শেষের পাতা
৩১৩৭ কোটি টাকার প্রকল্প শেষের পথে, নিয়োগই হয়নি শিক্ষক
পিয়াস সরকার
২৩ জুন ২০২২, বৃহস্পতিবার
চাকরিপ্রত্যাশীদের দীর্ঘ অপেক্ষা। পরীক্ষা দেয়ার ৩০ মাস হলেও এখন পর্যন্ত মেলেনি ফল। উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর অধীনে ‘আউট অব চিলড্রেন এডুকেশন প্রোগ্রাম’ বাস্তবায়নের জন্য উপজেলা আরবান প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর (ইউপিসি) পদে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইআর) কর্তৃক লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় সেই সঙ্গে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোয় অনুষ্ঠিত হয় মৌখিক ও কম্পিউটার টেস্ট পরীক্ষা। ৩০ মাস পূর্বে এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলেও দেয়া হয়নি ফলাফল। এদিকে শিক্ষক নিয়োগের আগেই গত বছরের ১৫ই ডিসেম্বর ওই প্রোগ্রামের শিখন কেন্দ্র চালু হয়েছে। কিন্তু শিক্ষক নিয়োগ হয়নি এখনও। ৮ থেকে ১৪ বছর বয়সী ঝরে পড়া শিশুদের জন্য নেয়া এই প্রজেক্টের বাজেট ৩১৩৭ কোটি টাকা। এই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২০২৩ সালের জুন মাসে।
২০১৯ সালের ২৮শে অক্টোবর ৩০০টি পদের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো। পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ৯ই জানুয়ারি ২০২০ সালে।
করোনার পূর্বের হিসাব অনুযায়ী, দেশে শিক্ষা বঞ্চিত শিশুর সংখ্যা ২১ লাখ। এই প্রোগ্রামের আওতায় ১০ লাখ শিক্ষার্থীকে শিক্ষার ব্যবস্থা করে সরকার। অভিযোগ রয়েছে, এনজিওদের তদবিরের কারণে শিখন কেন্দ্রের শিক্ষক ও সুপারভাইজারদের প্রতিনিধিদের সদস্য সচিব হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। ইউপিসি’দের বাদ দিয়ে এই শিখন কার্যক্রম বাস্তবায়ন হলে সরকারি অর্থ সঠিকভাবে মনিটরিং হবে না। আর এই চাকরি প্রত্যাশীদের সঙ্গে করা হবে অন্যায়।
শুধু তাই নয়, এই প্রকল্প বাস্তবায়নে ইতিমধ্যে দেশের নানা প্রান্ত থেকে মিলেছে দুর্নীতির অভিযোগ। বেশ কিছু জেলায় চিঠি দিয়ে অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় চিঠিও দিয়েছে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোকে। এ ছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অভিযোগ আসে যে, এই প্রকল্পে বিভিন্ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক তাদের স্বজনদের নিয়োগ দিচ্ছেন।
চাকরি প্রত্যাশীরা দীর্ঘদিন ধরে আবেদন জানিয়ে আসছেন বিভিন্ন দপ্তরে। করছেন আন্দোলন। গেল শুক্রবার উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোতে গণঅনশনের ডাক দেন। এই আন্দোলনে অংশ নেয়া মো. নূর আলম বলেন, আমরা সেদিন অনশন শুরু করি। কিন্তু পুলিশ আমাদের সেখানে থাকতে দেয়নি। এরপর ডিজি’র সঙ্গে কথা বলি। ডিজি জানায়, আমরা রোববার, সোমবারের মধ্যে একটা বৈঠক করবো। এরপর সিদ্ধান্ত নেবো। আমরা বলি, আপনি আমাদের সাত মাস ধরে ঘুরাচ্ছেন। প্রতিবার যখন আসিÑ আপনি শুধু বৈঠকের কথা বলেন। এদিকে প্রজেক্টের মেয়াদ শেষ হতে চলেছে। আমাদের নিয়োগ না দিয়ে এই কার্যক্রম চলছে। আমরা অনেক কথা বলি পুলিশের সামনে। পুলিশও রাগারাগি করে। কিন্তু আমাদের তো পেটে ক্ষুধা। আমাদের চাকরি দরকার। এভাবে ওনারা ঝুলিয়ে রাখছেন। আমাদের ধারণা তারা দুই পক্ষ আঁতাত করে প্রজেক্ট চালাবে আমাদের নিয়োগ বঞ্চিত করে।
সেকেন্ড চান্স এডুকেশন প্রোগ্রামের কো-অর্ডিনেটর ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের আইইআর বিভাগের শিক্ষক আব্দুস সালাম বলেন, আমরা তো একটা এজেন্সি হিসেবে কাজ করি। করোনার কারণে একটা ধীরগতি আছে। সরকারি ডেভেলপমেন্ট বাজেট বরাদ্দ কমে আসে করোনার কারণে। ফলাফলের বিষয়ে কমিটি কাজ করছে, আমরা তো শুধু এজেন্সি প্রধান, কাজ কর্তৃপক্ষের।
এ বিষয়ে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর ডিরেক্টর জেনারেল মো. আতাউর রহমান বলেন, ঢাকা শি^বিদ্যালয়ের আইইআর’র বিভাগ এর টেকনিক্যাল বিষয়টি দেখে। এই যে নিয়োগ প্রত্যাশীরা আইইআর’র জনবল হিসেবে কাজ করবে। আইইআর তাদের নিয়োগপত্র দেবে। আইইআর বলছে, আগের ডিজি বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করেছে। এসব কারণে ফলাফল প্রকাশ হচ্ছে না। আবার এই প্রকল্পটা আছে মাত্র এক বছর। এই সময়ের জন্য লোকগুলোকে নেয়া হবে কি-না এই বিষয়ে একটা সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি। সামনের সপ্তাহে আমাদের একটা মিটিং হবে। সেখানে নিয়োগের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
পাঠকের মতামত
বিএনএফই এর এমন আচরণের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
নিজেদের ইচ্ছামত লুটেপুটে খাচ্চে bnfe. তবে সময় সবদিন সমান যায় না। একদিন আপনারাও এটার মাসুল দিবেন। এতগুলো প্রার্থীর ভাইবা নিয়ে নিয়োগ না দিয়ে এভাবে সেচ্ছাচারিতা করছে। না জানি সামনে আর কি দেখার বাকি৷ রেজাল্ট চাই এটা বলা ছাড়া কি ই বা করার আছে। বিচার উপরওয়ালার কাছে ছেড়ে দিলাম। তিনিই উত্তম পরিকল্পনাকারী। তিনিই রিজিকদানকারী।
বেকারদের সাথে এমন প্রহসণ না করে দ্রুত রেজাল্ট দিয়ে দেয়া উচিৎ। যেখানে প্রজেক্ট রান করছে সেখানে এই পদের নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ রাখাটাই প্রমাণ করে দূর্নীতি করা হচ্ছে। তাই বিষয়টি ভালো ভাবে খতিয়ে দেখে যত দ্রুত সম্ভব রেজাল্ট দিয়ে নিয়োগ দিয়ে দিতে হবে।
এই দুর্নীতি দায় সরকারকে নিতে হবে এবং দ্রুত ফলাফল দিয়ে দায় মক্ত হতে হব!
Result chai
Upc ফলাফল প্রকাশ করলে 300 বেকারের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে। এই কথা ভেবে উদ্ধতন কর্তৃপক্ষের উচিৎ অতিদ্রুত ফলাফল প্রকাশ করে নিয়োগ সম্পন্ন করা।
ইউপিসি রিজাল্ট চাই,এটা নিয়ে আই ই আর ও বিএনএফ এ কর্মকর্তাদের উদাসীনতা আর চাইনা,তিনশত মানুষের ভাগ্যনিয়ে খেলে উনারা শান্তি পাবেনা,যার অধিকার তাকে বুঝিয়ে দিন।
বঙ্গবন্ধু যথার্থই বলেছেন, "একটি দেশ স্বাধীন (যুদ্ধের পর) হলে পায় সোনার খনি, আর আমি পেয়েছি চুরের খনি।" প্রেক্ষাপট- স্বাধীনতার পর সাত কোটি কোম্বল বিতরণ।
সবকিছু বাদ দিয়ে আমাদের হাইকোর্টে যাওয়া উচিত। কেউ কথা শুনোক আর না শুনোক কোর্ট আমাদের কথা শুনবে।
UPV রেজাল্ট চাই। বিএনএফ ও আইইআর এর টালবাহানা আর না।এটা সরকারের গুরুত্বপূর্ণ প্রজেক্ট।
সরকারের উচ্চ মহলের সু-দৃস্টি কামনা করি
ইউপিসি নিয়োগ এখনো কেন হচ্ছে না? বিএনএফই আইইআর এসব মুখস্থ কথা আর সহ্য করা হবে না। সরকারের প্রতিনিধি নিয়োগ না দিয়ে এনজিও কে সুযোগ দিচ্ছে বিএনএফএই এনজিও উদ্দেশ্য হাসিল করার জন্য। অথচ এই প্রজেক্টটি সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রজেক্ট যাতে করে ১০ লাখ শিশু নিরক্ষরতা হতে মুক্তি পাবে। ৩০০ পরিবারকে বেকারত্ব হতে মুক্তি দিতে দয়া করে ইউপিসি রেজাল্ট দিন। আর রেজাল্ট নিয়ে টালবাহানা বন্ধ করেন। ইউপিসি রেজাল্ট দিন দ্রুত।
ইউপিসিদের নিয়োগ না দিয়ে বাজেটের বাকী ৬৩ কোটি টাকা কোথায় হারিয়ে গেলো তার বিস্তারিত বি এন এফ ও আই ই আর কে দিতে হবে, অথবা দ্রুত আমাদের নিয়োগ দিতে হবে। বেকার দের কর্মসংস্থান নিয়ে আর খেলা খেলবেন না। আমি আপনাদের মাধ্যমে প্রাথমিক ও গনশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি। ধন্যবাদ
৩২০০ কোটি টাকা লুটপাট শেষ হবার আগেই ইউপিসি পদের নিয়োগ চাই।
যারা মনিটরিং করবে তাদের নিয়োগ না দিয়ে প্রজেক্ট রান করা মানে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান দুটি ৩২০০ কোটি টাকা হরিলুটের আয়োজন করা। যদি তারা বলেন, ১৬০০ কোটি টাকা সরকার রিটার্ন নিয়েছে তাহলে বাকি ১৬০০ কোটি টাকার মনিটরিং করবে কে/কারা? আর ১৬০০ কোটি টাকা রিটার্ন এর ডকুমেন্টস সাবমিট করে না কেন? ৩০০ উপজেলা প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর পদের নিয়োগের জন্য লিখিত পরীক্ষার কি দরকার ছিল? এবং ১০৬৬৩ জনকে কেন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এনে ভাইভা নিয়েছেন? হয় আমাদের নিয়োগ দেন না হয় গাড়ি ভাড়া দিয়ে দেন।
BNFE Say IER Result Publish, IER Say BNFE Result Publish, What Is True .
UPC Result Chai , UPC dar Taka Kotai Galo, Jobab Ditay hobay .