শেষের পাতা
চিনি ছিনতাই কাণ্ড
বিয়ানীবাজারে ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত
বিয়ানীবাজার (সিলেট) প্রতিনিধি
১৫ জুন ২০২৪, শনিবারবহুল বিতর্কিত চিনি ছিনতাই-কাণ্ডে বিয়ানীবাজার ছাত্রলীগের কমিটি বাতিল করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন এবং সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে কমিটি বাতিলের তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে তারা জানান, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের জরুরি সিদ্ধান্ত মোতাবেক জানানো যাচ্ছে যে, সংগঠনের শৃঙ্খলা ও মর্যাদা পরিপন্থি এবং অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হওয়ার অভিযোগে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ বিয়ানীবাজার উপজেলা ও পৌর শাখা বিলুপ্ত ঘোষণা করা হলো। এদিকে বিয়ানীবাজারে চিনি ছিনতাই কাণ্ডে জড়িত হিসেবে নাম এসেছে উপজেলা, পৌর ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক-বর্তমান নেতাদের। ছিনতাই পরবর্তী কে কত বস্তা চিনি নিয়েছেন, তাও অডিও রেকর্ডে ভাইরাল হয়েছে। এ ঘটনা থেকে রেহাই পেতে একজন অপরজনের সহায়তা চেয়ে অসহায়ত্ব প্রকাশ করছেন। কিভাবে মামলা থেকে বাঁচা যায়, তাও তাদের আলোচনায় স্থান পেয়েছে। ঘটনায় জড়িত ছাত্রলীগ নেতাদের নিজেদের কথোপকথনে ওঠে এসেছে সংশ্লিষ্ট অনেকের নাম। চিনি ছিনতাই এবং অডিও রেকর্ডের আলোচনা এখন বিয়ানীবাজারবাসীর মুখে মুখে। গত বুধবার বিকেল থেকে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচার হওয়া ছিনতাইকারীদের ভয়েস রেকর্ড পর্যালোচনা করছে পুলিশ।
জানা যায়, চিনি ছিনতাই পরবর্তী এর মালিক বদরুল ইসলামকে মামলা না দিতে কারা ভয়ভীতি দেখিয়েছেন, কারা বিষয়টি প্রভাবিত করতে চেয়েছেন কিংবা সমঝোতার নামে নাটক করেছেন কারা-তাও ভয়েস রেকর্ডে স্পষ্ট ফুটে ওঠেছে। নিজেদের মধ্যে আলোচনায় সাগর (উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি), তাহমিদ (উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক), মুন্না, জুনেদ, সাব্বির, রুবেল, সালা উদ্দিন, সাকেল (পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি), নাবিলসহ চিনি ভাগাভাগিতে কারা ছিলেন তাদের নাম প্রকাশ পেয়েছে। কথোপকথনের এক সময় একজন অন্যজনের কাছে বলছেন-‘ছোট গাড়ি অইলে খাইলিলে অসুবিধা আছিল না। বড় গাড়ি হওয়ায় সমস্যা অই গেছে। তাছাড়া সিএনজি ফোরস্ট্রোকে বোঝাই করে চিনি নিয়ে যায় ছাত্রলীগ কর্মীরা।’
চিনির মালিক বদরুল ইসলাম অভিযোগ করেছেন, ভিডিও ফুটেজ এবং কথোপকথনের এমন রেকর্ড থাকার পরও পুলিশ প্রকৃত আসামিদের মামলা থেকে বাদ দিয়েছে। বর্তমান মামলায় ভয়েস রেকর্ডে যাদের নাম এসেছে, তাদের সবাইকে গ্রেপ্তার করার দাবি জানান। তিনি অভিযোগ করেন, মামলা দায়েরের পর তাকে খুন করার হুমকি দেয়া হচ্ছে। তিনি অবিলম্বে আত্মস্বীকৃত ছিনতাইকারীদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশের কাছে দাবি জানান।
পুলিশ জানায়, ছিনতাই ঘটনার পর অভিযান চালিয়ে ৮০ বস্তা চিনি, একটি পিকআপ (ঢাকামেট্রো-ঠ ১১০৭০৯) উদ্ধার ও এজাহারনামীয় দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হচ্ছে কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠামইন থানার হোসাইনপুর গ্রামের (বর্তমানে পৌরশহরের দাসগ্রাম লিচুটিলা ছাত্তার মিয়ার বাড়ীর ভাড়াটিয়া) মো. খলিল মিয়ার ছেলে মো: লিটন মিয়া (২৬) ও মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা শাহবাজপুর এলাকার বোবারতল গ্রামের (বর্তমানে সুপাতলা) মোস্তফা উদ্দিনের ছেলে হাসান (২১)। এরমধ্যে লিটন পেশাদার অপরাধী। তার বিরুদ্ধে বিয়ানীবাজার থানায় ডাকাতির আরো মামলা আছে।
বিয়ানীবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দেবদুলাল ধর জানান, বিভিন্ন মাধ্যম থেকে যাদের নাম আসছে, সবক’টি নাম আমরা নোট করছি। সবাইকে নজরদারির মধ্যে রাখা হয়েছে।