ঢাকা, ২ মে ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২২ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

শেষের পাতা

জনগণের সেবা করার মাধ্যমে ভবিষ্যতের ভোট নিশ্চিত করুন

স্টাফ রিপোর্টার
৫ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার
mzamin

নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদেরকে জনগণের সেবা করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এটি আপনাদের ভবিষ্যৎ ভোট নিশ্চিত করবে। তিনি বলেন, আপনারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত। জনগণের সেবা যদি আপনারা নিশ্চিত করতে পারেন ভবিষ্যতে আপনাদের ভোটের কোনো চিন্তা থাকবে না। মানুষই আপনাদের ওপর আস্থা রাখবে, বিশ্বাস রাখবে। গতকাল প্রধানমন্ত্রীর তেজগাঁওস্থ কার্যালয়ের শাপলা হলে দুই সিটি করপোরেশন- কুমিল্লা ও ময়মনসিংহের নবনির্বাচিত মেয়র এবং পাঁচ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলরদের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে দেয়া ভাষণে তিনি এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের নির্বাচিত প্রথম নারী মেয়র তাহসিন বাহার সুচনা এবং ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের নির্বাচিত মেয়র একরামুল হক টিটুকে শপথ বাক্য পাঠ করান। 

একই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী কুড়িগ্রাম, ঠাকুরগাঁও, সিরাজগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও হবিগঞ্জ- এই পাঁচ জেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যানদের শপথ বাক্য পাঠ করান। পাঁচটি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানরা হলেন- কুড়িগ্রামের এএনএম ওবায়দুর রহমান, ঠাকুরগাঁওয়ের আবদুল মজিদ, সিরাজগঞ্জের শামীম তালুকদার, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিল্লাল মিয়া ও হবিগঞ্জের আলেয়া আক্তার। পরে, ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের সাধারণ ওয়ার্ডের নবনির্বাচিত ৪৪ জন কাউন্সিলর এবং সংরক্ষিত নারী আসনের কাউন্সিলররাও একই স্থানে শপথ নেন। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম কাউন্সিলরদের শপথ বাক্য পাঠ করান। শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মুহাম্মদ ইব্রাহিম।

বিজ্ঞাপন
অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধিদের জনকল্যাণে সর্বোচ্চ আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করার নির্দেশনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস কোনোভাবেই হারাবেন না। তাই তাদের পাশে দাঁড়িয়ে সেই অনুযায়ী মানুষের জন্য কাজ করুন। 

সরকার দেশের প্রতিটি এলাকার উন্নয়ন করেছে এবং তৃণমূলের মানুষকে ঘিরেই এই উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালিত হচ্ছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা জনপ্রতিনিধিদের জনগণের কাছে দেয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে কাজ করার এবং বর্তমান উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান। সরকারপ্রধান বলেন, ইতিমধ্যে দেশের ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। যেটা আপনারা নিজেরাই দেখতে পাচ্ছেন। এই পরিবর্তন ধরে রেখে আরও উন্নতি করতে জনগণের কাছে দেয়া ওয়াদা আপনাদের রক্ষা করতে হবে। জনগণকে উন্নত সেবা প্রদান, জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন ও পরিকল্পিত নগরী গড়ে তোলা সরকারের লক্ষ্য উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইতিমধ্যে আমরা ঘোষণা দিয়েছি- ‘আমার গ্রাম, ‘আমার শহর’। অর্থাৎ গ্রামের মানুষ সকল নাগরিক সুবিধা পাবে। তিনি উল্লেখ করেন, ২০২৬ সালে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশের স্নাতক অর্জন কার্যকর হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই প্রেক্ষাপটে আমি আপনাদেরকে আন্তরিকতার সঙ্গে জনগণের পাশে দাঁড়ানোর, তাদের সেবা করার এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের বর্তমান ধারা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানাচ্ছি। দুর্নীতি, মাদক ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জনপ্রতিনিধিদের সজাগ থাকার নির্দেশনা দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘দুর্নীতি, মাদক, জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসের পথ থেকে সবাই যেন দূরে থাকে, সেদিকে আপনাদের লক্ষ্য রাখতে হবে। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সবসময় জনগণের কল্যাণ ও উন্নয়নের লক্ষ্য নিয়েই কাজ করে। সবার আগে যেটা দরকার, তা হচ্ছে জনগণের ভোটের অধিকার জনগণের হাতে ফিরিয়ে দেয়া। গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা কায়েম করা। একমাত্র আওয়ামী লীগ যখনই সরকার গঠন করেছে, তখনই এই দেশের মানুষ অন্ততপক্ষে এইটুকু পেয়েছে- সরকার জনগণের শোষক নয়, সেবক হিসেবেই কাজ করে। যার কারণে বাংলাদেশের ব্যাপক উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে। তিনি বলেন, গত ১৫ বছরে আমি অন্তত এইটুকু দাবি করতে পারি, বাংলাদেশ এখন বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। যার বয়স ১৫ বছর, সে হয়তো ভাবতেও পারবে না যে, ১৫ বছর আগে অর্থাৎ ২০০৯ সালের আগের বাংলাদেশ কী অবস্থায় ছিল? বাংলাদেশে সেখান থেকে অনেক পরিবর্তন এসেছে। সরকারপ্রধান বলেন, আমাদের প্রবৃদ্ধির হার বেড়েছে। মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা পাঁচগুণ বৃদ্ধি করেছি। সবচেয়ে বড় কথা দারিদ্র্যের হার আমরা পেয়েছিলাম ৪১ দশমিক ৫১ শতাংশ। সেখান থেকে কমিয়ে আমরা ১৮ দশমিক ৭ শতাংশে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি। আমাদের লক্ষ্য ছিল যে, অন্তত আমরা ১৬ বা ১৭ শতাংশের নামিয়ে আনবো। যেটা আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের একটি গ্রহণযোগ্য অবস্থান। প্রধানমন্ত্রী পরিবেশ রক্ষার লক্ষ্যে জনপ্রতিনিধিদের নিজ নিজ এলাকায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করারও নির্দেশ দেন। শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন, সরকার স্থানীয় সরকার খাতে বাজেট বরাদ্দ ৮ গুণের বেশি বাড়িয়েছে। কারণ, বিএনপি’র শাসনামলে ২০০৬-০৭ অর্থবছরে বরাদ্দ ছিল মাত্র ৫,৭৯৯.৩৬ কোটি টাকা, যা বর্তমানে ৪৬,৭০৪ কোটি টাকা। সরকারপ্রধান বলেন, প্রতিটি এলাকায় উন্নয়ন হয়েছে এবং যোগাযোগ ব্যবস্থারও উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত হয়েছে। কাজেই, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে এবং কাজের মান বজায় রাখার জন্য আপনাদের কাজ করা উচিত।
 

শেষের পাতা থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

শেষের পাতা সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status