ঢাকা, ৭ মে ২০২৪, মঙ্গলবার, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

বাংলারজমিন

বরুড়ায় অবৈধভাবে ক্লাবের জমি দখল

স্টাফ রিপোর্টার, কুমিল্লা থেকে
২৭ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার

বরুড়ার ঝলমে অবৈধভাবে সরকারি নিবন্ধিত ক্লাবের জমি দখলের চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় ৬১ বছর পূর্বে ঝলম ইউনাইটেড ক্লাব সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে নিবন্ধিত একটি অরাজনৈতিক সংগঠন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ১৯৬৩ সালে সিংগুর গ্রামের কৃতী সন্তান বরুড়া হাজী নোয়াব আলী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক মহান মুক্তিযুদ্ধের বরুড়া উপজেলা সংগ্রাম পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক ও বরুড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক  মরহুম সামছুল হুদা স্যারের উদ্যোগে ক্লাবটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সামছুল হুদা স্যার ছিলেন ক্লাবটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই ক্লাবটি নানা ধরনের সামাজিক কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত থেকে ঝলম অঞ্চলকে করেছে আলোকিত। স্বাধীনতার পর পর ঝলম ইউনিয়নের তৎকালীন চেয়ারম্যান  আব্দুল করিম ঝলম ইউনাইটেড ক্লাবের বরাবরে বোর্ড অফিস সংলগ্ন স্থানে ৬ শতক ভূমি বরাদ্দ করেন। সামছুল হুদা ও তার সমসাময়িক প্রজন্মের অনেকেই ইতিমধ্যেই  মৃত্যুবরণ করেছেন। কালের পরিক্রমায় ১৯৯৬ সালে সামছুল হুদা স্যারের ছেলে নাজমুল হুদা রতনকে ক্লাবের সভাপতির দায়িত্ব দেয়া হয়। 

দায়িত্ব পাওয়ার পর তিনি ঝলম ইউনাইটেড ক্লাবটি নতুন করে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে নিবন্ধন করেন। যার নিবন্ধন নং কুমি-১০১৬ (১১৯/২৮৮)/৬৩/২০০০ স্থাপিত ১৩/২/১৯৬৩। এরপর ক্লাবের পক্ষে বরাদ্দকৃত ৬ শতক ভূমি তৎকালীন সেক্রেটারির নামে নতুন করে দলিল করা হয়।

বিজ্ঞাপন
দলিল পাওয়ার পর তৎকালীন চেয়ারম্যান হাসিম মোল্লা, বাজার কমিটি ও  মসজিদ কমিটিসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তির উপস্থিতিতে উপজেলা ভূমি অফিস ও ঝলম তহশিল অফিসের লোকবল, নিজেরা মাপজোঁক করে ঝলম ইউনাইটেড ক্লাবের ৬ শতক জমির সীমানা নির্ধারণ করে দেয়। জমি বুঝে পাওয়ার পর সংগঠনের নিজ উদ্যোগে ক্লাবঘর সংস্কার করে এর একাংশ সংগঠনের ব্যবহারের জন্য রেখে বাকি অংশ ভাড়া দেয়া হয়।

 ভাড়া বাবদ প্রাপ্ত আয় থেকে ঝলম ইউনাইটেড ক্লাব কমিটি বোর্ড অফিস সংলগ্ন খালপাড়ে চার কক্ষবিশিষ্ট একটি টয়লেট নির্মাণ করে যা ১৯৯৮ সাল থেকে আজ পর্যন্ত সাধারণ মানুষের ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত ও চালু রয়েছে। পাশাপাশি এই ক্লাবের অনুদানে ২০০০ সাল থেকে প্রতি বছর ঝলম ঈদগাহ মাঠে দুই ঈদের জামাতে সামিয়ানা ও সাউন্ড সিস্টেমের ব্যবস্থা করা হয়ে আসছে। কিন্তু বর্তমানে স্থানীয় একটি ভূমিদস্যু চক্র বিভিন্ন সময় ক্লাবের জমিটি হাতিয়ে নেয়ার জন্য একাধিকবার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে। ইদানিং এই পাঁয়তারা আবারো শুরু হয়েছে। এই অপচেষ্টা দ্রুত রুখে দিয়ে ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা না গেলে রাষ্ট্রের সম্পদ বেহাত হবার সমূহসম্ভাবনা রয়েছে বলে এলাকাবাসী জানান। ক্লাবের সাবেক সভাপতি সামছুল হুদা রতন বলেন, অত্যন্ত দুঃখজনকভাবে ঐতিহাসিক এই ক্লাবের জমিটি দখলের অপচেষ্টা চলছে। প্রশাসনের কাছে উক্ত ঘটনার আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ ও দোষী ব্যক্তিদের বিচার দাবি করি। আবদুল বাতেন সওদাগর বলেন, আশা করবো উপজেলা প্রশাসন এই ভূমিদস্যু চক্রের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিবে। এ ব্যাপারে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবু হাসান বলেন, আমি ঝলম ইউপি চেয়ারম্যানকে বলেছি এবং আমি নিজে ঘটনাস্থলে গিয়ে সুষ্ঠু ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ন্যু এমং মারমা মং বলেন, আমি এই মুহূর্তে নির্বাচনী কাজে জেলায় অবস্থান করছি,  দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

বাংলারজমিন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

বাংলারজমিন সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status