর মাস না যেতেই নেমে পড়েন উইম্বলডনের শিরোপা পুনরুদ্ধারে।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত জকোভিচের ৩৭ বছর বয়সী চোটে জর্জর শরীর কুলিয়ে উঠতে পারেনি আলকারাজের ২১ বছর বয়সী সতেজতার কাছে। প্রথম দুই সেটে সহজেই হার মানার পর জকোভিচ ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দেন তৃতীয় সেটে। সেই গেমে ৫-৪ গেমে পিছিয়ে পড়ার পর জকোভিচ উল্টো এগিয়ে যান ৬-৫ গেমে। কিন্তু পরের গেমে জকোভিচকে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতাই গড়তে দেননি আলকারাজ, জেতেন ৫০-০ পয়েন্টে। এরপর টাইব্রেকার, আর তাতে জিতে উইম্বলডনের সিংহাসন ধরে রাখেন আলকারাজ।
ম্যাচ জিতে প্রথমেই নিজের দলের দিকে দৌড়ে যান আলকারাজ। রেলিং টপকে পৌঁছে যান গ্যালারিতে। জড়িয়ে ধরেন বাবা, মা ও কোচকে। তার উচ্ছ্বাস ছিল বাঁধনহারা। এরপর কোর্টে ফিরে ব্রিটেনের যুবরানী কেট মিডলটনের হাত থেকে ট্রফি নেন। চ্যাম্পিয়ন হয়ে নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানান ২১ বছরের আলকারাজ। জয়ের পরও নিজেকে চ্যাম্পিয়ন বলতে নারাজ আলকারাজ, জকোভিচের প্রতি সম্মানসূচক বাক্য দিয়েই শুরু হয় তার কথা। তিনি বলেন, ‘জকোভিচ লড়াকু প্রতিপক্ষ। ও দারুণ লড়াই করেছেন। আমি শুধু নিজেকে শান্ত রেখেছিলাম। ইতিবাচক মানসিকতা নিয়ে খেলেছি। নিজের সেরা খেলাটা খেলার চেষ্টা করেছি। কিন্তু এখনও নিজেকে সেরাদের দলে রাখবো না। জকোভিচদের খেলা দেখে বড় হয়েছি। ওদের দেখে শিখেছি। ওরাই আমার কাছে নায়ক। ওদের সমান হতে গেলে এখনও অনেক দূর যেতে হবে।’
ম্যাচ হেরে জকোভিচ যোগ্য প্রতিপক্ষের কাছে হেরেছেন জানিয়ে বলেন, ‘এই ফলাফল আমি চাইনি। কিন্তু প্রথম দুটো সেটে নিজের সেরা টেনিস খেলতে পারিনি। কার্লোসকে শুভেচ্ছা। উচ্চমানের টেনিস খেলেছে। পিছনের কোর্ট থেকে যে ভাবে খেলছিল তা অসাধারণ। হয়তো আজ আমার জেতারই কথা ছিল না। ম্যাচটা যতটা সম্ভব টেনে নিয়ে যাওয়া যায় তাই চেয়েছি। যোগ্য হিসেবেই জিতেছে আলকারাজ। ওকে অনেক শুভেচ্ছা।’