শেষের পাতা
পাবনায় স্বামীকে জিম্মি করে স্ত্রীকে গণধর্ষণ, গর্ভের সন্তানের মৃত্যু
স্টাফ রিপোর্টার, পাবনা থেকে
২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, বৃহস্পতিবারপাবনার আমিনপুরে স্বামীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে গর্ভবতী স্ত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় গর্ভে মারা গেছে ধর্ষিতার গর্ভের সন্তান। ৫ দিন আগে মামলা হলেও এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। বরং নানা চাপে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন ভুক্তভোগীরা। বুধবার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন আমিনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুনুর রশিদ। গত ২৩শে ফেব্রুয়ারি রাতে আমিনপুরের সাগরকান্দি ইউনিয়নের চর কেষ্টপুরে এই ঘটনা ঘটে। অভিযুক্তরা হলেন- চর কেষ্টপুরের মাজেদ প্রামাণিকের ছেলে সেলিম প্রামাণিক (২৩), একই এলাকার মো. শরীফ (২৪), আনিছ সরদারের ছেলে রাজীব সরদার (২১), তালেব মণ্ডলের ছেলে রুহুল মণ্ডল (২৬), শফিক সরদারের ছেলে লালন সরদার (২০) ও মো. শামসুলের ছেলে সিরাজুল (২৩)।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ওই রাতে চর কেষ্টপুরের কাদেরিয়া তরিকাপন্থিদের একটি ওয়াজ মাহফিল আয়োজন করা হয়। মাহফিলের ডেকোরেশনের কাজ করছিলেন ভুক্তভোগী নারীর স্বামী। ওয়াজ শুনতে এবং টাকার প্রয়োজনে রাতে তার স্বামীর কাছে যান তিনি। ওয়াজ শুনে স্বামীসহ রাত ১২টার দিকে তার এক আত্মীয়ের বাড়িতে যাওয়ার পথে গতিরোধ করে অভিযুক্ত ৬ যুবক। একপর্যায়ে স্বামীকে জিম্মি করে আটকে রাখে। পরে ওই নারীকে ভুট্টাক্ষেতে নিয়ে অভিযুক্তদের দুইজন পালাক্রমে ধর্ষণ করে। একপর্যায়ে ওই নারীর স্বামী তাদের কাছ থেকে ছুটে স্থানীয় লোকজনকে বললে তারা দলবদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে গেলে অভিযুক্তদের একজনকে আটক করে গণধোলাই দেয়। বাকিরা পালিয়ে যায়। এসময় ধর্ষিত নারীকে স্থানীয় পল্লী চিকিৎসকের কাছে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
স্থানীয় লিটন মণ্ডল, রাজ্জাক মণ্ডল, নিফাস মণ্ডল ও শহিদ মণ্ডল বলেন, ‘আমাদের ওয়াজ মাহফিল চলা অবস্থায় রাত ১টার দিকে ওই ছেলে ছুটে এসে বললো- কিছু ছেলে তাকে মারধর করে তার স্ত্রীকে ধরে নিয়ে গেছে। একথা শোনার সঙ্গে সঙ্গেই স্থানীয়রা গিয়ে একজনকে হাতেনাতে ধরে গণধোলাই দেয়। আর মেয়েটিকে উদ্ধার করে স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক তোফাজ্জল হোসেন কাদেরীর কাছে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে হাসপাতালে পাঠানো হয়।
ভুক্তভোগী নারী বলেন, ‘আমরা আমাদের আত্মীয়ের বাড়িতে যাওয়ার পথে তারা মাঠের মধ্যে পথ আটকায়। আমাদের বলে তোরা স্বামী-স্ত্রী কিনা। আমরা নিজেদের স্বামী-স্ত্রী দাবি করলেও তারা কর্ণপাত করেনি। ফোনে আমাদের বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বললেও ওরা শোনেনি। একপর্যায়ে আমার স্বামীকে ব্যাপক মারধর করে এবং অস্ত্র আর ব্লেডের মুখে জিম্মি করে আমাকে মাঠের মধ্যে ভুট্টাক্ষেতে নিয়ে ধর্ষণ করে। এসময় আমার স্বামী ছুটে গিয়ে পাশের লোকজন ডেকে আনলে একজনকে আটক করা হয়।’ ভুক্তভোগী নারীর স্বামী মামলার বাদী বলেন, ‘আমার স্ত্রী ৩ মাসের গর্ভবতী ছিলেন। গর্ভের সন্তান মারা গেছে। মামলা হলেও আমাদের এখনো কোনো কাগজপত্র দেয়া হয়নি। থানায় গেলে কিছু পুলিশ সদস্য নানান কথা বলেন। আর যারা ধর্ষণ করেছে তাদের পক্ষ থেকেও নানা হুমকি ও চাপ আসছে। বলছে এ ঘটনায় কিছুই হবে না, তোমাদেরই বিপদ হবে তাই মীমাংসা করো। আমরা ধর্ষণ এবং আমাদের সন্তান হত্যার বিচার চাই।’ স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক তোফাজ্জল হোসেন কাদেরী বলেন, ‘স্থানীয়রা ওই নারীকে উদ্ধার করে আমার কাছে নিয়ে আসলে আমি প্রাথমিক চিকিৎসা দেই। পরে তাদেরকে বলি মেয়েটাকে পাবনা জেনারেল হাসপাতাল বা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে।’ অভিযুক্তরা এখনো গ্রেপ্তার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাগরকান্দি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহীন চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘অভিযুক্তরা প্রকাশ্যে দিবালোকে ঘুরছে কিন্তু পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করতে পারছে না। এটা নিয়ে প্রশাসনের তেমন তোড়জোড় আছে বলে তেমনটা মনে হচ্ছে না। আমরা এরকম একটা ন্যক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই এবং অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করে কঠোর শাস্তির আওতায় নিয়ে আসার দাবি জানাই।’ তবে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে পুলিশি তৎপরতা অব্যাহত আছে বলে দাবি করেছেন আমিনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুনুর রশিদ। তার দাবি- ‘অভিযুক্তরা সবাই পলাতক আছে। তাদের গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত আছে। গ্রেপ্তারের বিষয়ে পুলিশি গাফিলতার বিষয়টি মিথা। আমরা চেষ্টা করছি গ্রেপ্তারের। ধর্ষণের ঘটনা মীমাংসা হয় না, বাদীকে হুমকি-ধামকির বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হবে। তাদের নিরাপত্তার জন্য সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।’
পাঠকের মতামত
চেতনাবাজরা কই আমার রায় এদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হিসেবে এদের পুরুষাঙ্গ কেটে থার্ডজেন্ডার/ট্রান্সজেন্ডার করা হোক
বিচার হতো যদি এদেশে কুরআনের আইন আল্লার আইন থাকতো! ইনশাআল্লাহ আমার বিশ্বাস এদেশে কোন একদিন কোরআনের আইন হবে এবং প্রতিটি অন্যায়ের সঠিক বিচার হবে
এই মানুষরূপি জানোয়ারদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করা হোক।
ভারতীয় টিভি চ্যানেল, ঠিক টক বন্ধ না হলে সমাজের অবস্থা খুবই খারাপ হতে বাধ্য।
এগুলো নৈতিক শিক্ষা না থাকার কু-প্রভাব! আর রাজনৈতিক অশ্রয়-প্রশ্রয়ে এবং ক্ষমতার দাপটে এ জাতীয় হাজারো ঘটনা ধামাচাপা পড়ে যায়।
কিচ্ছু হবে না। নেতাদের মাধ্যমে মীমাংসা হবে। শাস্তি হবে সর্বোচ্চ কয়েকটা চড় থাপ্পড় অথবা দুর্বল মামলা হবে, আর কোর্ট তো আছেই জামিন দিতে। স্বাধীন বিচার বিভাগ
এর কোন বিচার হবে না, এই দেশে মানুষ করে না, শুধু হাতি বাস করে।
হায়নাদের বিচার হোক সিংহের খাচায় ছেড়ে দিয়ে।
দেশ যেন এক ধর্ষনের রাজ্যে পরিণত হয়েছে।
দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই, এক হলো ধর্ষনের আরেকটি হলো হত্যার!
Please hang them till to their death.
দেশ যেন এক ধর্ষনের রাজ্যে পরিণত হয়েছে। দেখার কেউ নেই।
এই ধর্ষকদের ব্যাপারে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করা অপরিহার্য এবং সেই সাথে কুলাঙ্গার গুলোর লিঙ্গ কেটে দিন যাতে অন্যান্য নারী নিরাপদে থাকতে পারে।
বর্তমান আওয়ামীলীগের সরকার বাংলাদেশের সমাজ ব্যবস্থা ধংস করে দিতে তাদের দলের এবং দোসররা একটার পর একটা গন ধর্ষণের করছে এবং পুলিশ অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে নিরব বসে আছে।