ঢাকা, ২৩ জুন ২০২৪, রবিবার, ৯ আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ জিলহজ্জ ১৪৪৫ হিঃ

খেলা

সাগরতলের চ্যালেঞ্জ নিয়ে প্রস্তুত তাসকিনরা

ইশতিয়াক পারভেজ, সেন্ট ভিনসেন্ট (ওয়েস্ট ইন্ডিজ) থেকে
১৬ জুন ২০২৪, রবিবারmzamin

ক্যারিবিয়ান সাগর পাড়ে দল বেঁধে হাঁটছে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। সামনে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ পিছনে সৌম্য সরকার, তানজিম সাকিব, লিটন দাস সবশেষ সহ অধিনায়ক তাসকিন আহমেদ। সঙ্গে ফিজিও ও কয়েকজন কোচিং স্টাফও। মুখে কারও মুখোশ আর পিঠে মাছের পাখনা। না, এটাতো ক্রিকেটের পোশাক নয়। দু’দিন পরেই নেপালের বিপক্ষে ম্যাচ। জিতলেই নিশ্চিত হবে চলতি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার এইটে খেলা। তাহলে এই কেমন প্রস্তুতি! আগের দিন নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে শেষ আটে এক পা রেখে দারুণ ফুরফুরে বাংলাদেশ, হোটেলে কাটাচ্ছে ছুটির দিন। তবে শুয়ে বসে নয়, তারা নিয়েছে ‘স্নরকেলিং’ করে সাগরতলের চ্যালেঞ্জ। সেন্ট ভিনসেন্টের কিংসটনে স্যানডালস হোটেলে থাকছে টাইগাররা।

বিজ্ঞাপন
একদিকে পাহাড়, অন্যপাশে পৃথিবীর সবচেয়ে গভীর ক্যারিবিয়ান সাগর। দুপুরে বাংলাদেশ দল জুমার নামাজ আদায় করেছে হোটেলে মিটিং রুমেই। এর আগে সকালে হোটেলে দলের খেলোয়াড়দের নিয়ে পরের ম্যাচের রণ কৌশল ঠিক করে নেন হেড কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। সেটি শেষ করেই দলবেঁধে সাগলের চ্যালেঞ্জ নিয়ে নিজের প্রস্তুত করার চেষ্টা। যেখানে তাসকিনকে দেখা গেল দারুণ আত্মবিশ্বাসী। দেশের দু’জন সংবাদকর্মীকে দেখে চওড়া হাসি নিয়ে সামনে এগিয়ে এলেন। মনে হচ্ছিলো যেন ভাসকোদা গামার মতো সাগর অভিযানে যাচ্ছেন তিনি। বলেন, ‘আজকে তো ছুটি তাই একটু মানসিকভাবে ফিট থাকার চেষ্টা। যাচ্ছি ‘স্নরকেলিং’ করতে। সব ভালো যাচ্ছে আশা করি পরের ম্যাচ জিতবো ইনশাআল্লাহ্‌।’ প্রায় ৪০ ছুঁই ছুঁই মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ যে ফুরিয়ে যাননি সেটি তিনি মাঠেই প্রমাণ রেখেছেন। সাগর অভিযানে যাওয়ার সময় তাকে দলের জুনিয়রদের থেকে বেশি উৎফুল্ল দেখা গেল। অন্যদিকে ক্যারিবিয়ান সূর্যের তাপ থেকে বাঁচতে লিটন দাস বড় টাওয়াল দিয়ে নিজেকে ঢেকে হাঁটছেন। তরুণ পেসার তানজিম হাসান অনেকক্ষণ অপেক্ষার পর সুযোগ পেয়েছেন ‘স্নরকেলিং’ করার। হঠাৎ করেই যেন তাদের মধ্যে যেন দলের মধ্যে বাসা বেঁধেছে অন্যরকম আত্মবিশ্বাস। একাদশ থেকে বাদ পড়া সৌম্যও কিছুটা মনমরা হলেও চেষ্টা করছেন নিজেকে চাঙ্গা রাখতে। জানালেন খারাপ সময় জীবনেরই অংশ। হ্যাঁ, সাগরের নিচে থাকা চ্যালেঞ্জিং জীবন দেখতেই যেন তাদের এই ডুব দেয়ার অন্যতম কারণ। স্নোর্কলিংয়ের মাধ্যমে সমুদ্রের নিচে মাছের বিচরণ, জীব বৈচিত্র্য দেখা যায় স্বচ্ছভাবে। মুখে বিশেষ অক্সিজেন মুখোশ এবং এক ধরনের পানি প্রতিরোধক গ্লাস ব্যবহার করেই তা অবলোকন করতে হয়। ক্রিকেটারদের খেলার ক্লান্তি থেকে একটু বিনোদন দিতেই স্ন্নরকেলিংয়ের আয়োজন বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ দলের ম্যানেজার রাবীদ ইমাম। তিনি নিজেও দলের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন। সাগর পাড়েই হোটেলে বিশাল সুইমিং পুল আর পানশালা। যেখানে মিলছে নানা রকম পানীয়র সঙ্গে তরতাজা মাছ ভাজা। বাংলাদেশ থেকে উড়ে যাওয়া ধারাভাষ্যকার আতহার আলী খান তখন রেস্তরাঁর শেপদের কাছে খুঁজছিলেন সেলমন ফিস। তবে শেষ পর্যন্ত তা না পেয়ে খেতে হলো ক্যারিবিয়ান সাগরের বিখ্যাত মাছ রেড স্নাইপার। আর বসে বসে তার বিশ্বকাপ কমেন্ট্র্রির অভিজ্ঞতা নিয়ে গল্প বলছিলেন। জানালেন- ২০০৭ এ এখানেই এসেছিলেন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ধারাভাষ্য দিতে। ঠিক সেই সময় স্ত্রীকে নিয়ে হাজির ডেল স্টেন। বাংলাদেশের সংবাদকর্মী শুনে দারুণভাবে অভ্যর্থনা জানালেন। বললেন- ‘চিন্তার কারণ নেই সুপার এইট খেলবে বাংলাদেশ।’ আবদারে সেলফিও তুলেন এই তারকা ক্রিকেটার। অন্যদিকে আতহার আলী খানকে খাওয়া শেষ করেই ছুটতে হবে দক্ষিণ আফ্রিকা-নেপালের ম্যাচে ধারাভাষ্য দিতে। তাই তার আর এ দিন ইচ্ছা থাকার পরও ‘স্নরকেলিং’ করা হলো না। যেতে বললেন দেখো নেপাল কি করে আজ! তার আগে আমি বাংলাদেশের বিশ্বকাপ নিয়ে কোনো কথা বলতে চাই না। 

হোটেলের এদিক-ওদিক ছুটছেন ক্রিকেটাররা। দলের স্ট্যান্ডবাই সদস্য আফিফ হোসেনকে দেখা গেল সাইকেল চালাচ্ছেন। মাত্রই জুমার নামাজ পড়ে এসেছেন। সাইকেলের সামনেই রাখা জায়নামাজ। এমনিতেই বেশ চুপচাপ থাকেন এই তরুণ ক্রিকেটার। তবে এদিন তাকেও বেশ হাসিখুশি দেখা গেল। কেমন কাটছে দিন- এমন প্রশ্নে জানালেন- ‘ভালো, দল জিতলে সবসময় ভালো লাগে।’ অন্যদিকে হোটেলের লবিতে দেখা মিললো টাইগারদের আরেক ভক্ত  মোর্শেদ আলম  সোহেলের সঙ্গে। গাঁটের পয়সা খরচ করে উঠেছেন টাইগারদের টিম হোটেলে যেন থাকতে পারেন তাদের আশপাশে। সেই ২০০৭ সালে টাইগারদের প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও সমর্থন জানাতে গিয়েছিলেন তিনি। এবারো আছেন টাইগারদের পাশে। বলেন, ‘ভাই আমি আসলে বাংলাদেশ বাইরে কোথাও খেলবে আর তা না দেখে থাকবো- না তা হতে পাারে না। হ্যাঁ, জানি অনেক টাকা খরচ হয় বেশির ভাগ সময় হতাশ হয়ে মাঠ থেকে ফিরতে হয়। তবে বিশ্বাস একটাই রাখি একবারতো জিতবে বাংলাদেশ।’

খেলা থেকে আরও পড়ুন

   

খেলা সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status