খেলা
সুযোগ আছে অলিম্পিকে খেলারও
যেভাবে বিশ্বকাপে খেলতে পারে বাংলাদেশের মেয়েরা
স্পোর্টস রিপোর্টার
৪ জুলাই ২০২৫, শুক্রবার
২০২২ সালে সাফ চ্যাম্পিয়ন মেয়েদের অর্থের অভাবে অলিম্পিক কোয়ালিফায়ার্সে মিয়ানমার খেলতে পাঠায়নি কাজী সালাউদ্দিনের বাফুফে। ওই মেয়েরা ২০২৪ সালে আবারো সাফ চ্যাম্পিয়ন হয়ে ঘরে ফেরে। টানা দ্বিতীয় দফা সাফ চ্যাম্পিয়ন মেয়েদের জন্য দেড় কোটি টাকা বোনাস ঘোষণা করে সভাপতি তাবিথ আউয়ালের নতুন কমিটি। ঘোষণার প্রায় সাত মাস অতিবাহিত হলেও এখনও বোনাসের দেড় কোটি টাকা বুঝে পায়নি মেয়েরা। এরমাঝে প্রথমবারের মতো এএফসি নারী এশিয়ান কাপের চূড়ান্ত পর্বে জায়গা করে নিয়েছে ঋতুপর্ণা-আফঈদারা। অনেকেই বলছেন, এটি বাংলাদেশের সামগ্রিক ক্রীড়াঙ্গনের অন্যতম বড় সাফল্য। বাছাইপর্বে ‘সি’ গ্রুপের ম্যাচে র্যাঙ্কিংয়ে ৭৩ ধাপ এগিয়ে থাকা স্বাগতিক মিয়ানমারকে ২-১ গোলে হারিয়ে এই ইতিহাস গড়ে বাংলাদেশের মেয়েরা। যে ইতিহাসে সুযোগ এসেছে প্রথমবারের মতো নারী বিশ্বকাপে অংশ নেয়ার।
নারী এশিয়ান কাপের ইতিহাসে ১৯৭৫ সালে যাত্রা শুরু হলেও এবারই প্রথমবার অংশ নেবে বাংলাদেশ। যা আগামী মার্চে অনুষ্ঠিত হবে অস্ট্রেলিয়ায়। এরই মধ্যে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া, বর্তমান চ্যাম্পিয়ন চীন, রানার্সআপ দক্ষিণ কোরিয়া, এবং তৃতীয় স্থান পাওয়া জাপান ছাড়া কেবল বাংলাদেশ চূড়ান্ত পর্বের জায়গা নিশ্চিত করেছে। বাকি আটটি দল উঠে আসবে বাছাইপর্ব থেকে। ২০২৬ সালের ১ থেকে ২১শে মার্চ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ার সিডনি, গোল্ড কোস্ট এবং পার্থের পাঁচটি ভেন্যুতে আয়োজিত হবে টুর্নামেন্ট। ২৯শে জুলাই সিডনিতে অনুষ্ঠিত হবে গ্রুপ পর্বের ড্র। চূড়ান্ত পর্বে ১২টি দল তিন গ্রুপে ভাগ হয়ে খেলবে। অস্ট্রেলিয়া ‘এ’ গ্রুপে থাকলেও বাকিদের অবস্থান নির্ধারিত হবে ফিফা র্যাঙ্কিংয়ের ভিত্তিতে। সম্ভবত বাংলাদেশ থাকবে চতুর্থ পটে। গ্রুপ পর্ব শেষে প্রতি গ্রুপের শীর্ষ দুই দল এবং তৃতীয় স্থানে থাকা সেরা দুটি দল কোয়ার্টার ফাইনালে উঠবে। এখান থেকেই শুরু হবে বিশ্বকাপের টিকিটের লড়াই। ২০২৬ এশিয়ান কাপ শুধুই একটি টুর্নামেন্ট নয়, এটি ২০২৭ নারী বিশ্বকাপ ও ২০২৮ অলিম্পিকের বাছাইপর্বও। ২০২৭ নারী বিশ্বকাপ হবে ব্রাজিলে, যেখানে এশিয়া থেকে সরাসরি ৬টি দল অংশ নেবে। এশিয়ান কাপের সেমিফাইনালে ওঠা চারটি দল সরাসরি যাবে বিশ্বকাপে। কোয়ার্টার ফাইনালে হেরে যাওয়া চার দল নিজেদের মধ্যে খেলবে প্লে-ইন ম্যাচ। সেখান থেকে জেতা দুটি দলও বিশ্বকাপে যাবে। যারা হারবে, তাদের জন্য থাকবে আন্তঃমহাদেশীয় প্লে-অফের আরেকটি সুযোগ। এছাড়াও, কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠা আটটি দল সুযোগ পাবে ২০২৮ লস অ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিকের বাছাইপর্বে অংশ নেওয়ার। বাছাইয়ে দুই গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন পাবে অলিম্পিকের চূড়ান্ত পর্বে খেলার সুযোগ। এই সুযোগ হাতছাড়া করতে চায় না বাফুফে। তার আগে অবশ্য মেয়েদের বকেয়া বোনাস পরিশোধ করতে চায় সংস্থাটি। নতুন করে পুরস্কার দেয়ারও পরিকল্পনা আছে তাদের। তবে এ নিয়ে সরাসরি কিছু বলতে চাইলেন না বাফুফের নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ। গতকাল তিনি বলেন, ‘মেয়েদের নিয়ে আমাদের নানা পরিকল্পনা আছে। এখন আমরা এশিয়ান লেভেলে খেলবো। বিশ্বকাপ খেলার সুযোগও আছে। সবকিছু নিয়ে কোচের সঙ্গে বসবো। পাশাপাশি মেয়েদের যতো পাওনাদি আছে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত পরিশোধের ব্যবস্থা করবো। মেয়েরা নতুন ইতিহাস করেছে। এজন্য মেয়েদের কিছু করা যায় কিনা তা নিয়েও আমরা আলাপ করবো।’ আগামীকাল তুর্কমেনিস্তানের সঙ্গে গ্রুপের শেষ ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। আগামী সাত জুন দেশে ফিরবে মেয়েরা।