বাংলারজমিন
আঁখির জানাজা সম্পন্ন, ডাক্তারদের ফাঁসির দাবি
লাকসাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
২১ জুন ২০২৩, বুধবার
সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় আঁখি ও তার নবজাতক শিশুর লাশবাহী গাড়ি গত সোমবার রাত ১০টায় লাকসামের গাইনের ডোহরা গ্রামে বাড়িতে পৌঁছায়। এ সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন তার আত্মীয়-স্বজন ও স্কুল জীবনের সহপাঠীরা। এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। তার মরদেহ দেখার জন্য ও জানাজায় শত শত লোক অংশগ্রহণ করে। সবাই ডাক্তার সংযুক্ত সাহা ও সংশ্লিষ্ট ডাক্তারদের ফাঁসির দাবি জানায়। সেন্ট্রাল হাসপাতাল বন্ধ ঘোষণার দাবি করেন। জানাজা শেষে আঁখি ও তার শিশুকে তার প্রয়াত বাবার কবরের পাশে দাফন করা হয়।
আত্মীয়-স্বজনরা জানায়, জন্মের ৯ মাস পর আঁখির বাবা পুলিশের এস আই মাহবুব ঢাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায়। এরপর দাদার বাড়িতে থাকেন। বড় চাচা সফিকুর রহমান বলেন, ছোটবেলা থেকে কোলে-পিঠে করে লালন পালন করে আসছি। কোনো সময় বাবার অভাব বুঝতে দেয়নি। পড়ালেখার মাঝে গত ৪ বছর পূর্বে নাঙ্গলকোট উপজেলার ইয়াকুব আলীর সঙ্গে বিয়ে হয়। তিনি পেশায় স্কুল শিক্ষক। তিতাস উপজেলা বাতাকান্দি উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত। আঁখির স্বামী জানান, তাদের উভয়ের সম্মতিতে সন্তান নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। শেষ দিকে সন্তান প্রসব হওয়ার পূর্বে আঁখি ফেসবুকে ডাক্তার সংযুক্ত সাহার নরমাল ডেলিভারি দেখতো। মৃত্যুর কয়েকদিন পূর্বে আঁখি তার স্বামীর সঙ্গে স্কুলের পাশে ভাড়া বাসায় থাকতেন। প্রসব ব্যথার পূর্বে স্বামী ইয়াকুব ডা. সংযুক্ত সাহাকে ফোন করেন। ফোন রিসিভ করেন তার সহকারী।
ঘটনা জানালে দ্রুত সেন্ট্রাল হাসপাতালে নিয়ে আসার জন্য বলেন। এম্বুলেন্সে করে রাত ১২টায় সেন্ট্রাল হাসপাতালে নিলেন এবং অতঃপর ১০ হাজার টাকা দিয়ে ডা. সংযুক্ত সাহার তত্ত্বাবধানে ভর্তি করেন। নরমাল ডেলিভারি না করে আমাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা না করে আঁখিকে সিজার করেন। সিজার করতে গিয়ে বাচ্চাকে মেরে ফেলেন। রোগীর অবস্থা খারাপের দিকে যেতে থাকলে রোগীর আত্মীয়-স্বজনদের কোনো তথ্য দিতেন না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ৯৯৯ নম্বরে রোগীর স্বামী (আঁখির স্বামী) ফোন করলে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে আসেন। রোগীকে পার্শ্ববর্তী ল্যাবএইড হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করেন। ভর্তির পর থেকে আঁখি মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে গত রোববার দুপুরে মারা যায়। ঢাকা মেডিকেল কলেজে লাশের ময়নাতদন্ত শেষে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসেন। পারিবারিক কবরস্থানে প্রয়াত বাবার কবরের পাশে দাফন করা হয়।