বাংলারজমিন
সোনাইমুড়ীতে চলছে খাল দখলের প্রতিযোগিতা
সোনাইমুড়ী (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
২৪ জুন ২০২২, শুক্রবারনোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে প্রতিযোগিতামূলকভাবে চলছে খাল দখলের মহোৎসব। উপজেলার বজরা ইউপির ইসলামগঞ্জ বাজারস্থ নির্মাণাধীন ব্রিজের দু’পাশে মহেন্দ্র খালটি দখল করে নিচ্ছে ভূমিদস্যুরা। অপরদিকে সোনাইমুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনের সড়কের দু’পাশ দখল করে কতক ভূমিদস্যু দোকান নির্মাণ করে তা আবার বিক্রি করছে। এদের দৌরাত্ম্য দিন দিন বেড়েই চলছে।
স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, খালের উপর নির্মাণাধীন সেতুর দু’পাশে স্থায়ীভাবে পাকা ভবন নির্মাণ করছে কতক ভূমিদস্যু। ভবনে কর্মরত শ্রমিকদের কাছ থেকে জানা যায়, বজরা ইউপির ৪নং ওয়ার্ডের মেম্বার আবদুর রহিম ও জনি নামে ২ জন সেতুর দক্ষিণ পাশে খাল দখল করে সিমেন্টের পিলার দিয়ে দোকানঘর নির্মাণ করছে। উত্তর পাশে বারাহীনগর গ্রামের নুর আলম (নুরু মিয়া)। এর বিপরীত দিকে (পূর্ব পাশে) আহসান উল্যার ওয়ারিশগণ খাল দখল করে স্থায়ীভাবে ভবন নির্মাণ করছে। স্থানীয় কয়েকজন ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে মানবজমিনকে জানান, ভূমিদস্যুরা প্রভাবশালী। নাম প্রকাশ করলে নিরাপত্তা ঝুঁকিতে থাকতে হবে বলে জানান। তারা আরও জানায়, একদিকে খাল কাটার নামে পুকুর চুরি, অন্যদিকে খাল দখল করে ভবন নির্মাণ করলেও এখানে স্থানীয় কোনো প্রশাসন আছে বলে মনে হয় না। মাঝে-মধ্যে ২-১ জন হলুদ সাংবাদিক এসে সুবিধা নিয়ে চলে যায়। কেউ কেউ ফেসবুক পেজে সংবাদ প্রকাশ করে, সুবিধা নিয়ে সংবাদটি মুছে ফেলে। রাজনৈতিক নেতাদের ছত্রছায়ায় খালের উপর অবৈধভাবে ভবন নির্মাণকালে প্রশাসন নীরব থাকে। পরে একের পর এক খাল দখল হয়ে গেলে পানি নিষ্কাশনে বাধাগ্রস্ত হয় এবং সরকারিভাবে খাল খননে দখলদারদের উচ্ছেদ করতে প্রশাসন হিমশিম খায়। আপনারা আসছেন খুশি হয়েছি, সংবাদটি দেশবাসী ও প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট মহলের নিকট তুলে ধরবেন বলে আমরা আশা করি। দখলদার নুর আলম বলেন, কাগজপত্র কিছুই নেই। সবাই যেভাবে দখলে আছে, আমিও সেভাবে দখল করছি। আপনাদের জন্য কি করতে পারি? সেটা বলেন। এ বিষয়ে সোনাইমুড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ইসমাইল হোসেন জানান, আপনাদের থেকে খবর পেয়ে আমি সংশ্লিষ্ট তহসিলদারকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়ে কাজ বন্ধ করে দিয়েছি। সরজমিন গিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে। নোয়াখালী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মুন্সি আমির ফয়সাল জানান, এ বিষয়ে আমি আপনাদের থেকে জানতে পেরেছি। অবশ্যই প্রতিনিধি পাঠিয়ে রিপোর্ট পাওয়ার পর আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। নোয়াখালী জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন বলে আশ্বাস দেন।