ঢাকা, ২ জুলাই ২০২৫, বুধবার, ১৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ৫ মহরম ১৪৪৭ হিঃ

শেষের পাতা

বরিশালে কোটিপতি সাব-রেজিস্ট্রারের গল্প

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল থেকে
২ জুলাই ২০২৪, মঙ্গলবার
mzamin

ঢাকার পর এবার বরিশালে সন্ধান মিলেছে এক কোটিপতির। তিনি চাকরি করেন হাজার টাকার, সম্পদ করেছেন শতকোটি টাকার। গত কয়েকদিন ধরে বরিশালে পত্রপত্রিকায় এ নিয়ে ধারাবাহিক সংবাদ প্রকাশ হচ্ছে। এই কোটিপতি বরিশাল সদর উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রার অসীম কল্লোল। নামে-বেনামে তিনি বিপুল সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। নানা উপায়ে কিনেছেন বিলাসবহুল দামি গাড়ি ও একাধিক বহুতল ভবন। ঢাকায় এবং বরিশালে ৩টি ফ্ল্যাটসহ সরকারি জমিতে করেছেন পাঁচতলা ভবন। নামে-বেনামে কিনেছেন একরের পর একর জমি। স্ত্রীর নামেও কিনেছেন একাধিক জমি, করেছেন মাছের ঘেরসহ এগ্রো ফার্ম। অসীম কল্লোল এ ব্যাপারে একটি পত্রিকায় প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছেন সম্পত্তি বা ফ্ল্যাট তার নিজের নামে নয় আত্মীয়স্বজনের নামে।
বিভিন্ন এলাকায় সরজমিন তার জমি ও সম্পদের খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বরিশাল নগরীর প্রাণকেন্দ্র পোর্ট রোড এলাকায় সরকারি খাসজমিতে করেছেন পাঁচতলা ভবন। ঢাকায় কিনেছেন দু’টি ফ্ল্যাট, বরিশাল নগরীর হাসপাতাল রোড এলাকার অগ্রণী হাউজিং লিমিটেডের ড্রিম প্যালেসে কিনেছেন কোটি টাকার ফ্ল্যাট। (ফ্ল্যাট নং-৩-অ)। এ ছাড়া সদর উপজেলার সায়েস্তাবাদে ১ একর ২৫ শতাংশ জমিতে স্ত্রীর নামে করেছেন সোনার বাংলা মৎস্য খামার ও এগ্রো ফার্ম।
শহরতলির কাগাসুরা মুকুন্দপট্টি রাস্তার দুই পাসে ৮০ শতাংশ জমি কিনে করেছেন সুগন্ধা এগ্রো অ্যান্ড ফিশারিজ। একই এলাকায় কাগাসুরা বাজারের পাশে একশ’ শতাংশ জমি কিনে তার ওপর করেছেন মাল্টা বাগান। নগরীর ৪নং ওয়ার্ডে কিনেছেন ১২ শতাংশ প্লট ও লাকুটিয়া বাজার এলাকায় ২০ শতাংশ জমির ওপর করেছেন সুগন্ধা পোল্ট্রি খামার। তালতলী বাজারে স্ত্রীর নামে রয়েছে ইট, বালু ও রড সিমেন্টের দোকান।
এ ছাড়া নিজের, স্ত্রীর ও ছেলের নামে রয়েছে প্রচুর সম্পদ। চাকরির সুবাদে যখন যেখানে বদলি হয়েছেন সেখানেই কিনেছেন জমি ও ফ্ল্যাট। তার সব সম্পত্তির পরিমাণ কয়েকশ’ কোটি টাকা হবে বলে জানান স্থানীয়রা। একজন সাব-রেজিস্ট্রারের এত সম্পত্তির উৎস খতিয়ে দেখার দাবিও জানান স্থানীয়রা।
সায়েস্তাবাদ এলাকার বাসিন্দা সাহাবুদ্দিন জানান, একজন সাব-রেজিস্ট্রার হয়ে এত বিশালাকার জমি কীভাবে কিনেছেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
কাগাসুরা বাজার এলাকার আলমগীর বলেন, শুনেছি সদর উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রার এ জমি কিনে মাল্টা বাগান করেছেন। এই বাগান দেখাশোনার জন্য একজন লোক নিয়োগ দেয়া রয়েছে এখানে। মাঝে মাঝে সাব-রেজিস্ট্রার এখানে এসে ঘুরে যান। এ ছাড়া এই এলাকায় তার আরও কয়েকটি বিশালাকার প্লট রয়েছে।
বরিশালের জেলা প্রশাসক মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, সাব-রেজিস্ট্রার হয়ে যদি অবৈধভাবে কোনো কিছু করে থাকেন তাহলে তা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পাশাপাশি সরকারি জমিতে পাঁচতলা ভবনের বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
এ ব্যাপারে বরিশাল সদর উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রার অসীম কল্লোলের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, এত সম্পত্তি আমার নেই, তবে বরিশালে একটি, ঢাকায় দু’টি ফ্ল্যাটসহ পাঁচতলা ভবন আছে। এ ছাড়া কিছু জায়গা রয়েছে। কাগাসুরায় আমার ভায়রার জমি আছে, সেটি আমি দেখাশুনা করি।
তিনি আরও বলেন, এসব সম্পত্তি ইনকাম ট্যাক্সের ফাইলে আছে। ফাইলের বাইরে এক শতাংশ জমিও নেই। সরকারকে প্রতি বছর এসব সম্পত্তির ট্যাক্স দেই। তাছাড়া এসব নিয়ে দু-তিনবার দুর্নীতি দমন কমিশন থেকে ডাকা হয়েছিল। তারা সম্পদের বিবরণী খতিয়ে দেখেছে।

 

পাঠকের মতামত

Ministry of Law is responsible for this.It is the most corrupt ministry

m mostofa
১৬ জুলাই ২০২৪, মঙ্গলবার, ১২:৩০ পূর্বাহ্ন

সরকার নিধারিত ফি ছাড়া অতিরিক্ত টাকা ব্যতীত কেউ ভূমি অফিসে কাজ করেছেন বলে মনে হয় না।

মো, শাহজাহান
১৪ জুলাই ২০২৪, রবিবার, ৯:২৩ পূর্বাহ্ন

এই বাংলা‌দে‌শে এমন কোন গাউস, কুতুব, ফ‌কির, সা‌হেব নেই যারা সাব রে‌জিস্ট্রার‌কে ঘুষ না দি‌য়ে জ‌মি বা সম্প‌ত্তি রে‌জি‌স্ট্রি ক‌রে‌ছে। এমন খবর আগেও প্রকা‌শিত হয়ে‌ছে এবং এদের ঘুষ নেয়ার বিষয়‌টি স্বীকৃত।

খ‌লিল
১২ জুলাই ২০২৪, শুক্রবার, ১২:৩৩ অপরাহ্ন

almost are big big gov. officer is corrupted. each of them needs to be found.

MD.SHAHIDUL ISLAM
৩ জুলাই ২০২৪, বুধবার, ৬:০১ অপরাহ্ন

যদি কোন সাব রেজিস্টার ঘুষ না নিয়ে কাজ করেন, তাহলে ধরে নিতে হবে পৃথিবীতে দুর্ঘটনা ঘটতে চলেছে!

রফিক
৩ জুলাই ২০২৪, বুধবার, ১২:৫৮ অপরাহ্ন

এই চোর যেন ইন্ডিয়া পালিয়ে না যায় সেজন্যে বিদেশ যাওয়ার উপর নিশেদাজ্ঞা দেওয়া উচিৎ।

আইয়ুব
৩ জুলাই ২০২৪, বুধবার, ৭:১১ পূর্বাহ্ন

ঢাকায় ২টা রেজিস্টারি করতে ১টা করে দোয খুজে বের করে টাকার বিনিময়ে একটু পরেই রেজিস্ট্রি হয়ে যায়, তখন বুযলাম এরা অনেকে কি জিনিস!!

মো আশরাফ হোসেন
২ জুলাই ২০২৪, মঙ্গলবার, ৯:২৮ অপরাহ্ন

Boycott Indian products and dalal n dalal media

Md. Anisur Rahman
২ জুলাই ২০২৪, মঙ্গলবার, ৯:০৮ অপরাহ্ন

এ জাতীয় ভদ্রলোককে আমার মনে হয় সম্মান করা উচিত। কারণ তিনি অতি কষ্টে উপার্জিত অর্থ শুধুমাত্র দেশেই বিনিয়োগ করেছেন। বিদেশে নিয়ে গেলে তো কারো কিছু করার ছিল না। কম হলেও দেশের কিছু মানুষ তো উপকৃত হচ্ছে। আমরা যারা সুযোগ পাইনি বলে নিজেকে চরিত্রবান বলে দাবী করি, তাদের এ জাতীয় মানুষকে সাধুবাদ দেয়া উচিত। তারা তাদের মেধা দিয়ে অর্জিত অর্থ যেন এদেশেই বিনিয়োগ করেন, আর সাধারণ মানুষ তাদের অধীনে থেকে খেয়ে পড়ে বাঁচতে পারে। কারণ এ অবস্থা বদলাবার নয়, ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছি। এখনও দেখছি। আগে সংখ্যায় এরা কম ছিল। এখন ভয়ংকরভাবে তারা বেড়ে গেছে। সামনে আরো বাড়বে। এ জাতীয় শার্ট-প্যান্ট-টাই পড়া শিক্ষিত বাটপারদের অধীনেই যেহেতু আমাদের থাকতে হবে, তাই এদের জন্য শুভকামনা করা ছাড়া আমাদের কিছুই করার নেই। ধন্যবাদ।

অজয়
২ জুলাই ২০২৪, মঙ্গলবার, ৮:৪৩ অপরাহ্ন

হে অবৈধ অর্থ উপার্জনকারি কর্মকর্তাগণ- সমস্ত অফিসের সংশ্লিষ্ট অফিস সহকারী কিংবা পিওনের কাজটাও যারা করেন তাদের প্রতিও তোমাদের এরকম অলৌকিক উপার্জনের সুদৃষ্টি পতিত হোক।

মু জি র বাদশাহ
২ জুলাই ২০২৪, মঙ্গলবার, ৮:১৯ অপরাহ্ন

টাকার বিনিময়ে ফাইলের সুরাহা হয়েছে বলেই তো ছাগল কান্ড।কাজেই সবার ফাইল যাচাই বাচাই করে ব্যবস্থা নেয়া জরুরী। প্রয়োজনে প্রত্যেক জেলায় জেলায় নিরপেক্ষ সৎ,সাহসী, অবসরপ্রাপ্ত অফিসার দিয়ে টাস্ক ফোর্স গঠন করে ব্যবস্থা নেয়া যায়।

মোঃ জিকরুল হক
২ জুলাই ২০২৪, মঙ্গলবার, ৮:১০ অপরাহ্ন

এরকম শত-শত সাবরেজিস্টার পাওয়া যাবে

আজাদ
২ জুলাই ২০২৪, মঙ্গলবার, ৮:০৩ অপরাহ্ন

Someone at the very top gets a big share of the bribes.

Nam Nai
২ জুলাই ২০২৪, মঙ্গলবার, ৭:৩৩ অপরাহ্ন

এই অসিম কল্লোল আমার একটা পাওয়ার অব এ্যাটোর্নী রেজিষ্ট্রেশন করাতে ৪০০০০ হাজার টাকা এবং সেই জমি বিক্রয়ের সময়ে ৭০০০০ টাকা নিয়েছে। হারাম খোর।

মো: জাকির হোসেন।
২ জুলাই ২০২৪, মঙ্গলবার, ৭:১৪ অপরাহ্ন

বিদেশে যাঁরা এখন বাস করছেন তাঁরা রোজ এনে রোজ খাচ্ছেন এবং এমনও লোক আছে যারা সামান্য একটি টিকেট কিনে দেশে যেতে পারছে না। অথচ দেশের ফকিরের বাচ্চারা সামান্য টাকা বেতনে চাকুরী করে কোটি টাকার মালিক হচ্ছে সরকারের ছত্রছায়ায়। একটি দেশের নুতন প্রজন্মের জন্য সত্যিই এটি বেদনাদায়ক এবং জনগনের জন্য লজ্জাজনক।

Khokon
২ জুলাই ২০২৪, মঙ্গলবার, ২:৩১ অপরাহ্ন

উন্নয়নের আগ্রাসী স্রোতে ১ কোটি টাকা ১ টাকার দামের চকলেটের মত অনুল্লেখ্য হয়ে গেছে। তাই শত শত কোটি টাকার চোর ফেরেশতা, হাজার হাজার কোটি টাকার চোর সৎ, লাখ কোটি টাকার চোর চোর এবং লাখ লাখ কোটি টাকার চোরকে হজরত বলাই যার।

বোদাই
২ জুলাই ২০২৪, মঙ্গলবার, ১:৩৮ অপরাহ্ন

কোন সাবরেজিস্টার যদি টাকা না নেন তাহলে বুজতে হবে ভীরু কাপুরুষ কিংবা যথাযত সুযোগ এর অভাবে চরিত্রবান।

Hasan Khan
২ জুলাই ২০২৪, মঙ্গলবার, ১২:৫৫ অপরাহ্ন

তারা সম্পদের বিবরণী খতিয়ে দেখেছে।---তাহলে ওখানেও ম্যানেজ করা হয়ে গেছে?

Amir
২ জুলাই ২০২৪, মঙ্গলবার, ১০:৪৬ পূর্বাহ্ন

দু একজন ছাড়া সব সাব রেজিস্টার ই কোতি পতি ।

zakiul Islam
২ জুলাই ২০২৪, মঙ্গলবার, ৮:২৯ পূর্বাহ্ন

এখন সরকারি কর্মচারীদের কোটি টাকা তো খুবই সামান্য। তদন্ত করলে কয়েক কোটির হদিস পাওয়ার সম্ভাবনা আছে ।

Kazi
২ জুলাই ২০২৪, মঙ্গলবার, ৪:৩১ পূর্বাহ্ন

শেষের পাতা থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

শেষের পাতা সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status