শিক্ষাঙ্গন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গৌরবময় যাত্রার ১০২ বছর
হাসনাত মাহমুদ,বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার
(১ বছর আগে) ১ জুলাই ২০২২, শুক্রবার, ১১:০৩ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ২:৫০ অপরাহ্ন
প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আজ ১০২ বছরে পদার্পণ করলো।মেধায়, মননে, সৃজনে ও ঐতিহ্যে দেশের সবচেয়ে প্রাচীন ও স্বনামধন্য এই উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি তার গৌরবময় যাত্রার ১০১ বছর সম্পন্ন করেছে।
পূর্ব বাংলার পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, শিক্ষার প্রসার, সচেতন শ্রেণি গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে ১৯২১ সালের ১লা জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা করে তৎকালীন বৃটিশ সরকার। তবে এ জনপদের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পথ কোন ভাবেই মৃসণ ছিলনা। নানা পক্ষের বাধা বিরোধিতা ও অসহযোগিত ছিল শুরু থেকেই। সব প্রতিকূলতা পেরিয়ে সে সময়ের বাঙালি মুসলমান নেতাদের পূর্ণ সমর্থন, উৎসাহ ও নানামুখী তৎপরতায় শেষ পর্যন্ত বাস্তব রূপ লাভ করে ঐতিহাসিক এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি।
তিনটি অনুষদ, ১২টি বিভাগ, তিনটি আবাসিক হল, ৬০ জন শিক্ষক এবং ৮৭৭ জন শিক্ষার্থী নিয়ে ১৯২১ সালে যাত্রা শুরু করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। সময়ের পরিক্রমায় এখন বেড়েছে বিভাগ, হল শিক্ষার্থী সহ সবকিছুই।১০১ বছর পেরোনো বিশ্ববিদ্যাল্যয়টি এখন ৮৩ টি বিভাগ, প্রায় ৪০ হাজার শিক্ষার্থী ও দুই হাজার শিক্ষকের একটি বিশাল প্রতিষ্ঠান।
শতবর্ষী এ প্রতিষ্ঠানটি থেকে নানা সময় পড়াশোনা করে বেরিয়েছেন দেশের শ্রেষ্ঠ সব শিক্ষাবিদ, দার্শনিক, বিজ্ঞানী ও সাহিত্যিক ও রাজনীতিবিদ। ভাষা আন্দোলন,ছয় দফা, গণঅভ্যুত্থান কিংবা মহান মুক্তিযুদ্ধ -এ দেশের প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামেই সামনে থেকে নেতৃত্ব এ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক শিক্ষার্থীরা। এক কথায়, বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের অভ্যুদয়ের ইতিহাসের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে এই বিশ্ববিদ্যালয়।
আজ ১০২ বছরে পদার্পণ করছে দেশসেরা এই বিদ্যাপীঠ। প্রতিষ্ঠার এ দিনটি প্রতিবছর 'ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস' হিসেবে উদযাপন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে এবারো দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য কর্মসূচি গ্রহণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান সকাল ১০টায় শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্রের খেলার মাঠে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের বিভিন্ন কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন।
কর্মসূচি অনুযায়ী সকাল ১০টার আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল হল ও হোস্টেল থেকে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা শোভাযাত্রা সহকারে শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্রের খেলার মাঠে সমবেত হবেন।
সকাল ১১টায় ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র মিলনায়তনে ‘গবেষণা ও উদ্ভাবন : ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিয়া সহযোগিতা’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ। দিবসটি উপলক্ষে ইতিমধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হল, কলা ভবন, টিএসসি, ভিসি ভবন, বিভিন্ন আবাসিক হল বিশ্ববিদ্যালয়ের সব গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাসমূহ সজ্জিত হয়েছে বর্ণিল আলোকসজ্জায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এক বাণীতে প্রসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, বাঙালি জাতিসত্তার বিকাশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে উচ্চশিক্ষার বিস্তার, মানসম্পন্ন গবেষণা, জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রসার, মুক্তবুদ্ধির চর্চা, দক্ষ মানবসম্পদ সৃষ্টি এবং একটি আধুনিক ও প্রগতিশীল সমাজ গঠনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইতিবাচক ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।