শেষের পাতা
উত্তরায় শান্তি সমাবেশে কাদের
বিএনপিকে ৩৬ দিনের আল্টিমেটাম
স্টাফ রিপোর্টার
২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, মঙ্গলবারবিএনপি’র উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র বন্ধ করতে হবে। আগামী ৩৬ দিনের মধ্যে যদি বিএনপি সঠিক পথে না আসে, তাহলে এই জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমরা বিএনপি’র অপরাজনীতির কালো হাত গুঁড়িয়ে দেবো। কালো হাত ভেঙে দেবো। গতকাল বিকালে রাজধানীর উত্তরায় আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে ওবায়দুল কাদের বলেন, খেলা হবে। আগামী মাসে খেলা হবে। ফাইনাল খেলা জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে। বিএনপি যদি অস্ত্র নিয়ে আসে ওই হাত ভেঙে দিতে হবে। যদি আগুন নিয়ে আসে ওই হাত পুড়িয়ে দিতে হবে। কুকুর যেমন মুগুরও ঠিক তেমন। তিনি বলেন, কারোর ভিসানীতির তোয়াক্কা আমরা করি না। কারোর নিষেধাজ্ঞার তোয়াক্কা আমরা করি না। বাংলাদেশ স্বাধীন করেছি কারোর নিষেধাজ্ঞা পরোয়া করার জন্য নয়। কারোর নিষেধাজ্ঞা মানার জন্য নয়। আমার গণতন্ত্র আমি করবো। আমার নির্বাচন আমি করবো। তুমি কে সাত সমুদ্র-তেরো নদীর ওপার থেকে, আটলান্টিকের ওপার থেকে নিষেধাজ্ঞা দেবে? আজকে যারা নিষেধের কথা বলে, স্যাংশানের কথা বলে তাদের নিজেদের দেশেই গণতন্ত্র ত্রুটিমুক্ত নয়। তাদের নিজেদের দেশে মানবাধিকার পদদলিত হচ্ছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণ ছাড়া কোনো নিষেধাজ্ঞা, কোনো ভিসানীতি আমরা মানি না। আমার সংবিধান কীভাবে ইলেকশন করতে হবে বলে দিয়েছে। কারোর খবরদারিতে বাংলাদেশের গণতন্ত্র চলবে না, নির্বাচন চলবে না।
বিএনপি’র উদ্দেশ্যে কাদের বলেন, ৩৬ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েও তারা তাদের নেত্রীর জন্য কিছু করতে পারেনি। শেখ হাসিনার দয়া, মহানুভবতায় খালেদা জিয়া আজকে বাসায় বসে চিকিৎসা নিচ্ছেন। বাংলাদেশের কোথাও ৩৬ মিনিটেরও একটা আন্দোলন হয়নি খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য।
৩৬ দিনের আল্টিমেটাম দিলাম। ঠিক হয়ে যান। আমি পরিষ্কার বলে দিচ্ছি- আমরা এই দেশের জনগণের শক্তিকে বিশ্বাস করি। আমরা এই দেশের নিজেদের শক্তিতে বলিয়ান। তিনি বলেন, নতুন দিল্লি’র এক সেলফি, নিউ ইয়র্কের আরেক সেলফি। দুই সেলফিতে বাজিমাত। বিএনপি উপর দিয়ে চিল্লাচিল্লি করে, কিন্তু তলে তলে ঘুম হারাম। ফখরুল ছটফটায় রাতে। এতো পিকনিক পার্টি করে সমাবেশ করলো, সব বৃথা চলে গেল। তিনি বলেন, নির্বাচন যথা সময়েই হবে। নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী হবে। বাংলাদেশের জনগণ শেখ হাসিনা ছাড়া কাউকে নির্বাচনে মেনে নিবে না। শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন হবে না। অন্য কাউকে এই দেশের মানুষ বিশ্বাস করে না। সবাই এসে বড় বড় কথা বলে জনগণকে ভাঁওতা দেয়। জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে। শেখ হাসিনা একমাত্র নেতা বঙ্গবন্ধু কন্যা বঙ্গবন্ধুর মতো যেটা করতে পারবেন সেটাই বলেন। জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেন না। শেখ হাসিনা যতোদিন আছেন আল্লাহ্র আশীর্বাদ ততদিন বাংলাদেশের ওপর আছে।
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, হতাশ হবেন না। সাময়িক কষ্ট চলে যাবে। সুদিন আবার আসবে। সরকারের উন্নয়নের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, আজকে ফার্মগেট থেকে এয়াপোর্টে যান ১০ মিনিটে, সেই উত্তরা থেকে মেট্রোরেল আগারগাঁও, আগামী মাসে মেট্রোরেল মতিঝিলে যাবে। আজকে বরিশাল যান ৩ ঘণ্টায়, আড়াইঘণ্টায় গোপালগঞ্জ, সাড়ে তিন ঘণ্টায় খুলনা। এতো সুবিধা কি শেখ হাসিনা না থাকলে হতো!
তিনি বলেন, আমার ভর করি বাংলাদেশের জনগণের ওপর। এটাই আমাদের ক্ষমতার ভিত্তি। এটাই আমাদের ক্ষমতার উৎস। এই জনগণকে সঙ্গে নিয়েই আমরা আগামী জানুয়রিতে আবারো নৌকায় করে বিজয়ের বন্দরে পৌঁছাবো। আপস নেই। রাজপথ আওয়ামী লীগের দখলে থাকবে। রাজপথে এসে অবস্থান নিবে সেই খেলা আর খেলতে দেয়া হবে না। রাজপথে এসে মানুষের যাওয়া আসা বন্ধ করে, রাস্তা ঘাট বন্ধ করে অবরোধ করবেন, স্বপ্ন দেখছেন নাশকতার, ফখরুল সাহেব ওইদিন আর আসবে না। ওই সুযোগ আর পাবেন না। সুযোগ একটাই আছে নির্বাচনে আসেন। এটা হারালে খেলায় হেরে যাবেন। হারার আগেই হেরে যাবেন। কাজেই নির্বাচনে আসুন।
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন- আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি, যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিলসহ কেন্দ্রীয় ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতারা।