শিক্ষাঙ্গন
সিট বাতিল হলো জবির সেই শিক্ষার্থীর
জবি প্রতিনিধি
(১০ মাস আগে) ৮ মার্চ ২০২৪, শুক্রবার, ৮:৩৮ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৩:৫১ অপরাহ্ন
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে ছাত্রীকে নির্যাতনের ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় অভিযুক্ত তাসমিম সানজানা সৃষ্টিকে স্থায়ীভাবে হল ত্যাগের নির্দেশনা দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। একইসঙ্গে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাওয়ায় সাংবাদিককে মেরে ফেলার হুকমি দেয়ায় ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন সৃষ্টির বন্ধু মার্কেটিং বিভাগের (১২ তম ব্যাচের) শিক্ষার্থী ফাহিম ইশতিয়াক।
শুক্রবার হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. দীপিকা রানী সরকার বিষয়টি নিশ্চিত করেন এবং বলেন, শৃঙ্খলা কমিটিতে বিষয়টি উপস্থাপিত হয়েছে। ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর হলের সিট বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আগামী রোববার তাকে অফিসিয়ালি চিঠি পাঠিয়ে জানিয়ে দেয়া হবে।
হল প্রভোস্ট বলেন, এমন ছোট ঘটনাকে কেন্দ্র করে মারামারি আসলে কোনভাবেই কাম্য নয়। পাশে একটা চুলা ছিল চাইলে তারা পরিবর্তন করে অন্য চুলায় রান্না করতে পারত। তারা সেটা না করে মারামারি, ভাষা খারাপ করল। এটা কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না।
হলের শৃঙ্খলা কমিটিতে ড. আনোয়ারা আক্তার, ড. বুসরা জামান, মানসুরা বেগম দায়িত্ব পালন করেন। গত বৃহস্পতিবার মানসুরা বেগম অনুপস্থিত থাকায় হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. দীপিকা রানী সরকার শৃঙ্খলা কমিটিতে থেকে নিজেই দায়িত্ব নিয়ে অভিযোগ নিষ্পন্ন করেন।
এগারো তলা হলটির দায়িত্বে থাকা হাউজ টিউটর ড. নিপা দেব নাথ বলেন, বৃহস্পতিবার লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর শৃঙ্খলা কমিটিতে বিষয়টি আলোচনা করা হয়। আলোচনা শেষে সিট বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বিষয়টি মৌখিকভাবে তাকে বলা হয়েছে। পরবর্তীতে চিঠিতে তাকে জানিয়ে দেয়া হবে।
এর আগে, গত মঙ্গলবার হলে রান্না করাকে কেন্দ্র করে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ১৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ইতি খাতুনকে মারধর করেন ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী তাসমিম সানজানা সৃষ্টি। এ ঘটনায় ছাত্রী হলের হাউস টিউটর ও প্রভোস্ট বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী ইতি খাতুন। পরবর্তীতে পাল্টা অভিযোগ দেন তাসমিম সানজানা সৃষ্টি।
ভুক্তভোগী ছাত্রী ইতি খাতুন বলেন, আমি রান্না করছিলাম। পরে চুলা ফাঁকা থাকায় সৃষ্টি আপু ডিম ভাজতে চাইলে চুলা ছেড়ে দেই। কিন্তু রান্না শেষ করতে দেরি হওয়ায় ও আমার ক্লাসের সময় হওয়ায় আপুকে দ্রুত রান্না শেষ করতে বলি। কিন্তু আমি জুনিয়র বলে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালি দেন আপু। আমার মরা বাপ তুলেও গালি দেন। প্রতিবাদ করলে আমাকে চড়-থাপ্পড়, কিল-ঘুষি মারে। পরের ঘটনা আমার মনে নেই, আমি অজ্ঞান হয়ে যাই।
অভিযুক্ত তাসমিম সানজানা সৃষ্টি বলেন, জুনিয়র হয়ে ইতি বেয়াদবি করেছিল। এজন্য আমি কি বসে থাকব? আমিও মাইর খাইছি, আমিও অভিযোগ দিছি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত শিক্ষার্থী সৃষ্টিকে ফোন দেন গণমাধ্যমকর্মীরা। এর জের ধরে সৃষ্টির ছেলে বন্ধু মার্কেটিং বিভাগের (১২ তম ব্যাচের) শিক্ষার্থী ফাহিম ইশতিয়াক গত বুধবার এক গণমাধ্যমকর্মীকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। নিউজ করলে মামলার হুমকিও দেন। পরবর্তীতে ওই শিক্ষার্থী গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করেন।