শরীর ও মন
ত্বকের সৌন্দর্য বাড়াতে কেমিক্যাল পিলিং
অধ্যাপক ডা. এস এম বখতিয়ার কামাল
১২ মার্চ ২০২৪, মঙ্গলবারপ্রাচীন মিশরের রানী ক্লিওপেট্রা নিজের সৌন্দর্য বৃদ্ধি ও যৌবন ধরে রাখার জন্য টক দুধ দিয়ে গোসল করতেন। অনুরূপ ভাবে ফরাসি রমণীরা পুরাতন মদ গায়ে লাগাতো সৌন্দর্য বৃদ্ধি ও ত্বকের লাবণ্যতার জন্য। এ ছাড়া সৃষ্টির সেই আদিকাল থেকেই মানুষ বিশেষ করে রমণীরা ফলমূল ও খাদ্যশস্য দিয়ে সৌন্দর্য চর্চা করে আসছে। বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে দেখেছেন যে, দুধে ল্যাকটিক এসিড, খাদ্যশস্যে গ্লাইকোলিক এসিড, লেবু ও কমলায় সাইট্রিক এসিড, আপেলে ম্যালিক এসিড, আঙ্গুরে টারটারিক এসিড রয়েছে; এগুলোই এসবের সক্রিয় উপাদান, যা ত্বকের জন্য উপকারী। এসব লাগানোর পদ্ধতি ও মাত্রা বিজ্ঞানীরা নির্ধারণ করে দিয়েছেন। নির্ধারিত মাত্রার চেয়ে কম মাত্রায় ব্যবহার কোনো উপকার করে না, বেশি মাত্রায় ব্যবহার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। ত্বকের পরিচর্যায় আমাদের দেশের অনেক মহিলা বিভিন্ন ফলমূল, খাদ্যশস্য ত্বকে ব্যবহার করেন, এগুলো স্থূল পদ্ধতি। এতে কদাচিৎ উপকার পাওয়া যায়। অনেক ক্ষেত্রে ত্বকের কোয়ালিটি নষ্ট হয়ে যায়। তাই এসব জিনিসের সঠিক প্রয়োগ বিধিকেই কেমিক্যাল পিলিং বলে অভিহিত করা হয়। আরও সঠিক ভাবে বলতে গেলে ১৯৪০ সাল থেকে ব্যবহৃত ও চিকিৎসা বিজ্ঞানে স্বীকৃত ও বৈজ্ঞানিক ভাবে নির্ধারিত মাত্রায় প্রয়োগবিধি কেমিক্যাল পিলিং নামে পরিচিত। যাকে আবার সৌন্দর্যের আদি রহস্য বলা হয়। কেমিক্যাল পিলিং একটি লাগানোর ওষুধ; যা বিভিন্ন খাদ্যশস্য-ফল ও দুধের নির্যাস থেকে ইউরোপ ও আমেরিকার ওষুধ কারখানায় তৈরি হয়।
ডার্মা চিকিৎসকরা এর সঠিক পরিমাপ করে চিকিৎসা বা পদ্ধতিটি ব্যবহার করতে পারেন। বা বিশেষ ট্রেনিং আক্রান্ত স্থানে লাগায়; এবং এই ওষুধ পুরাতন ও অসুস্থ ত্বককে ফেলে দিয়ে নতুন ত্বক তৈরিতে সহায়তা করে। সঠিক ভাবে লাগানোর পর সর্বোচ্চ ২ মিনিট পর্যন্ত জ্বালা-পোড়া করতে পারে, কোনো ব্যথা নেই। মূলত কেমিক্যাল পিলিং প্রাচীন পদ্ধতির বৈজ্ঞানিক সংস্করণ, যা গত ৭০ বছর যাবৎ সারা পৃথিবীতে এবং গত ২০ বছর যাবৎ আমাদের দেশে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। সাধারণত ত্বকের সৌন্দর্য বর্ধনে ও রং ফর্সাকারী হিসেবে তিল, দাগ, মেসতা, বলীরেখা দূরীকরণে এটি ব্যবহৃত হয়। এ ছাড়া স্ট্রায়া বা ফাটা দাগ দূরীকরণ ও ব্রণের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। কেমিক্যাল পিলিং ইউরোপ ও আমেরিকায় ওষুধের দোকানে পাওয়া যায়। আমাদের দেশে ওষুধের দোকানে পাওয়া যায় না। আমাদের দেশে বিভিন্ন স্কিন ও লেজার সেন্টারে পাওয়া যায়।
লেখক: অধ্যাপক (চর্ম, যৌন ও অ্যালার্জি), ও হেয়ার ট্রান্সপ্লান্ট সার্জন
কামাল হেয়ার অ্যান্ড স্কিন সেন্টার ফার্মগেট, গ্রীন রোড, ঢাকা। সেল-০১৭১১৪৪০৫৫৮