শরীর ও মন
শিশুর মাথা অস্বাভাবিক বড় হলে
ডা.সৈয়দা নাফিসা ইসলাম
১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, শনিবারবড় মাথা মানেই বেশী বুদ্ধি নয়। অনেক সময় বড় মাথাওয়ালা কিন্ত রোগে আক্রান্ত হবার কারণে হতে পারে। তাই আপনার শিশুর মাথা দেখতে অনেক বড় মনে হলে শিশু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।
হাইড্রোফেসালাস কি ?
মস্তিষ্কে পানি জমে মাথা বড় হয়ে যায়, এটিই হাইড্রোফেসালাস। মস্তিষ্কের ভেতর কিছু ছিদ্র পথ আছে যেখান দিয়ে পানি চলাচল করে। যদি কোনো কারণে এই রাস্তা বন্ধ হয়ে যায় তখন চাপ বাড়তে থাকে এবং মাথা বড় হয়ে যায়।
কারণসমূহ
সাধারণত জন্মগতক্রুটি, গর্ভে থাকা অবস্থায় ইনফেকশন, জন্মের সময় মাথায় আঘাতজনিত কারনে মস্তিষ্কের ভিতরে রক্ত জমাট বাধার কারণে টিউমার ও মেনিনজাইটিস হলে।
প্রবনতা
প্রতি ১০০০ জনে ০.২-১ জন এই রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে।
কিভাবে বুঝবেন
মাথা দেখতে অনেক বড়, শিড়দাড়ায় জন্মগত ক্রটি থাকা, উচ্চস্বরে কাঁদা, দেরিতে বসতে বা দাঁড়াতে শেখা, চোখে দেখতে সমস্যা. মাথা ব্যথা, প্রস্রাবে নিয়ন্ত্রন না থাকা।
চিকিৎসা
শিশুর সমস্যা আছে সন্দেহ হলেই শিশু বিশেষজ্ঞ দেখাতে হবে। ওষুধ এবং আপারেশন দুই ধরণের চিকিৎসা আছে। চিকিৎসার দ্রুততা নির্ভর করে অসুখের তীব্রতার উপর। দ্রুত সঠিক চিকিৎসা করা হলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই জটিলতা এড়ানো যায়। তবে এই শিশুদের কেউ কেউ সম্পূর্ণ সুস্থ হয় না। কিছু কিছু সমস্যা নিয়ে শিশুরা দীর্ঘদিন বেঁচে থাকে। সঠিক সময়ে অপারেশন করলে বুদ্ধিমত্তা ঠিক থাকে।
প্রতিরোধ
সম্পূর্ণরূপে প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। তবে সম্ভাবনা কমানোর কিছু উপায় আছে। পরিকল্পিত গর্ভধারণ এবং গর্ভকালীন সময়ে ডাক্তারের পরামর্শ মত নিয়মতান্ত্রিক জীবনযাপন। শিশু জন্মের পরই শিশু বিশেষজ্ঞের মাধ্যমে শিশুকে চেক করানো। এই রোগ ১৫-৩৫ সপ্তাহের মধ্যে ফিটাল আলট্রাসাউন্ডের মাধ্যমে ধরা পড়ে। ফলিক এসিড যেহেতু মেরুদন্ডের জন্মগতক্রুটি প্রতিরোধ করে তাই শিশু গর্ভে আসার তিনমাস আগে থেকে শুরু করে পুরোগর্ভকালীন সময় মাকে ৪০০ গ্রাম ফলিক এসিড খাওয়া উচিৎ। এতে হাইড্রোফেসালাস হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়।
লেখক: কনসালটেন্ট, শিশু বিভাগ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। চেম্বার: (১) ডা. নাফিসা’স চাইল্ড কেয়ার শাহ মখদুম, রাজশাহী। (২) আমানা হাসপাতাল, ঝাউতলী মোড়, লক্ষীপুর, রাজশাহী। মোবাইল-০১৯৮৪১৪৯০৪৯