বিবিধ
দেশে প্রথমবারের মতো ’এআই লাইভ স্কিলিং প্রোগ্রাম’ চালু করেছে মেটা
বাড়বে কর্মসংস্থান, পাল্টে যাবে দেশের অর্থনীতি
(১ দিন আগে) ২৮ জুন ২০২৫, শনিবার, ৩:৪২ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৩:৪৩ অপরাহ্ন

ফেসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান মেটা বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিকভাবে তার ‘লাইভ স্কিলিং’ কর্মসূচি চালু করেছে। আন্তর্জাতিক কনসালট্যান্ট প্রতিষ্ঠান লাইটক্যাসল পার্টনার্সের সাথে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে এই উদ্যোগ বাস্তবায়িত হবে।
এতে তরুণ ও সংশ্লিষ্ট পেশাদার ব্যক্তিরা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করে উদ্ভাবনী ক্ষমতার মাধ্যমে তথ্যপ্রযুক্তি বিকাশে আমূল পরিবর্তন আনবেন। এর মূল লক্ষ্য: এআই এর ব্যবহার ও উদ্ভাবনী ক্ষমতার মাধ্যমে স্থানীয় ব্যবসা সম্প্রসারণ ও বিশ্ববাজারে প্রভাব বিস্তার করা। এর ফলে দেশে তৈরি হবে বিপুল কর্মসংস্থান, যা দীর্ঘ মেয়াদে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে নতুন মাত্রা যোগ করবে।
সম্প্রতি রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে ’ক্ষুদ্র উদ্যোগের মাধ্যমে এআই সক্ষমতা বৃদ্ধি: নীতি নির্ধারণ, উদ্ভাবন ও অন্তর্ভুক্তি’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। মেটার এশিয়া-প্যাসিফিক (অ্যাপেক-APAC) অঞ্চলের নিরাপত্তা ও ইন্ট্রেগেটি কর্মসূচির আঞ্চলিক প্রধান রুইসি টিও এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
এই সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়ন কর্মসূচি ‘র (এসডিজি) মহাপরিচালক শিহাব কাদের, বাংলাদেশ সরকারের আইসিটি বিভাগের আওতাধীন অ্যাসপায়ার টু ইনোভেট (এটু আই) প্রকল্পের জাতীয় পরামর্শ দাতা শাহারিয়ার হাসান জিসুন, মেটার এশিয়া-প্যাসিফিকের পাবলিক পলিসির ভাইস প্রেসিডেন্ট সাইমন মিলনার, একই প্রতিষ্ঠানের পাবলিক পলিসি ম্যানেজার রুজান সারওয়ার, ডিজিটাল লার্নিং প্রতিষ্ঠান শিখো-এর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী (সিইও) শাহির চৌধুরী, ঢাকা এআই ল্যাবসের প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অলি আহাদ প্রমুখ।
এতে সরকারি-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ ও প্রযুক্তিখাতের বিশেষজ্ঞসহ মোট ৭৫ জনেরও অধিক অংশ নেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন লাইটক্যাসল পার্টনার্সের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) বিজন ইসলাম।
এর আওতায় দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের উদ্যোক্তারা (এসএমই), স্টার্টআপ ও ডিজিটাল প্রতিষ্ঠানগুলির সাথে সংশ্লিষ্ট তরুণ ও পেশাদারকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। আগামী চার থেকে ছয় সপ্তাহের মধ্যে এটি শুরু হবে। মেটার ব্যবসায়িক দক্ষতা সম্পন্ন ব্যক্তিবৃন্দ প্রশিক্ষণার্থীদের নির্বাচন করবেন।
অনুষ্ঠানে শিহাব কাদের বলেন, এআই সত্যিকার অর্থে ক্ষুদ্র উদ্যোগগুলিকে সেবা প্রদানের মাধ্যম। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠান এবং ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য এআই ব্যবহারের মাধ্যমে কিভাবে তরুণ ও পেশাদারদের নতুন উদ্ভাবনী ক্ষমতা বাড়ানো যায়, সেদিকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত।
সাইমন মিলার বলেন, আমরা লাইটক্যাসল পার্টনার্সের সাথে মেটা লাইভ স্কিলিং চালু করার ঘোষণা দিতে পেরে গর্বিত। এটি মেটার এআই টুলগুলিতে তরুণদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। যা বাজারের চাহিদা অনুযায়ী কর্মসংস্থানে ভূমিকা ও বাংলাদেশে ব্যবসা সম্প্রসারণে সহায়তা করবে।
এতে শিখোর সিইও এবং প্রতিষ্ঠাতা শাহির চৌধুরী কৃত্রিম বৃদ্ধিমত্তার মাধ্যমে বাংলাদেশে ডিজিটাল শিক্ষার রুপান্তর’ বিষয়ক একটি উপস্থাপনা তুলে ধরেন। উপস্থাপনায় তিনি শিক্ষা ও প্রযুক্তির সমস্বয়ে গঠিত বাংলাদেশের ‘ইডিটেক’ কোম্পানিগুলি কিভাবে এআই টুলস ব্যবহার করে শিক্ষার রুপান্তর ঘটিয়েছে তার বিস্তারিত বর্ণনা দেন।
প্যানেল আলোচনায় বক্তারা-এআই কিভাবে বর্তমান সময়ে দেশে অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সহায়ক হিসেবে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে তা গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরেন। এর পাশাপাশি তাঁরা বেশ কয়েকটি সুপারিশ তুলে ধরেন।
উল্লেখযোগ্য সুপারিশসমূহ হচ্ছে: এআইকে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে (এসএমই) উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিতে কাজে লাগানো, এর মাধ্যমে সেবা খাত সহজ ও উন্নতীকরণ, অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যবস্থার মাধ্যমে এটিকে (এআই) গ্রহণ ও সক্ষম করে তোলা, এইখাত বিকাশে বাস্তব উপযোগী নীতিমালা প্রণয়ন, এই সংক্রান্ত অবকাঠামো উন্নয়ন, প্রাতিষ্ঠানিক সমন্বয়ের প্রয়োজনীয়তা, এআইকে সৃজনশীলতায় কাজে লাগানো ইত্যাদি।
এছাড়া বক্তারা জাতীয় উন্নয়ন তরান্বিত করতে অগ্রাধিকার বিষয়সমূহ ও প্রযুক্তিখাতের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার তাগিদ দেন।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ’মেটা লাইভ স্কিলিং’ উদ্যোগ বাংলাদেশের এআই পথচলায় একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এর অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে: স্থানীয় ব্যবসায়ী, শিক্ষাবিদ এবং উদ্ভাবকরা যাতে এআই প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে দেশের বাস্তবতার নিরিখে সমস্যার সমাধান ও নিজেদের দক্ষতা প্রয়োগের সুযোগ কাজে লাগাতে পারে।
(বিজ্ঞপ্তি)