ঢাকা, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, রবিবার, ৯ আশ্বিন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৫ হিঃ

প্রথম পাতা

নাঈমের মুখে নির্যাতনের লোমহর্ষক বর্ণনা

পিটিয়ে ধরা খেলেন এডিসি হারুন, নেপথ্যে...

স্টাফ রিপোর্টার
১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, সোমবারmzamin

সহকর্মী, রাজনৈতিক দল-সামাজিক সংগঠনের নেতাকর্মী, সাংবাদিক, শিক্ষার্থী পিটিয়ে নানা সময়ে আলোচিত ছিলেন পুলিশের রমনা জোনের এডিসি হারুন অর রশিদ। শনিবার রাতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় দুই নেতাকে পিটিয়ে আবার আলোচনায় তিনি। তবে এবার শাস্তির মুখে পড়তে হচ্ছে ৩১তম বিসিএসের এই পুলিশ কর্মকর্তাকে। শনিবার রাতের ঘটনার পর গতকাল তাকে  রমনা থেকে প্রত্যাহার করে এপিবিএনে পদায়ন করা হয়েছে। তিনি যে অপরাধ করেছেন সে অনুযায়ী তার শাস্তি হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। দুই নেতাকে নির্মমভাবে মারধরের ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ছাত্রলীগের নেতারা। তারা হারুনের চাকরিচ্যুতির দাবি করেছেন। মানবজমিনের অনুসন্ধানে দেখা গেছে নারীঘটিত একটি সূত্র ধরে শনিবার রাতের ঘটনা ঘটে। এডিসি হারুন পুলিশ ক্যাডারের অন্য এক নারী কর্মকর্তার সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছেন- এমন তথ্য পেয়ে ওই নারী কর্মকর্তার স্বামী ছাত্রলীগ নেতাদের নিয়ে রাজধানীর বারডেম জেনারেল হাসপাতালে এসেছিলেন। এ বিষয়ে কথাকাটাকাটি ও বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে ছাত্রলীগ নেতাদের শাহবাগ থানায় নিয়ে পেটানো হয়।

বিজ্ঞাপন
 পেটানোর এক পর্যায়ে ছাত্রলীগ নেতারা গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদেরকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ছাত্রলীগ নেতাকে মারধর করে আহত করার ছবি প্রকাশ হলে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। নির্যাতনের চিত্র দেখে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা বিক্ষুব্ধ হন। তারা ঘটনায় জড়িত পুলিশ কর্মকর্তাদের শাস্তি দাবি করেন। যে নারী কর্মকর্তাকে নিয়ে এই ঘটনার সূত্রপাত সেই নারীর স্বামী প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা এবং তিনি প্রেসিডেন্টের এপিএস হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। 

মারধরের ঘটনায় আহতরা বর্তমানে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। হারুনের বর্বরতার শিকার দুই ছাত্রলীগ নেতা হলেন- কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন নাঈম এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ও শহীদুল্লাহ হলের সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহমেদ মুনিম। 
জানা গেছে, বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের ৩১তম ব্যাচের এক কর্মকর্তার স্ত্রীর (৩৩তম বিসিএস পুলিশ ক্যাডার) সঙ্গে এডিসি হারুনের ঘনিষ্ঠতা থেকে ঘটনার সূত্রপাত। হারুন নিজেও ৩১তম বিসিএসের পুলিশ কর্মকর্তা। দীর্ঘদিন ধরে হারুনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে প্রশাসন ক্যাডারের ওই কর্মকর্তার সঙ্গে স্ত্রীর দূরত্ব বাড়তে থাকে। বিষয়টি অভ্যন্তরীণভাবে বেশ কয়েকবার মিটমাট করার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু এডিসি হারুন সরে না আসায় কোনো সুরাহা হয়নি। 

সর্বশেষ শনিবার রাতে বারডেমে হারুনের সঙ্গে স্ত্রী আড্ডা দিচ্ছেন- এমন খবরে ছাত্রলীগের নেতা আনোয়ার হোসেন নাঈম শরীফ আহমেদ মুনিমকে নিয়ে ঘটনাস্থলে যান প্রশাসন ক্যাডারের ওই কর্মকর্তা। এ সময় হারুনের সঙ্গে ওই কর্মকর্তার বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। এক পর্যায়ে সঙ্গে থাকা ছাত্রলীগের দুই নেতাও এতে জড়িয়ে যান। এ সময় তারা হারুনের ওপর চড়াও হলে তিনি শাহবাগ থানায় খবর দেন। খবর পেয়ে শাহবাগ থানা পুলিশের একটি দল সেখান থেকে ছাত্রলীগের এক নেতাকে থানায় ধরে নিয়ে যান। পরে অন্য নেতা সেখানে যান। এরপর থানায় ওসির কক্ষে তাদের ওপর চালানো হয় বর্বর নির্যাতন। হারুন নিজেও মারধরে অংশ নেন বলে জানা গেছে। এলোপাতাড়ি মারে অনেকটা সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েন নাইম। নির্যাতনে নাঈমের বেশ কয়েকটি দাঁতও পড়ে যায়। এরপর অবস্থার অবনতি হলে তাদের রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে নাঈম চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তবে মুনিমের চিকিৎসার বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায়নি। 

এদিকে দুই শীর্ষ নেতাকে মারধরের খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে শাহবাগ থানার সামনে জড়ো হতে শুরু করেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় বন্ধ করে দেয়া হয় শাহবাগ থানার গেইট। একপর্যায়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান শাহবাগ থানায় উপস্থিত হন। সেখানে আসেন রমনার ডিসিও। এরপর তিন পক্ষের মধ্যে আলোচনা শেষে ঘটনার তাৎক্ষণিক মীমাংসা হয়ে যায়। মীমাংসার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভ উগড়ে দেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। তারা এ ঘটনায় কেন্দ্রীয় সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের অদক্ষ নেতৃত্বকে দায়ী করেন। দাবি উঠে অবিলম্বে এডিসি হারুনের চাকরিচ্যুতির। 

ভুক্তভোগী আনোয়ার হোসেন নাঈম মানবজমিনকে বলেন, বারডেম হাসপাতালে প্রেসিডেন্টের এপিএস আজিজুল হক খান মামুন ভাইয়ের সঙ্গে এডিসি হারুন অর রশিদের কথা কাটাকাটি হতে দেখি। তখন আমরা বিষয়টা মীমাংসা করার চেষ্টা করি। হঠাৎ এডিসি হারুন ১০-১৫ জন পুলিশ নিয়ে আসেন সেখানে। এরপর তিনি মামুন ভাই ও আমাদের ওপর চড়াও হন। এক পর্যায়ে শহীদুল্লাহ হলের সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহমেদ মুনিরকে মারতে মারতে তারা শাহবাগ থানায় নিয়ে যায়। ৫ মিনিট পর আমি শাহবাগ থানা গেলে হারুনের নির্দেশে ওসির রুমে ১০ থেকে ১৫ জন এসআই, কনস্টেবল আমার ওপর পৈশাচিক নির্যাতন চালায়। কিল, ঘুষি, লাথি মারতে থাকে আমার সারা শরীরে। এরপর আমি আর কিছু মনে করতে পারছি না। তিনি বলেন, থানা হচ্ছে মানুষের নিরাপদ আশ্রয়স্থল। কিন্তু সেখানে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর করা হয়েছে। আমি পরিচয় দেয়ার পর তারা আমাকে মারতে থাকে। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই। তার চাকরিচ্যুতি চাই। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং রমনার ডিসি এ ঘটনায় রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায়ে কথা বলে ব্যবস্থা নেবেন বলেছেন কিন্তু আমি তাতে ভরসা পাচ্ছি না। ছাত্রলীগ এতিমদের সংগঠন আমাদের একমাত্র আশ্রয়স্থল মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার কাছে এর সুষ্ঠু বিচার চাচ্ছি। 

আহত আনোয়ার হোসেন নাঈমের মা নাজমুন নাহার মানবজমিনকে বলেন, আমার ছেলেকে মেরে ফেলার জন্যই তো নিছিলো। থানা হলো নিরাপত্তার জায়গা। ওই থানায় নিয়ে এডিসি হারুনের নেতৃত্বে ১৫ থেকে ২০ জন লোক আমার ছেলেকে কেন এইভাবে মারলো? সে তো তার পরিচয় সব দিলো তার পর তারা চিনেও এইভাবে মারলো। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে এটার বিচার চাই।
ঘটনার বিষয়ে জানতে ৩১তম বিসিএসের প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা আজিজুল হকের সঙ্গে 
টেলিফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। প্রশাসন ক্যাডারের এই কর্মকর্তা এক সময় ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। 

এদিকে এ ঘটনায় গতকাল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান। এ সময় তারা মন্ত্রীর কাছে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেন। 
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সাংবাদিকদের বলেছেন, এটা যে করেছে সে অন্যায় করেছে। কেন এই কাজ করেছে, কী কারণে করেছে, তার এই কর্মকা-ের জন্য জবাবদিহি করতে হবে। আমরা এই ঘটনা জানতে পেরেছি। আমরা এটা নিয়ে কাজ করছি। সে যতটুকু অন্যায় করেছে তার শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।

এডিসি হারুনের মারধরের শিকার হয়েছেন অনেকে: এডিসি হারুনের দায়িত্বপ্রাপ্ত এলাকার মধ্যে ছিল শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিকেল কলেজসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এ ছাড়াও রয়েছে হাইকোর্ট ও জাতীয় প্রেস ক্লাব। প্রেস ক্লাব ও শাহবাগ মোড়ে প্রায়ই বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে আন্দোলন, প্রতিবাদ, বিক্ষোভ, দাবি আদায়, সড়ক অবরোধ, মানববন্ধনের মতো কর্মসূচি পালিত হয়। অনেক কর্মসূচিতে তিনি আন্দোলনকারীদের পিটিয়ে খবরের শিরোনাম হয়েছেন। আন্দোলন-কর্মসূচিতে তিনি বরাবরই উগ্র আচরণ করেন। আন্দোলন-বিক্ষোভকারীদের ওপর অমানবিকভাবে লাঠিপেটা করেন। এসব দৃশ্য ধারণ করতে গিয়ে অনেক সাংবাদিক তার মারধরের শিকার হয়েছেন। আর লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনা অহরহ। তার লাঞ্ছনার শিকার হওয়া থেকে বাদ যায়নি খোদ পুলিশ সদস্যরাও। অমানবিকভাবে মানুষ পেটানোর ঘটনায় দেশজুড়ে অনেক আলোচনার জন্ম দিলেও কখনো তিনি শাস্তির মুখে পড়েননি। 

এর আগে গত বছরের ৪ঠা মার্চ গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুরের নেতৃত্বে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ মিছিলে ঢাকা ক্লাবের সামনে এডিসি হারুনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ও সাদা পোশাকের লোক বিক্ষোভকারীদের ওপর অতর্কিত লাঠিচার্জ করে। ওইদিন হারুন নিজেই বিক্ষোভকারীদের পেটাতে পেটাতে গলা টিপে ধরেন। পুলিশের ওই হামলায় গণঅধিকার পরিষদের অনেকেই আহত হয়েছিলেন। 

গত বছরের ১৮ই এপ্রিল রাতে নিউ মার্কেট এলাকায় দোকান মালিক, বিক্রেতা ও ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের সময় শিক্ষার্থীদের দিকে রাবারের বুলেট ছুড়তে এক কনস্টেবলকে নির্দেশ দেন তিনি। এ সময় ওই কনস্টেবল জানান বুলেট শেষ হয়ে গেছে। এ কথা শোনার পর পরই হারুন ওই কনস্টেবলকে থাপ্পড় মারেন। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে ব্যাপকভাবে সমালোচিত হন হারুন। 

গত বছরের ৭ই আগস্ট জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে শাহবাগে একটি সমাবেশ করেছিল বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা। সেদিনের শান্তিপূর্ণ ওই কর্মসূচিতে এডিসি হারুনের নেতৃত্বে লাঠিপেটা করে পুলিশ। এতে আহত হন শিক্ষার্থী মো. সুলাইমান মিয়া, বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রীর ঢাবি সংগঠক সামি আবদুল্লাহ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের স্কুল বিষয়ক সম্পাদক ফেরদৌস বাঁধন, ছাত্র ইউনিয়নের বৃহত্তর লালবাগ থানা আহ্বায়ক শান্তা ইসলামসহ ১২ জন। এ ঘটনায় সামি আবদুল্লাহ মারাত্মকভাবে আহত হন। তার মাথায় ১৪টি সেলাই লেগেছিল। আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও আহতরা ওই সময় অভিযোগ করে বলেছিলেন, তারা শান্তিপূর্ণ এবং গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পালন করছিল। কিন্তু এডিসি হারুন সে সময় অতর্কিতভাবে লাঠিপেটা করেন। 

গত বছরের ৯ই সেপ্টেম্বর সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার দাবিতে শাহবাগ মোড়ে সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করেন একদল চাকরিপ্রার্থী। পরে আন্দোলনকারীদের লাঠিপেটা করে পুলিশ। এতে আহত হন অন্তত ১০ জন। আহত শিক্ষার্থী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা সেদিন গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, একদল শিক্ষার্থী শাহবাগ মোড়ের চতুর্দিকের রাস্তা অবরোধ করে আন্দোলন করছিল। এ সময় তারা সরকারকে নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী চাকরির বয়স বাড়ানোর দাবি জানায়। পরে এডিসি হারুনের নেতৃত্বে শুরু হয় লাঠিচার্জ। প্রায় আধাঘণ্টা লাঠিচার্জ করে তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করা হয়। এ সময় ছবি তুলতে গেলে ফটো সাংবাদিকদের সঙ্গে হারুন দুর্ব্যবহার করেন। তিনি তাদেরকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেন। 

২০২১ সালের ২৬শে ফেব্রুয়ারি লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যুতে বিচার চেয়ে শাহবাগে প্রগতিশীল ছাত্রজোট ও অন্যান্য বাম সংগঠন আয়োজিত মশাল মিছিলে লাঠিপেটা করে পুলিশ। সেদিন বিক্ষোভকারীরা মিছিল নিয়ে টিএসসি থেকে শাহবাগে যাচ্ছিলেন, এমন সময় এডিসি হারুনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ বিক্ষোভকারীদের মারধর করে আহত করেন। একই বছরের ১৫ই মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় বিভাগ পরিবর্তন ইউনিট বহাল, গুচ্ছ সিলেকশন বাতিল এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় পূর্বের জিপিএ বহাল রাখার দাবিতে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচিতে সচিবালয়ের সামনে শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিপেটার নির্দেশ দেন এডিসি হারুন। তিনি নিজেও শিক্ষার্থীদের লাঠি দিয়ে পেটান।

পাঠকের মতামত

দুই নেতাকে নির্মমভাবে মারধরের ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ছাত্রলীগের নেতারা। তারা হারুনের চাকরিচ্যুতির দাবি করেছেন। ঘটনাটি দুঃখজনক। তারচেয়েও বড় দুঃখজনক ঘটনা এরা সারা বছর বিরোধী ছাত্র জনতাকে পিটায়। পিটিয়ে স্বভাব নষ্ট করে ফেলাতে এবার নিজের সংগঠনের উপর হাতযশ কাজে লাগায়। হিতে বিপরীত হয়ে যায়। বিরোধী পিটালে তারা সরকার থেকে পুরষ্কৃত হয়েছে এমন উদাহরণের অভাব নেই। এবার শাস্তির মোকাবেলা করতে হচ্ছে। দেখেন আল্লাহ যে একজন নিরব দ্রষ্টা তা কি মনে হয় না? দেরীতে হলেও খড়গ আসে ধীরে হলেও হারুণ বাছাধনকে এখন এভাবে পিটালে আসল মজাটা সঠিক হতো। তার এভাবে সবকটিদাঁত ও ভেঙ্গে দিলে কেমন হতো? তার নিজ দলবাজরা ফুর্তি করতো। হয়তো প্রকৃত বিরোধীরাই তার কষ্টের সাথে সহমর্মিতা দেখাতো। কারণ তারাই বিচারহীনতার শিকার ও প্রকৃত নির্যাতীত।

Nazma Mustafa
১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, সোমবার, ৭:১১ অপরাহ্ন

অন্যদের পিটানোর সময় মনে হয় নাই পুলিশ অন্যায় করেছে, এখন কেন অন্যায় হবে?

LUBNA
১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, সোমবার, ৭:৪৪ পূর্বাহ্ন

সব কথার শেষ কথা, এই দেশে বিচার পাইতে হলে ছাত্রলীগ হতে হবে।

ফারুক হোসেন
১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, সোমবার, ৪:৪২ পূর্বাহ্ন

তোমাকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে বিরোধী দলের লোকজনকে পিটানোর জন্য, তুমি পিটাও ছাত্রলীগকে, তোমার জন্য আফসোস হয়।

shaifullah
১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, সোমবার, ৩:১৪ পূর্বাহ্ন

ছাত্রলীগকে পুলিশ পিঠাইছে তাই আজকে মিডিয়া সরব, আইন সরব। বিগত ১৫ বছরে বিরোধী দলের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে চরমভাবে নির্যাতন করা হয়েছে, যা অধিকাংশ পেপারেও আসে নাই, তবে সোসাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে । তখন মিডিয়া, অাইন চশমা পরে থাকে । এটাই কি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ! স্বাধীন সাংবাদিকতা !

ljlian
১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, সোমবার, ১:০৪ পূর্বাহ্ন

এটাই তো ছাত্রলীগ, তারা যেখানে যাবে সেইখানেই কলুশিত করবে !! কারন ছাত্রলীগ এর শিক্ষা এটাই !!! এরা প্রথমে বিরোদী দের পিটিয়ে শুরু করে শেষ হয় নিজেদের কে দিয়ে।

Imran
১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, রবিবার, ১১:০৯ অপরাহ্ন

এটা নিয়ে মন্তব্য না করাই ভালো। কারণ এটা দুই লীগের অভ্যান্তরিন বিষয়। ছাত্র-লীগ আর পুলিশ-লীগ।

Rafiqul Islam
১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, রবিবার, ১১:০৬ অপরাহ্ন

বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং রমনার ডিসি এ ঘটনায় রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায়ে কথা বলে ব্যবস্থা নেবেন বলেছেন কিন্তু আমি তাতে ভরসা পাচ্ছি না। পুলিশকে ভরসা করার জায়গায় রেখেছেন আপনারা? নিজের উপর আঘাত আসলে মানুষের উপলব্ধি আসে, এর থেকে শিক্ষা নিলে ভাল আর না নিলে.....

Nader
১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, রবিবার, ১০:৪৮ অপরাহ্ন

I feel sorry for Bangladeshis. পঁচে গেছে বাংলাদেশ। দুঃখের সাথে বলতে হয়, ৫২ বছরেও সভ্যতা ছুঁতে পারেনি বাংলাদেশকে। দেশটা হয়ে উঠেছে জঘন্য।

Robin
১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, রবিবার, ১০:২৭ অপরাহ্ন

ছাত্রলীগকে পুলিশ পিঠাইছে তাই আজকে মিডিয়া সরব, আইন সরব। বিগত ১৫ বছরে বিরোধী দলের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে নির্যাতন করা হয়েছে । তখন মিডিয়া, অাইন টিনের চশমা পরে থাকে ।

Mizan
১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, রবিবার, ৯:২৫ অপরাহ্ন

আহারে বেচারা হারুন! সে কি বিবাহিত কিনা? তার কি বউ আচে? আহা সে তো অনেক লজ্জা পাচ্ছে।

Shah Alam Bhuiyan
১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, রবিবার, ৯:২৪ অপরাহ্ন

পুলিশের এডিসি কর্তৃক ছাত্রলীগ নেতাদের শাহবাগ থানায় নিয়ে বর্বরোচিত হমলার তীব্র নিন্দা জানাই। একই সাথে ছাত্রলীগ সহ তাদের দলের নেতা-কর্মীরা বাংলাদেশের প্রায় সকল থানাতে পুলিশকে দিয়ে বিরোধী রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের উপর যে নির্মম নির্যাতন চালিয়েছে তা কিছুটা উপলব্দি করার এবং তাদের কাছে ক্ষমা চাওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।

মহিন
১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, রবিবার, ৮:৩৭ অপরাহ্ন

আহারে! ১৫ বৎসরের আন্নাইএর ফল ত এখন ও বাকী

Zafar
১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, রবিবার, ৮:২৬ অপরাহ্ন

আমরা আমরার ঘটনা নিয়ে টেনশনের কী আছে? তার চেয়ে বরং উপভোগ করি।

আনোয়ার হোছাইন
১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, রবিবার, ৮:২৬ অপরাহ্ন

আচ্ছা বুঝলাম পুলিশ অফিসার এডিসি হারুন সাহেব অন্যায় করেছেন। আমার কথা হলো ছাত্রলীগ নেতা কি নিয়ে সমস্যা তা জেনে শুনে মিমাংশা করার জন্য গেলেন কেন? দেশে স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা আছে। হারুন সাহেবের বস আছে, অফিশিয়াল সিস্টেম আছে, সর্বপরি মান্যবর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রি সাহেব আছেন। ছাত্রলীগকে এই ধরনের দায়িত্ব কে দিয়েছে, ছাত্রলীগ কি দেশের বিচারকের দায়িত্ব নিয়েছে। আসলে ছাত্রলীগ বাড়তে বাড়তে এমন জায়গায় এসে পৌছেছে যে পুলিশকেও আর মানতে চাইছেনা, ‍সুতারাং যা হবার তাই হয়েছে।

সালাহ উদ্দিন
১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, রবিবার, ৮:০৪ অপরাহ্ন

এই দুই লীগের লুইচচামি নিয়ে ঘটনা কম হয়নি। তাই মানবজমিনকে অনুরোধ এগুলো পাবলিশ বন্ধ করে দিন। এদেরকে লুইচচামি করতে দিন। এদের জন্মই এই কারনে।

Siddq
১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, রবিবার, ৭:৫০ অপরাহ্ন

তাহলে এডিসি হারুন কি ছাত্র লীগ থেকে নিয়োগ পাননি?

Kim
১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, রবিবার, ৭:৪৫ অপরাহ্ন

আমাদের দেশের পুলিশ এত অসহায় যে, তাদেরকেও ছাত্রলীগের সাহায্য নিয়ে চলতে হয়।

A. Monna
১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, রবিবার, ৭:২০ অপরাহ্ন

যে অস্ত্র দিয়ে ভিন্নমতাবলম্বীদের দমন করেছে এখন সে অস্ত্র আপনাদের দিকে গর্জে উঠছে! কতো মায়ের বুক এরা খালি করেছে, কত সন্তানের আহাজারি ..। এখন দেখুন বিচারহীনতার রাজনীতির ফল? সবে শুরু ।

Sakhawat
১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, রবিবার, ৭:২০ অপরাহ্ন

কামড়াতে শিখানো কুকুর সুযোগ পেলে প্রভূকেও ছাড়ে না ।

Abu Ali
১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, রবিবার, ৭:১৭ অপরাহ্ন

বিগত সময়ে বিএনপির নেতা কর্মীদের পিটিয়ে পুরস্কৃত হয়েছেন, আর এখন ছাত্রলীগকে পিটিয়ে তিরস্কৃত। সামনের দিনগুলোতে আবার ভয়ের রাজত্ব কায়েম করতে সরকারের পুলিশ এবং ছাত্রলীগ দুটোকেই দরকার। সুতরাং শাস্তির চেয়ে আই ওয়াশ বেশী হবে।

জামশেদ পাটোয়ারী
১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, রবিবার, ৬:১৬ অপরাহ্ন

প্রাক্তন ছাত্রলীগ ৩১তম প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা প্রেসিডেন্টের এপিএস আজিজুল হক কি হারুণের চেয়ে নিরস? তার বৌ কেন হারুণের কাছে চলে যায়। নিজের বাগে না এনে কেন সে ছাত্রলীগ নেতাদের নিয়ে হারুনের মত পাগলা কুত্তার কামড় খেতে গেল? আজিজুলের বৌয়ের বিচার কি হবে না!!! সব নষ্টের গোড়াতো আজিজুলের বৌ।

Eyaqub
১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, রবিবার, ৬:০৬ অপরাহ্ন

ছাত্রলীগের এক নেতা পিটিয়েছে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় দুই নেতাকে।

Digital
১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, রবিবার, ৬:০৪ অপরাহ্ন

এ তো আপনাদের দলীয়,অল্প প্রহারেই চেহারা ফ্যাকাসে হয়ে গেছে, তাহলে বিরোধীদের সে কি রকম নাস্তা খাওয়াইছে বলতে পারেন।

নন্দ ঘোষ
১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, রবিবার, ৫:৫৬ অপরাহ্ন

"ক্যাডার" শব্দটি বাংলাদেশ থেকে মুছে না ফেললে দেশের কোন উন্নতি হবে না। "ক্যাডার" মানেই গুন্ডা।

shiblik
১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, রবিবার, ৫:৩৮ অপরাহ্ন

ছাত্র লিগ তার অভ্যাস অনুযায়ী ছাত্র দলের বিরুদ্ধে মামলা করছে না কেন?

Parvez
১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, রবিবার, ৪:৫৫ অপরাহ্ন

ঐ লোকটা ছাত্র লীগের সহায়তা চাওয়াটা চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে , সে আইনের আশ্রয় নিতে পারতো, ঐ পুলিশ কর্মকর্তা থানায় সাহায্য না চাইলে ছাত্র লীগ হয়তো তাদের মেরেই ফেলতো কারণ ছাত্র লীগের চরিত্র এমনি।

মিজানুর রহমান
১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, রবিবার, ৪:৫৩ অপরাহ্ন

Asun Amra kadte thaki

Rony
১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, রবিবার, ৪:৩৮ অপরাহ্ন

আজব দেশ সরকারি দলের নেতাদের পেটালেই কেবল আইন নড়ে.. এতোদিন এতো অপকর্ম করেও জামাই আদরেই ছিলেন.., বিচিত্র দেশ

Barkat
১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, রবিবার, ৪:০৭ অপরাহ্ন

News ti pore kadte thaklam. Evabe ar koto din kadbo.

Rony
১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, রবিবার, ১১:৩৪ পূর্বাহ্ন

আগেকার নৃশংস ঘটনার সুষ্ঠু নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করলে বর্তমান অঘটন ঘটতো না, অতীতের ঘটনার জন্য তাকে হিরো সাব্স্থ্য করা হয়েছে, কিন্তু একই ঘটনা সরকারি দলের সঙ্গে হওয়ার তিনি আজ জিরো বা দুষ্ট লোক বলে বিবেচনা করা হচ্ছে।

ইতরস্য ইতর
১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, রবিবার, ১১:২৯ পূর্বাহ্ন

এত বড় একটা অপরাধ হয়ে গেলো অথচ কোন মামলাই হলো না। কি অদ্ভূত। দাবী শুধু চাকরিচ্যূতি!!! Grievous hurt এর জন্য মামলা হবে না? নাকি আপোষে উন্নতমানের দাঁত লাগিয়ে দিবে?

Adnan Areej
১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, রবিবার, ১১:২১ পূর্বাহ্ন

আমি পেটানো ঘটনার জন্যে খুবই খুশি আবার পুলিশের ক্লোজ এ ও খুবই খুশি

Sharmin Afroza
১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, রবিবার, ১১:১২ পূর্বাহ্ন

ছোট হারুন বড় হারুনের প্লেবুক অনুসরণ করছে।

Robin
১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, রবিবার, ১১:১১ পূর্বাহ্ন

অন্যদের পিটানোর সময় মনে হয় নাই পুলিশ অন্যায় করেছে, এখন কেন অন্যায় হবে?

মাসউদ
১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, রবিবার, ১১:০৮ পূর্বাহ্ন

প্রথম পাতা থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

প্রথম পাতা সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2023
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status