ঢাকা, ৮ মে ২০২৪, বুধবার, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

প্রথম পাতা

সরজমিন

মূল্যস্ফীতির চাপ ঈদ বাজারে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার
২৫ মার্চ ২০২৪, সোমবার
mzamin

ছবি: শাহীন কাওসার

বাজারে জিনিসপত্রের দাম আকাশছোঁয়া। মানুষের আয় কমছে। এতে সার্বিক মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি পাওয়ায় ভর মৌসুমেও জমে ওঠেনি ঈদকেন্দ্রিক বেচাকেনা। শঙ্কিত ব্যবসায়ীরা। মধ্য রমজানে রাজধানীর বিভিন্ন বিপণি বিতান ঘুরে ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে মন্দার চিত্রই দেখা গেছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, এই সময়ে তাদের প্রত্যাশিত বেচাকেনা হচ্ছে না। সামনে যে বিক্রি খুব বাড়বে তাও মনে হচ্ছে না। এ ছাড়া ক্রেতারাও দেখেশুনে পণ্য কিনছেন। দরদাম করছেন বেশি। কিনছেন কম।

বিজ্ঞাপন
কোনো কোনো ব্যবসায়ী বলছেন, এবার পণ্যে বাড়তি ট্যাক্স- ভ্যাট দিতে হয়েছে। এ কারণে দাম বেড়েছে। বাড়তি দাম দিয়ে পণ্য কিনতে মানুষ স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছে না। এ ছাড়া নিত্যপণ্যের দাম বেশি হওয়ায় ক্রেতারা কেনাকাটায় কম আসছেন। 

বাজার বিশেষজ্ঞরাও এমনটি মনে করছেন। তারা বলছেন, অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ঈদের বাজারে প্রভাব ফেলেছে। এবার মানুষের যে অবস্থা স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে ঈদে কেনাকাটা কম হওয়ারই কথা। 
কনজ্যুমার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, এমনিতে বাজারে জিনিসপত্রের দাম বেশ চড়া। এর সঙ্গে বিদ্যুৎ-গ্যাস সহ খাদ্যবহির্ভূত খাতেও খরচ বেড়েছে। সব মিলিয়ে মূল্যস্ফীতির চাপ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। তবে যাদের টাকা আছে তারা ঠিকই কেনাকাটা করছে। তাদের ঈদ মানে বিলাসিতা। তাদের কাছে মূল্যস্ফীতি বলতে কিছু নেই। আর সাধারণ মানুষ কেনাকাটা করবে যতটুকু প্রয়োজন। এর মধ্যেও কেউ কেউ ধার-কর্জ করেও কেনাকাটা করবে। আর মূল্যস্ফীতির চাপটা এদের উপরেই বেশি পড়ে। এই শ্রেণির মানুষের কাছে ঈদ বোঝা মনে হয়। 

সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক সেলিম রায়হান বলেন, উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে বিপাকে পড়েছে দেশের সাধারণ মানুষ। মানুষের প্রকৃত আয় ধারাবাহিকভাবে কমছে। বিশেষ করে মজুরি ছাড়া যাদের আয়ের অন্য কোনো উৎস নেই। সানেমের এক জরিপে বলা হয়, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে ৮৫ শতাংশ পরিবার প্রভাবিত হয়েছে। দুই শতাংশ পরিবার সারা দিন না খেয়ে থাকছে। 

সেলিম রায়হানের মতে, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যে আমদানি শুল্ক আরও কমানোর সুযোগ ছিল, কিন্তু তা করা হয়নি। এই পরিস্থিতিতে সরকার বিদ্যুতের দাম বাড়ালো। এতে সামনে মূল্যস্ফীতির চাপ আরেক দফা বাড়তে পারে। বিদ্যুতের দাম বাড়ার সুযোগে ব্যবসায়ীদের আরও লাগামছাড়া হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। 

তিনি বলেন, যখন কোনো দেশ উচ্চতর মূল্যস্ফীতিতে পড়ে, তখন সে দেশের মানুষ তা মোকাবিলার জন্য যথেষ্ট সুযোগ পান। কিন্তু বাংলাদেশের ক্ষেত্রে তা দেখি না। মূলত নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য কোনো স্বস্তির জায়গা নেই। যদি ভারত, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া ও ভিয়েতনামের মতো দেশগুলোর দিকে তাকাই, তাহলে দেখবো যে তারা মূল্যস্ফীতির চাপ ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণ করেছে। কিন্তু আমরা পারছি না। 

বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, দ্রব্যমূল্য অনেক বেশি হওয়ায় মানুষ আগের চেয়ে কম কিনছেন। বাজেট কাটছাঁট করছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে ঈদুল ফিতরে সাধারণভাবে এক লাখ ৭০-৮০ হাজার কোটি টাকার লেনদেন হয়। এবার ঈদে এই পরিমাণ লেনদেন না-ও হতে পারে। কারণ, মানুষের খাবার কিনতেই আয়ের প্রায় পুরোটা শেষ হয়ে যাচ্ছে। ফলে সবাই যে ঈদের পোশাক কিনতে পারবেন, তা বলা যায় না। সবাই কম খরচ করতে চাইছেন।

পাঠকের মতামত

মানুষের কিনবার ক্ষমতা একেবারেই নেই বললেই চলে,কেনার সামর্থ্যও একদম শূন্যের কোটায়

MR-JAI.
২৫ মার্চ ২০২৪, সোমবার, ১০:৩৪ পূর্বাহ্ন

ঈদের বাজার নিয়ে আজকের পরপর আট বা নয়'টি প্রতিবেদনে একটি তথ্য পরিষ্কার ভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে আর তা হচ্ছে আমজনতার ক্রয় ক্ষমতা তলানিতে নেমে এসেছে, যা অর্থনীতির জন্য অশনিসংকেত।

ইতরস্য ইতর
২৫ মার্চ ২০২৪, সোমবার, ১২:৫৯ পূর্বাহ্ন

প্রথম পাতা থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

প্রথম পাতা সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status