খেলা
বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আম্পায়ার্স কল নিয়ে সাবেক তারকাদের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া
স্পোর্টস ডেস্ক
১২ জুন ২০২৪, বুধবার
বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচে আম্পায়ার ছিলেন অস্ট্রেলিয়ান স্যাম নোগাস্কি এবং ইংলিশ রিচার্জ ইলিংওর্থ। স্যাম নোগাস্কির একটি বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিশ্বের সাবেক ও বর্তমান ক্রিকেটার এবং ক্রীড়া বিশ্লেষকরা। এরমধ্যে আছেন ভারতের সাবেক ক্রিকেটার ওয়াসিম জাফর, সঞ্জয় মাঞ্জেকার, পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটার ওয়াকার ইউনুস ও রমিজ রাজা, দক্ষিণ আফ্রিকার মর্নে মরকেল ও ইংলিশ ক্রিকেটার নাসের হুসেইন। কথা বলেছেন দেশসেরা ওপেনার তামিম ইকবালও।
ঘটনাটি বাংলাদেশের ইনিংসের সপ্তদশ ওভারে। ওটনিল বার্টম্যানের করা তৃতীয় বলটি ছিল লেগ স্টাম্পের বাইরের ফুল টস ডেলিভারি। অন সাইডে খেলার চেষ্টায় ব্যাটে লাগাতে পারেননি মাহমুদউল্লাহ। বল তার প্যাডে লেগে ফাইন লেগ দিয়ে চলে যায় সীমানার বাইরে। তবে এর আগেই প্রোটিয়াদের আধো আধো আবেদনে আঙ্গুল তুলে দেন আম্পায়ার স্যাম নোগাস্কি। রিভিউ নিতে দেরি করেননি মাহমুদউল্লাহ। রিপ্লেতে দেখা যায়, লেগ স্টাম্পের বাইরে দিয়ে চলে যেতো ওই বল। ফলে বদলে যায় মাঠের আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত। কিন্তু স্কোরবোর্ডে যোগ হয়নি ওই বাউন্ডারি। কারণ নিয়ম অনুযায়ী, আম্পায়ার আউট দেয়া মাত্রই ‘ডেড’ হয়ে যায় বল এবং সেই সিদ্ধান্ত রিভিউয়ে বদলে গেলেও কোনো রান যোগ হয় না। তখন ওই চার রান পেলে বাংলাদেশের বাকি থাকত ২২ বলে ২২ রান। কিন্তু চার না পাওয়ায় তা হয়ে যায় ২২ বলে ২৬। তখনো ৬ উইকেট বাকি রেখে, উইকেটে দুই সেট ব্যাটসম্যান থাকা অবস্থায় ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ ছিল বাংলাদেশের হাতে। কিন্তু নাটকীয়ভাবে শেষ পর্যন্ত ওই ৪ রানেই হেরে যায় বাংলাদেশ। ম্যাচ শেষে তাই আলোচনার তুঙ্গে আম্পায়ারের ওই সিদ্ধান্ত ও বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডে যোগ না হওয়া ৪ রান। ক্রিকেট ওয়েবসাইট ইএসপিএনক্রিকইনফোর এক আয়োজনে তামিম বলেন, আইসিসি চাইলেই এই নিয়মের পরিবর্তন করে বিতর্ক এড়াতে পারে। আম্পায়ারের উদ্দেশ্যে তামিম বলেন, আপনি ২ সেকেন্ড অপেক্ষা করে দেখতে পারেন বল কোথায় যাচ্ছে। বাউন্ডারি হলো কি হলো না সেটি দেখেও আপনি সিদ্ধান্ত জানাতে পারেন। অন্য যা-ই হোক, ব্যাটসম্যান যদি নট আউট থাকে, তাহলে ওই বলে রান দেয়া উচিত। ওই ৪ রান দিলে বাংলাদেশের ভাগ্য বদলে যেতে পারতো।’ ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক নাসের হুসেইন স্কাই স্পোর্টসে বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচের ধারাভাষ্য দিতে গিয়ে বলেন, ‘এই আইনটার সংস্কার হওয়া উচিত। বল বাউন্ডারি লাইন পেরিয়ে গেল আর আপনি ৪ রান দিবেন না। এটা কেন?’ সবচেয়ে বেশিক্ষুব্ধ ছিলেন ভারতের সাবেক ওপেনার ওয়াসিম জাফর। বাংলাদেশ দলের সাবেক এই ব্যাটি কোচ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজের এক্স হ্যান্ডেলে বলেন, ‘মাহমুদউল্লাহকে ভুলভাবে লেগ বিফোর উইকেট আউট দেয়া হয়েছিল। এটি বাউন্ডারি হতে পারতো। কিন্তু বাংলাদেশ চার রান পায়নি। আম্পায়ারের ভুলেই ম্যাচ হেরেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের জন্য খারাপ লাগছে।’ আরেক ভারতীয় ক্রিকেটার সঞ্জয় মাঞ্জেকার ক্রিকইনফোর একটি অনুষ্ঠানে বলেন, ‘ফুটবলে যদি অফসাইড হয় আর বক্সে খেলা চলমান থাকে, তখন অপেক্ষা করেন রেফারি। তাহলে ক্রিকেটে কেন তাড়াহুড়ো করতে হবে আপনাকে। আঙ্গুল তুললে কেন সব বন্ধ হয়ে যাবে। অপেক্ষা করুন, বল যদি বাউন্ডারিতে যায় তাহলে বাউন্ডারি দিন। ২০১৯ বিশ্বকাপ ফাইনালে সুপার ওভার নিয়ে সমালোচনার পর আইন বদলেছে আইসিসি। এই আইনও পাল্টানো হোক।’ পাকিস্তানের সাবেক বোর্ড প্রেসিডেন্ট রমিজ রাজা তাওহীদ হৃদয়ের বিতর্কিত আউটের সিদ্ধান্ত নিয়ে বলেন, ‘রাবাদার বলে হৃদয়কে এমন একটি আউট দিয়ে দিয়েছে আম্পায়ার, যেটি না দিলেও পারতো। সেটা ছিল আম্পায়ার্স কল এবং বল লেগেছে অনেক ওপরে। এরপর লেগ সাইড দিয়ে বল চলেও যাচ্ছিলো। তখন আম্পায়ার যদি হৃদয়ের আউট না দিতো তাহলে এই ম্যাচ বাংলাদেশ জিততেও পারতো। ওই আউটের ম্যাচটা তো বাংলাদেশের হাত থেকে বেরিয়ে গেছে।’