খেলা
পেলের রেকর্ড ভেঙে ইয়ামাল বললেন, ‘স্পিক নাও’
স্পোর্টস ডেস্ক
১১ জুলাই ২০২৪, বৃহস্পতিবার
একগাদা রেকর্ড গড়ে স্পেনকে ইউরোর ফাইনালে তুললেন কিশোর প্রতিভা লামিন ইয়ামাল। ইয়ামাল গর্বের এক রেকর্ডে ছাড়িয়ে গেলেন ফুটবল কিংবদন্তি পেলেকেও। তবে নিজের প্রাপ্তি নিয়ে তার ভাবনা সামান্যই। তিনি বরং উচ্ছ্বসিত স্পেনকে ইউরোর ফাইনালে পৌঁছে দিতে পেরে। তার কাছে এটি স্বপ্ন সত্যি হওয়ার মতোই। ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের সেমিফাইনালে মঙ্গলবার ফ্রান্সকে ২-১ গোলে হারায় স্পেন। নবম মিনিটে গোল হজম করে পিছিয়ে পড়া স্পেনকে অল্প ব্যবধানেই সমতায় ফেরান ইয়ামাল। ১৯তম মিনিটে একক নৈপুণ্যে দুর্দান্ত এক গোল আদায় করেন ১৬ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড। চার মিনিটের মধ্যেই স্পেনকে দ্বিতীয় গোল এনে দেন আসরজুড়ে উজ্জ্বল নৈপুণ্য দেখানো আরো ফরোয়ার্ড দানি ওলমো। ইউরো ও বিশ্বকাপের ইতিহাস মিলিয়ে প্রথমবার গোল পেলেন ১৬ বছর বয়সী কোনো ফুটবলার। এতে ইয়ামাল ভেঙে দিলেন ফুটবলের ‘কালো মানিক’ পেলের রেকর্ড। এর আগে সবচেয়ে কম বয়সে গোল করার কীর্তি ছিল পেলের। ব্রাজিলের হয়ে ১৯৫৮ বিশ্বকাপে প্রথম গোলটি করার সময় পেলের বয়স ছিল ১৭ বছর ২৩৯ দিন। ইয়ামালের ১৭ পূর্ণ হবে এই শনিবার। রেকর্ডের কারণে গোলটি আলাদা করেই রয়ে যাবে ইতিহাসে। তবে যেভাবে তিনি গোলটি করেছেন, সেই কারণেও এটি স্মরণীয় হয়ে থাকবে। এবারের ইউরোর সেরা গোলগুলির মধ্যে এটি থাকবে নিশ্চিতভাবেই। ইয়ামাল অবশ্য নিজের গোলের চেয়ে বেশি খুশি দলের জয়ে। এটা তার কাছে স্বপ্ন সত্যি হওয়ার মুহূর্ত। স্পেনের মরোক্কান বংশোদ্ভূত ফুটবলার বলেন, “এই জয়ে এবং ফাইনালে উঠতে পেরে আমি দারুণ খুশি। জানি না, এটা টুর্নামেন্টের সেরা গোল কি না। তবে আমার কাছে এটা স্পেশাল, কারণ দল ফাইনালে উঠেছে। আমার জাতীয় দল ইউরোর ফাইনালে উঠেছে, আমার জন্য এটা সুপার স্পেশাল।” ইয়ামাল বলেন, “শেষ বাঁশি বাজার পর সত্যিই দারুণ লেগেছে। জাতীয় দলের সঙ্গে এরকম একটি ফাইনালে উঠতে পারা স্বপ্ন সত্যি হওয়ার মতো। আমার মা বলেছেন, তারও এটা স্বপ্ন ছিল। ফ্রান্সের বিপক্ষে আমার প্রথম গোল, সেমি-ফাইনালে গোল করতে পেরে খুবই খুশি আমি।”
বার্সেলোনার হয়ে পারফরম্যান্সে আগেই নজর কেড়েছিলেন ইয়ামাল। সবচেয়ে কম বয়সে নানা কিছু অর্জনের রেকর্ড তিনি গড়েছেন ক্লাবের জার্সিতেও। এরপর এবারের ইউরোর পারফরম্যান্সে তিনি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন দেশজুড়ে। আলাদা করেই ছাপ রেখেছেন ফুটবলবিশ্ব জুড়ে অনেকের মনে।
তবে যথারীতি এত গভীর ভাবনাও তাকে প্রভাবিত করে না খুব একটা। তিনি স্রেফ দলে অবদান রেখে যেতে চান। বলেন, “এসব নিয়ে আমি খুব একটা ভাবি না। ‘আইকন’ হয়েছি কি না, এসব জানি না। এসব ব্যাপার তো মাঠে কোনো কাজে লাগে না। আমার দরকার দলকে সহায়তা করা, সেটাই চেষ্টা করি সবসময় এবং আজকেও করেছি।”
এই গোলের পাশাপাশি আলোচনা চলছে তার উদযাপন নিয়েও। গোল করার পর ক্যামেরার সামনে এসে তিনি বলেছেন, “স্পিক নাউ- এবার কথা বলো।” ম্যাচ শেষে ইয়ামালকে এটা নিয়ে প্রশ্নও করা হলো। তবে সরাসরি জবাব দেননি তিনি। বলেন, “যাকে নিয়ে বলেছি, সে জানে যে মানুষটি কে।” ধারণা করা হচ্ছে এই উদযাপনে ফরাসি মিডফিল্ডার আদ্রিয়ান রাবিওকে জবাব দিয়েছেন ইয়ামাল। সেমিফাইনালের আগে ২৯ বছর বয়সী জুভেন্টাস তারকা বলেন, ‘স্পষ্টতই বড় টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালের চাপ সামলানো ওর জন্য কঠিন হতে পারে। সে এখন পর্যন্ত যা করেছে, ফাইনাল খেলতে চাইলে আমাদের বিপক্ষে এর চাইতে বেশি কিছু করতে হবে।’ এবারের ইউরোতে এটি স্পেনের টানা ষষ্ঠ জয়। ইউরোর ইতিহাসে টানা ছয় জয়ের রেকর্ড নেই আর কোনো দলের।
ইয়ামালের যত রেকর্ড
# ইউরোতে ম্যাচসেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জয়ী সবচেয়ে কম বয়সী খেলোয়াড়
# ইউরোতে গোল পাওয়া সবচেয়ে কম বয়সী খেলোয়াড়
# ইউরোতে সবচেয়ে কম বয়সী খেলোয়াড় হিসেবে অ্যাসিস্ট
# ইউরোতে খেলা সবচেয়ে কম বয়সী ফুটবলার