শেষের পাতা
অপহরণকারীকে পিটিয়ে মারলো জনতা
চট্টগ্রামে মুক্তিপণ আদায়ের পরও কলেজ শিক্ষার্থীকে হত্যা
স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম থেকে
১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, মঙ্গলবারচট্টগ্রামের রাউজানে ২ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায়ের পরও শিবলী সাদিক হৃদয় নামে এক কলেজ শিক্ষার্থীকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় পুলিশের কাছ থেকে অপহরণকারীদের একজনকে ছিনিয়ে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছে স্থানীয় জনতা। গতকাল সকালে রাউজানের কদলপুর-রাঙ্গুনিয়া সীমান্তবর্তী পাহাড়ি এলাকা থেকে পুলিশ হৃদয়ের ক্ষত-বিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করেছে। নিহত শিক্ষার্থী হৃদয় রাউজান উপজেলার ৮ নম্বর কদলপুর ইউনিয়নের পঞ্চপাড়ার গ্রামের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মো. শফিক ড্রাইভারের ছেলে। হৃদয় কদলপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন। এদিকে লাশ উদ্ধার করতে গিয়ে উত্তেজিত জনতার রোষানলে পড়ে পুলিশ। জনতা পুলিশের হাতে আটক উমংচিং চাকমা নামে এক অপহরণকারীকে ছিনিয়ে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছে। এই ঘটনায় কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহতও হয়েছেন। এছাড়া পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করেছে জনতা। নিহত হৃদয় পড়াশোনার পাশাপাশি কদলপুরের ওই মুরগির খামারে ম্যানেজার হিসেবে চাকরি করতেন। হৃদয় যে মুরগির খামারে চাকরি করতেন সেখানে সবাই ছিলেন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর। মুরগির খামারে চাকরি করা মারমা যুবকদের দেখাশোনার দায়িত্বে ছিলেন তিনি। তাদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে হৃদয়ের মনোমালিন্য হয়। এরমধ্যে গত ২৮শে আগস্ট রাতে মুরগি খামার থেকে হৃদয়কে অপহরণ করা হয়। অপহরণের পর দাবি অনুযায়ী দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ প্রদান করলেও হৃদয়কে অপহরণকারীরা মুক্তি দেয়নি। নিখোঁজের ১১দিন পর গত ৭ই সেপ্টেম্বর হৃদয়ের মা বাদী হয়ে রাউজান থানায় অপহরণ মামলা করেন।
এ মামলায় অজ্ঞাতসহ ৬ জনকে আসামি করা হয়। তারা হলেন- উমংচিং মারমা (২৬), সুইচিংমং মারমা (২৫), অংথুইমং মারমা (২৫), উক্যাথোয়াই মারমা। এরমধ্যে সোমবার (১১ই সেপ্টেম্বর) এজাহারে উল্লেখ করা প্রথম আসামি উমংচিং মারমা (২৬)কে গ্রেপ্তারের পর তার স্বীকারোক্তি অনুসারে ছিন্ন ভিন্ন কঙ্কাল উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় পুলিশের ওপর বিক্ষোভ ঝাড়ে এলাকাবাসী। তারা অভিযুক্ত উমংচিংকে ছিনিয়ে নিয়ে গণপিটুনি দিলে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান তিনি। তবে এ ব্যাপারে এখনো পুলিশের আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এছাড়াও এফআইআরে উল্লেখ করা ৬ জনের মধ্যে আরও ২ জনকে পার্বত্য জেলার কাউখালী উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। গ্রেপ্তার ২ জন হলেন বেতবুনিয়া ইউপির ৬ নম্বর ওয়ার্ডের উহ্লা প্রমং মারমার ছেলে ও আছুমং মারমা (২৬), কাপ্তাই থানার চিৎমরং ইউপির ৪ নম্বর ওয়ার্ডের আমতলী পাড়ার উষাচিং মারমার ছেলে ঊক্যথোয়াই মারমা (১৯)। রাউজান থানার তদন্ত কর্মকর্তা অজয় দেবশীল বলেন, অপহরণে জড়িত দুইজনকে গ্রেপ্তার করে চট্টগ্রাম আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।