বিবিধ
স্বেচ্ছায় রক্তদান: অনলাইন ব্লাড ডোনার টিম, ময়মনসিংহ
(৯ মাস আগে) ১৪ জুন ২০২৪, শুক্রবার, ১১:৪৬ পূর্বাহ্ন

অনলাইন ব্লাড ডোনার টিম মুলত একটি অনলাইনভিত্তিক অলাভজনক, সামাজিক ও মানবিক প্লাটফর্ম। ২০১৮ সালের ১৩ই সেপ্টেম্বর প্রতিষ্ঠিত এই প্লাটফর্মটির প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক মি. কাজল চিসিম। তার তত্ত্বাবধানে এবং স্বেচ্ছাসেবকদের অক্লান্ত প্রচেষ্টায় ও স্বেচ্ছায় রক্তদাতাসহ সকলের আন্তরিক ভালোবাসায়-এখন পর্যন্ত সাড়ে চার হাজারেরও অধিক অসহায় রোগীর জন্য স্বেচ্ছায় রক্তদান এবং পাশাপাশি ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ বিশেষ দিনে ৩০-৩২টির মতো ফ্রি ব্লাড ক্যাম্পিং করে প্রায় দশ হাজারের কাছাকাছি মানুষকে ফ্রিতে রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা করিয়েছে।
আন্তর্জাতিক রক্তদান দিবস উপলক্ষে ময়মনসিংহ সাহিত্য সংসদ, মানব কল্যাণ ফোরাম, নান্দাইল নরসুন্দা ব্লাড ডোনেট সোসাইটি গাজীপুর, ঝই রক্তদান ফাউন্ডেশন দুর্গাপুর, একতা ব্লাড সামাজিক সংগঠন ও ব্রহ্মপুত্র ব্লাড ফাউন্ডেশন ময়মনসিংহ থেকে স্বেচ্ছায় রক্তদানের স্বীকৃতি স্বরুপ পেয়েছেন সম্মাননা স্মারক। ফ্রী রক্তের গ্রুপ নির্ণয়সহ স্বেচ্ছায় রক্তদান এছাড়াও "গাছ লাগান, পরিবেশ বাঁচান’ একটি গাছ একটি প্রাণ" স্লোগানে জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় বৃক্ষরোপণ অভিযান কার্যক্রমও হাতে নিয়েছেন বলে জানান টিমের কর্ণধার।
প্রতিবছর বিশ্বজুড়ে ১৪ জুন ‘বিশ্ব রক্তদাতা দিবস’ পালিত হয়ে থাকে। যেসব রক্তযোদ্ধারা অসংখ্য, অগণিত মুমূর্ষু রোগীকে স্বেচ্ছায় রক্তদান করে জীবন বাঁচাতে সাহায্য করেন, তাদের দানের মূল্যায়ন, স্বীকৃতি ও উদ্বুদ্ধকরণের জন্যে বিশ্বজুড়ে এ দিবসটি পালন করা হয়। এ দিবস পালনের অন্যতম উদ্দেশ্য হলো-দেশের সকল মানুষকে প্রাণঘাতী রক্তবাহিত রোগ এইডস, হেপাটাইটিস-বি ও হেপাটাইটিস-সি'সহ অন্যান্য রোগ থেকে নিরাপদ থাকার জন্য স্বেচ্ছায় রক্তদান ও রক্তের সঠিক ব্যবহার সম্পর্কে অবগত করা।
এরই ধারাবাহিকতায় বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে স্বেচ্ছায় রক্তদাতাদের অনলাইন ভিত্তিক প্লাটফর্ম অনলাইন ব্লাড ডোনার টিমের একদল স্বেচ্ছাসেবক/স্বেচ্ছাসেবী, সেচ্ছায় রক্তদান ও রক্তদানে উৎসাহিত ও জন সচেতনতার লক্ষ্যে ছয় ধরে বছর অসহায় রোগীদের পাশে থেকে রক্তের প্রয়োজনে স্বেচ্ছায় রক্তদান এবং "প্রতিটি গ্রাম বা মহল্লা হউক এক একটি ব্লাড ব্যাংক" স্লোগানের মধ্য দিয়ে বিনামূল্যে রক্তের গ্রুপ নির্ণয়সহ বিভিন্ন সামাজিক ও মানবিক কাজ করে যাচ্ছে এবং স্বেচ্ছায় ও বিনামূল্যে রক্তদান করে হাজারো মানুষের প্রাণ বাঁচাতে ভূমিকা রাখছে, পর্দার আড়ালে থাকা সেসব মানুষকে এবং যারা রক্তদানে ভয় পায় তাদের ভয় দূর করে রক্তদানে উৎসাহিত করছে।
বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে বছরে পাঁচ থেকে সাত লাখ ব্যাগ রক্তের প্রয়োজন হয়, যার মাত্র ৩১ ভাগ পাওয়া যায় স্বেচ্ছায় রক্তদাতাদের মাধ্যমে। বাকি রক্ত অধিকাংশ ক্ষেত্রে পেশাদার রক্তদাতা এবং আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধবের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয়। ১৮ থেকে ৬৫ বছরের যে কোনো সুস্থ ব্যক্তি, যার শরীরের ওজন ৪৫ কেজির উপরে, তারা চার মাস পর পর নিয়মিত রক্তদান করতে পারেন। তবে রক্ত দিতে হলে কিছু রোগ হতে মুক্ত থাকতে হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশ অনুযায়ী নিরাপদ রক্ত সঞ্চালনের জন্য রক্তদাতার শরীরে কমপক্ষে পাঁচটি রক্তবাহিত রোগের অনুপস্থিতি পরীক্ষা করে নিশ্চিত হওয়া দরকার বলেও জানান টিম প্রধান ল্যাবটেকনিশিয়ান মি. বিহন চিসিম।
মিসেস মঞ্জু সাংমা বলেন, আমাদের দেশে রক্তদানে অনেকেই ভয় পান, কেউ কেউ ভাবেন এতে স্বাস্থ্যের ক্ষতি হবে, দুর্বল হয়ে পড়বেন বা রোগাক্রান্ত হয়ে পড়বেন। কেউ আবার মনে করেন এতে হৃৎপিণ্ড দুর্বল হয়ে যাবে বা রক্তচাপ কমে যাবে, এমনকি কার্যক্ষমতা কমে যাওয়ার আশঙ্কা করেন। ফলে কিছু কুসংস্কার আর অজ্ঞতা অনেক সময় মানুষকে রক্তদানে নিরুৎসাহিত করে। তিনি বলেন, যে কোনো সুস্থ-সবল মানুষ রক্তদান করলে রক্তদাতার স্বাস্থ্যের কোনো ক্ষতি হয় না।