ঢাকা, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

বাংলারজমিন

পাকুন্দিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান রেনু’র বিরুদ্ধে পরোয়ানা নানা আলোচনা

আশরাফুল ইসলাম, কিশোরগঞ্জ থেকে
২৭ মার্চ ২০২৪, বুধবার
mzamin

উত্তরা ব্যাংকের দুই কোটি ৫ লাখ টাকার ঋণ মওকুফের জন্য প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমানের স্বাক্ষর জাল করার অপরাধে আদালত থেকে দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম রেনু। কিন্তু তিনি পলাতক থাকায় ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৮ থেকে গত ৪ঠা জানুয়ারি সাজাপ্রাপ্ত হিসেবে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। পরোয়ানাটি গত ১৮ই জানুয়ারি কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে গ্রহণ করা হয়। কিন্তু গত সোমবার পরোয়ানা জারির বিষয়টি জানাজানি হয়। এরপর থেকে বিষয়টি নিয়ে এলাকায় তোলপাড় চলছে। কেননা, এরই মধ্যে পাকুন্দিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। টানা দু’বারের উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হিসেবে এই নির্বাচনে মো. রফিকুল ইসলাম রেনু একজন আলোচিত প্রার্থী। এ পরিস্থিতিতে তার দণ্ডিত হওয়া ও পরোয়ানার বিষয়টি পাকুন্দিয়ার রাজনীতিতে এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। পাকুন্দিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম রেনু পৌরসভার মরুরা এলাকার মৃত ইমাম উদ্দিনের ছেলে এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, উত্তরা ব্যাংক লিমিটেড মেসার্স এলিট আয়রন অ্যান্ড স্টিল জিপি শিট লিমিটেডের কাছে ঋণের ২ কোটি ৫ লাখ টাকা পায়। পাকুন্দিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান রেনু এই ঋণ মওকুফ করে দেয়ার কথা বলে কোম্পানিটির কাছ থেকে ৩৫ লাখ টাকা নেন।

বিজ্ঞাপন
এরপর তিনি প্রধানমন্ত্রীর অর্থ উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমানের বরাতে তার জাল স্বাক্ষরে ঋণ মওকুফের ব্যবস্থা নিতে উত্তরা ব্যাংকের এমডি বরাবর একটি চিঠি ইস্যু করেন। চিঠিতে ড. মশিউর রহমানের স্থলে ডা. মশিউর রহমান লিখায় উত্তরা ব্যাংকের এমডির সন্দেহ হয়। তাই চিঠিটি যাচাইয়ের জন্য তারা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠায়। সেখানে প্রমাণিত হয় ওই চিঠি ড. মশিউর রহমান ইস্যু করেননি। এ ঘটনায় সহকারী পুলিশ সুপার ফজলুল করিম ২০১২ সালের ২৬শে এপ্রিল রাজধানীর বংশাল থানায় একটি মামলা করেন। ২০১৩ সালের ৬ই অক্টোবর মো. রফিকুল ইসলাম রেনুসহ ৬ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়। অন্য অভিযুক্তরা হলেন, মেসার্স এলিট আয়রন অ্যান্ড স্টিল জিপি শিট লিমিডেট পরিচালক মো. মোশাররফ হোসেন, চেয়ারম্যান মো. আলী হোসেন, ব্যবস্থাপনা পরিচালক তোফাজ্জল হোসেন, পরিচালক আমজাদ হোসেন ও মনোয়ার হোসেন। ২০১৫ সালের ১১ই জুন মামলাটিতে অপর আসামিদের অব্যাহতি দিয়ে কেবল মো. রফিকুল ইসলাম রেনুর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। এ মামলায় দণ্ডবিধির ৪৬৮ ধারায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় আদালত রফিকুল ইসলাম রেনুকে দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং ২ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেন।

একটি সূত্র জানায়, মো. রফিকুল ইসলাম রেনুর বিরুদ্ধে আদালত থেকে ইস্যু করা পরোয়ানাটি গত ২২শে জানুয়ারি পাকুন্দিয়া থানায় গ্রহণ করা হয়। পাকুন্দিয়া থানার প্রসেস নম্বর- ৭২/২৪। কিন্তু পরোয়ানাটি পাওয়ার দীর্ঘ সময় পরও অদৃশ্য কারণে ওয়ারেন্ট তামিল করা হয়নি। তবে থানায় পরোয়ানা আসেনি দাবি করে পাকুন্দিয়া থানার ওসি আসাদুজ্জামান টিটু বলেছেন, আমরা বিষয়টি জানার পর এ নিয়ে কাজ করছি। পরোয়ানা পেলে সেটি যাচাই করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে উপজেলা চেয়ারম্যান বর্তমানে পলাতক রয়েছেন। রাজনীতি সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, দলের সমর্থন ও টিকিটে টানা দুইবার মো. রফিকুল ইসলাম রেনু উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। এবারের নির্বাচনেও তিনি শক্তিশালী একজন প্রার্থী। উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি থেকে শুরু করে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সদর ইউনিয়নের একাধিকবারের চেয়ারম্যান, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়কসহ সর্বশেষ টানা দুইবার উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হিসেবে পাকুন্দিয়ার রাজনীতিতে সব সময়েই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন তিনি। কিন্তু এবারের নির্বাচনের ঠিক আগমুহূর্তে সাজা এবং পরোয়ানায় তিনি এখন ব্যাকফুটে। এ পরিস্থিতির উত্তরণ ঘটিয়ে মো. রফিকুল ইসলাম রেনু নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন কি-না, এ নিয়েই সরব আলোচনায় মুখর এখন পাকুন্দিয়া।

বাংলারজমিন থেকে আরও পড়ুন

   

বাংলারজমিন সর্বাধিক পঠিত

সিন্ডিকেট চক্রের ঈদ বাণিজ্য/ ট্রেনের ১০৫৩ টাকার এসি চেয়ার ২৫০০

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status