খেলা
প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ বাছাইয়ে নেপাল
স্পোর্টস ডেস্ক
১৮ মার্চ ২০২৩, শনিবার
রুদ্ধশ্বাস সমাপ্তির দিকেই যাচ্ছিল রোমাঞ্চে ভরা ম্যাচটি। তবে আলোকস্বল্পতায় ম্যাচের শেষটা হয় অন্যরকম। আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ লীগ-২ এর ম্যাচে বৃহস্পতিবার সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে জয় পায় নেপাল। এই জয়ে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের টিকিট কেটেছে হিমালয়ের দেশটি। প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ বাছাইয়ে জায়গা নিশ্চিত করা নেপালের ক্রিকেট ইতিহাসে এটি স্বরণীয় জয়। কীর্তিপুরে আগে ব্যাটিং শেষে ৩১০/৬-এ পৌঁছে আমিরাতের সংগ্রহ। জবাবে ৪৪তম ওভার শেষে আলোকস্বল্পতায় ম্যাচের ইতি টানেন আম্পায়াররা। এ সময় নেপালের সংগ্রহ ছিল ২৬৯/৬। এতে ডাকওয়ার্থ-লুইস-স্টার্ন পদ্ধতিতে ৯ রানে জয় পায় নেপাল। অর্ধশতক হাঁকান নেপালের চার ব্যাটসম্যান।
বিজ্ঞাপন
এর আগে ইনিংসের শেষ ওভারে সেঞ্চুরি ছুঁতে আসিফ খানের প্রয়োজন ছিল ১০ রানের। নেপালের সমপাল কামিকে টানা ছক্কা-চার মেরে তিন অঙ্কে পৌঁছে যান আসিফ। ক্যারিয়ারের প্রথম ওয়ানডে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তিনি ৪১ বলে। এই সংস্করণে আমিরাতের হয়ে যা দ্রুততম। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ভেঙে যায় আগের রেকর্ডটি। বুধবার পাপুয়া নিউ গিনির বিপক্ষে ১১৯ রানের ইনিংস খেলার পথে ৬০ বলে সেঞ্চুরি করেছিলেন আরব আমিরাতের অধিনায়ক মোহাম্মদ ওয়াসিম। আইসিসির সহযোগী দেশগুলোর মধ্যেও আসিফের ৪১ বলের সেঞ্চুরিটি রেকর্ড। আগের দ্রুততম শতকে ছিল দুজনের নাম। ওয়াসিমের আগে নেপালের বিপক্ষে ২০২১ সালে ৬০ বলে সেঞ্চুরি করেছিলেন ওমানের জাতিন্দর সিং।
সব মিলিয়ে ওয়ানডের চতুর্থ দ্রুততম সেঞ্চুরিয়ান আসিফ। এর শীর্ষ রেকর্ডটি দক্ষিণ আফ্রিকান ব্যাটসম্যান এবি ডি ভিলিয়ার্সের। ২০১৫ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৩১ বলে শতক হাঁকান তিনি। পরের দুই স্থানে নিউজিল্যান্ডের কোরি অ্যান্ডারসন (৩৬ বলে) ও পাকিস্তানের শহীদ আফ্রিদি (৩৭ বলে)। আসিফ সেঞ্চুরি করেন ৭ নম্বরে নেমে। ওয়ানডেতে এই পজিশনে ব্যাটিংয়ে নেমে সেঞ্চুরি আছে ২৪টি। যার মধ্যে শতক ছুঁতে সবচেয়ে কম বল লেগেছে আসিফেরই। ৭ নম্বরে আগের দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড ছিল মঈন আলীর। ২০১৭ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৫৩ বলে তিন অঙ্কে পা রেখেছিলেন ইংল্যান্ডের পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত ব্যাটার।
গতকাল কীর্তিপুরে টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নামা সংযুক্ত আরব আমিরাত ৩৮তম ওভারে ১৭৫ রানে পঞ্চম উইকেট হারালে ক্রিজে যান আসিফ। ৪৫ ওভার শেষে তার রান ছিল ২২ বলে ২২। গুলশান ঝা-কে টানা দুই ছক্কা হাঁকিয়ে শুরু ৩৩ বছর বয়সী আসিফের। পরের ওভারে সমপালকে ওভারে দুই ছক্কা ও এক চার হাঁকান তিনি। ৩০ বলে পূর্ণ করেন ফিফটি।
ফিফটির পর আরও ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠেন আসিফ। পরের পঞ্চাশ রান তোলেন স্রেফ ১১ বলে। গুলশানকে পরপর দুই ছক্কার পর সন্দিপ লামিছানেকে হাঁকান টানা চারটি ছক্কা। শেষ ওভারে আসে একটি ছক্কা ও একটি চারের মার। ক্যারিয়ারের তৃতীয় ওয়ানডে শতক করার সুযোগ ছিল ভৃত্য অরবিন্দের। কিন্তু ইনিংসের শেষ তিন বলে কোনো রান নিতে পারেননি তিনি। আউট হয়ে যান ২ ছক্কা ও ৮ চারে ১৩৮ বলে ৯৪ রান করে। আসিফ-অরবিন্দ ষষ্ঠ উইকেটে তোলেন ১৩৫ রান। এই জুটিতে আমিরাতের হয়ে যা সর্বোচ্চ। ষষ্ঠ উইকেটে একশ রানের জুটিও ছিল না তাদের। তাদের দারুণ দুটি ইনিংসের সঙ্গে ৬ ছক্কা ও ২ চারে ৬৩ রান করেন ওপেনার ওয়াসিম। এতে ৬ উইকেটে ৩১০ রানের পুঁজি গড়ে আমিরাত, ওয়ানডেতে যা তাদের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। তাদের শীর্ষ রেকর্ডটি নামিবিয়ার বিপক্ষে ২০২২ সালে করা ৩ উইকেটে ৩৪৮। নেপালের হয়ে মাত্র ১৯ রান খরচায় ২ উইকেট নেন দিপেন্দ্র সিং আইরে। এছাড়া ১টি করে উইকেট নেন ললিত রাজবংশী, সোমপাল কামি এবং সন্দীপ লামিচানে।
এদিকে জিম্বাবুয়েতে আগামী ১৮ জুন থেকে শুরু হবে বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব, যা চলবে ৯ জুলাই পর্যন্ত। বাছাইপর্বে মোট ১০ টি দল থাকবে। সেখান থেকে বিশ্বকাপের মূলপর্বের টিকিট পাবে দুটি দল।