খেলা
বাস্তবতা বুঝলেন বাংলাদেশের কোচ
স্পোর্টস রিপোর্টার
১৩ জুন ২০২৪, বৃহস্পতিবার
লেবাননের সঙ্গে বাংলাদেশের শক্তির ফারাক অনেক। ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে লেবাননের অবস্থান যেখানে ১২০, সেখানে বাংলাদেশের অবস্থান ১৮৪। এরপরও লেবাননের বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের শেষ ম্যাচের আগে বাংলাদেশের কোচ হাভিয়ের কাবরেরা ও অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া জয়ের কথা বলেছিলেন। জয় না পেলেও এক পয়েন্টের নিশ্চয়তা দিয়েছিলেন বাংলাদেশ দলের এই স্প্যানিশ কোচ। অথচ কাতারের খলিফা আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে ঘটলো উল্টো ঘটনা। বাংলাদেশকে বিধ্বস্ত করে ৪-০ গোলের বড় জয় তুলে নিলো লেবানন। ম্যাচ শেষে এর কোনো ব্যাখ্যা দিতে পারলেন না কাবরেরা। স্বাভাবিকভাবেই বেশ বিব্রতও বাংলাদেশ দলের এই কোচ। বাফুফে’র দেয়া এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, ‘পেনাল্টির কারণে শুরুতেই পরিস্থিতি জটিল হয়ে যায়। তারপরও আমি মনে করি প্রথমার্ধে আমরা কিছুটা মানিয়ে নিতে পেরেছি।’ এই ম্যাচের একাদশে ডিফেন্ডার শাকিলকে নিয়েছিলেন কোচ। সেই শাকিলই বাংলাদেশকে ম্যাচে ব্যাকফুটে ঠেলে দেন। হাভিয়ের কাবরেরার দল নির্বাচন, একাদশ গঠন ও খেলোয়াড় পরিবর্তন নিয়ে প্রশ্ন ওঠে প্রায়ই। এই ম্যাচে সেটি আরো বেশি হয়েছে। বিশেষ করে লীগের অন্যতম সেরা পারফর্মার শাহরিয়ার ইমনকে একাদশে রাখেননি কাবরেরা। দ্বিতীয়ার্ধে তাকে নামানোর পর খেলার চিত্র খানিকটা বদলেছিল। এছাড়া লেবাননের বিপক্ষে পাঁচ ডিফেন্ডার নিয়েও খেলায় প্রশ্ন উঠেছে। বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে বাংলাদেশের একমাত্র পয়েন্ট লেবাননের বিপক্ষে। এই দলের বিপক্ষেই একমাত্র গোলের দেখা পেয়েছে কাবরেরার দল। এর বিপরীতে ২০ গোল হজম করেছে বাংলাদেশ। যার মধ্যে বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় তিন ম্যাচে চারটি, বাকি ১৬ গোল জামালরা হজম করেছে অ্যাওয়ে ম্যাচে। সবশেষ লেবাননের কাছে চার গোলে হারের পরও কোচ তার শিষ্যদের দায় দেখছেন না। মানছেন না পরিকল্পনায় তার ভুলের কথাও। উল্টো খেলোয়াড়দের প্রশংসা করে বলেন, ‘দ্বিতীয়ার্ধে আমরা আরও বেশি মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছি, চাপ দেওয়ার চেষ্টা করেছি যেটা প্রতিপক্ষকে পাল্টা আক্রমণের সুযোগ করে দিয়েছিল। যেভাবে আমরা বল পজিশন রেখেছি, তা নিয়ে আমি খুশি।’ বাংলাদেশ ৪ গোল হজম করলেও দোহায় বাংলাদেশি প্রবাসীরা স্টেডিয়ামে ছিলেন পুরো সময়। প্রবাসী বাংলাদেশি দর্শকদের প্রতি সহানুভূতি জানিয়ে কোচ বলেন, ‘অনেক প্রত্যাশা নিয়ে এই ম্যাচ খেলতে এসেছিলাম আমরা। এটা কঠিন ফল আমাদের জন্য। হতাশাজনক। আজ আমরা গুরুত্বপূর্ণ কিছু অর্জন করতে পারতাম অনেক বাংলাদেশি সমর্থকের সামনে।’ বাংলাদেশের বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের সমাপ্তি। সামনের বছর এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের পরবর্তী রাউন্ড। মার্চ থেকে সেই বাছাই শুরু হবে। কোচের চুক্তি এই বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত। এরপরও তিনি এশিয়ান কাপ বাছাই নিয়ে মন্তব্য করে বলেন, ‘এখন আমাদের উজ্জীবিত হতে হবে, সবাইকে অনুপ্রাণিত করার চেষ্টা করতে হবে এশিয়ান কাপের বাছাই পর্বের প্রস্তুত হওয়ার জন্য।’ বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন কোচের ওপর নাখোশ। এমন বাজে হারের পর তার বিকল্প ভাবনা শুরু হতে পারে। দুই পক্ষের চুক্তিতে এক মাসের নোটিশে চুক্তি ভঙ্গের ধারা রয়েছে। সেপ্টেম্বর-নভেম্বরে ফিফা ফ্রেন্ডলি উইন্ডো তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয়। ফলে কোচের পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা থেকে যায়। যদিও নির্বাচনের আগে বাফুফে কর্তারা কোচ রদবদল করে আলোচনা-সমালোচনায় পড়ার ঝুঁকি নেবেন কিনা সেটাও দেখার বিষয়।