বাংলারজমিন
আধিপত্য বিস্তার নিয়ে খুন হন ছাত্রলীগকর্মী মনা, আগ্নেয়াস্ত্রসহ গ্রেপ্তার ৯
স্টাফ রিপোর্টার, পাবনা থেকে
১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, মঙ্গলবার
পাবনার ঈশ্বরদীতে চাঞ্চল্যকর ছাত্রলীগকর্মী তফসির আহমেদ মনা (২৫) হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ। পদ্মা নদীর অবৈধ বালু ব্যবসার নিয়ন্ত্রণসহ আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে তিনি খুন হন। এ ঘটনায় ৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ৩টি আগ্নেয়াস্ত্রসহ অস্ত্র তৈরির বিপুল পরিমাণ সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়। গতকাল সকালে পাবনার পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এমন তথ্য জানান পাবনার পুলিশ সুপার আকবর আলী মুন্সী। নিহত তফসির আহমেদ মনা উপজেলার পাকশী ইউনিয়নের রূপপুর পাকারাস্তা মোড় এলাকার তাইজুর রহমান তুহিনের ছেলে। তিনি পাকশী ইউনিয়ন শাখা ছাত্রলীগের কর্মী। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন মানিক, হোসেন (৩৬), ফসিউল আলম অনিক (২৭), চমন রহমান (৩৮), শাহিন সরদার (২৮), রাজিব প্রামানিক (৩০), আরিফুল ইসলাম (৩২), আমজাদ হোসেন অবুঝ (৩৭), মনিরুল ইসলাম (৩৪), মাহফুজুর রহমান কালা (৩৫)। পুলিশ সুপার বলেন, নিহত মনা গত ১৭ই জুন রাতে লক্ষীকুণ্ডা ইউনিয়নের পাকুড়িয়া গ্রামে এমপি মার্কেটে ইকবালের অফিসে আড্ডা দিচ্ছিলেন। এ অবস্থায় রাত ১০টার দিকে ৩ জন অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসী রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের শ্রমিকদের অ্যাপ্রোন ও হেলমেট পড়ে মোটরসাইকেলযোগে এসে মনাকে ৫/৬ রাউন্ড গুলি করে এবং মৃত্যু নিশ্চিত করে দ্রুত পালিয়ে যায়। নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতে নিহত ছাত্রলীগকর্মী মনার মা নাহিদা আক্তার লিপি বাদী হয়ে ঘটনার দুইদিন পর ১৯শে জুন ঈশ্বরদী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ঘটনার পর হত্যাকাণ্ডের অন্যতম মূলহোতা অনিককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। অনিকের দেয়া তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় ঢাকা, গাজীপুর, কুষ্টিয়া এবং পাবনার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে কিলিং মিশনে সরাসরি অংশগ্রহণকারী মানিকসহ অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযানকালে জিগাতলা এলাকায় অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র তৈরির কারখানার সন্ধানসহ অস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম এবং ৩টি আগ্নেয়াস্ত্র জব্দ করা হয়। আকবর আলী মুন্সি আরও জানান, আসামিরদের সঙ্গে মনা পরিবারের দীর্ঘদিনের শত্রুতা, চাঁদাবাজি এবং এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। এর সঙ্গে বালু মহলের নিয়ন্ত্রণ আছে। বালু মহলও আধিপত্য বিস্তারের অন্যতম কারণ। আসামিদের মধ্যে অবুঝের বিরুদ্ধে ৫টি, কালার বিরুদ্ধে ৪টি, মানিকের বিরুদ্ধে ১১টি, চমনের বিরুদ্ধে ১০টি, অনিকের বিরুদ্ধে ৫টি, রাজিবের বিরুদ্ধে ৬টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে পাবনা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম, ঈশ্বরদীর ওসি অরবিন্দ সরকারসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।