বাংলারজমিন
পঞ্চগড়-১
আওয়ামী লীগে দ্বিধা বিএনপি নেতৃত্বশূন্য
সাবিবুর রহমান সাবিব, পঞ্চগড় থেকে
৪ অক্টোবর ২০২৩, বুধবারপঞ্চগড় সদর, তেঁতুলিয়া ও আটোয়ারী- এই ৩ উপজেলা নিয়ে পঞ্চগড়-১ আসন। এই আসনে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীদের পক্ষে-বিপক্ষে থাকতে দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়েছেন দলীয় নেতাকর্মীরা। দেখা দিয়েছে গ্রুপিং। এ আসনে দলীয় মনোনয়ন পেতে সাংগঠনিক ও কৌশলগত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন বর্তমান এমপি মজাহারুল হক প্রধান এবং জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আনোয়ার সাদাত সম্রাট। নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাদের দু’জনের জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করার কারণে পক্ষে-বিপক্ষে আলোচনা ও সমালোচনা রয়েছে।
এ আসনে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নাঈমুজ্জামান মুক্তা দীর্ঘদিন থেকে শহর ও গ্রামাঞ্চলে কর্মসূচির মাধ্যমে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। মনোনয়ন প্রত্যাশী মুক্তা গত নির্বাচন থেকে সংসদীয় এলাকার সর্বত্র সক্রিয় রয়েছেন। কয়েকজন প্রভাবশালী নেতার চরম বিরোধিতার মুখেও মুক্তা প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের এটুআই প্রকল্পের জনপ্রেক্ষিত বিশেষজ্ঞের দায়িত্ব পালন করার পাশাপাশি কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ও মন্ত্রীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকার সুবাদে জেলা কমিটিতে স্থান করে নিয়েছেন। এরপরই তিনি শুরু করেন বিভিন্ন কর্মসূচি। বর্তমানে মুক্তা পঞ্চগড়-১ আসনের ৩টি উপজেলার ২৩টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার ১১৫ কেন্দ্রের কর্মীদের ডাটা তৈরির কার্যক্রম শুরু করেছেন। প্রাথমিকভাবে ২৫ হাজার কর্মীর ডাটা তৈরি করা হবে। নির্বাচনের আগে এ সংখ্যা ৬০ হাজারে উন্নীত করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন। ওই ডাটায় একজন কর্মীর নাম, গ্রামের নাম, ভোটকেন্দ্রর নাম, জাতীয় পরিচয়পত্র ও মোবাইল নম্বর থাকবে। এসব কর্মীকে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। প্রশিক্ষণে প্রচারণার কৌশল, কেন নৌকা মার্কায় ভোট দিবে তার স্বপক্ষে প্রচারণার কৌশল, ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে আনার জন্য উদ্বুদ্ধকরণের কৌশল বিষয়ে ধারণা দেয়া হবে।
বিএনপিসহ সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন হলে সার্বিক বিবেচনায় এবার স্বচ্ছ ইমেজের কেউ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে পারেন বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়। বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলে সব ধরনের হিসাব-নিকাশ পাল্টে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দেখানোর জন্য আওয়ামী লীগ সমর্থিত জাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও পঞ্চগড়-১ আসনের সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা নাজমুল হক প্রধান অথবা জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক আবু সালেক পেতে পারেন। অন্যদিকে, নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে পঞ্চগড়-১ আসনে বিএনপি’র আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার নওশাদ জমিরের মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। কারণ তিনি গত নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হেরে যান। তবে প্রতিটি শ্রেণি-পেশার মানুষের কাছে জনপ্রিয় পঞ্চগড় পৌরসভার সাবেক মেয়র তৌহিদুল ইসলাম এবার দলীয় মনোনয়ন চাইবেন বলে জানিয়েছেন। ইদানীং বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের শহরভিত্তিক কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালন করতে দেখা যাচ্ছে। গত নির্বাচনের পর থেকে ব্যারিস্টার নওশাদ জমির একরকম জনবিচ্ছিন্ন। প্রায় ১৫ বছর ধরে পঞ্চগড় জেলা বিএনপির কমিটিতেও নেই তিনি। প্রায় ৩ বছর আগে আহ্বায়ক কমিটি গঠন হলেও গ্রুপিং-এর কারণে এখন পর্যন্ত কমিটি পঞ্চগড়-১ আসনে সম্মেলন করতে পারেনি বিএনপি। এ অবস্থায় সাংগঠনিক ভিত্তি নড়বড়ে হয়ে পড়াসহ নেতৃত্ব শূন্যতায় তৃণমূলে নিষ্ক্রিয়তা দেখা দিয়েছে।