বাংলারজমিন
বহুল আলোচিত নীলা এবার খুলনা কারাগারে
স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা থেকে
৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, বুধবারএকের পর এক পুরুষকে বিয়ের ফাঁদে ফেলে হাতিয়ে নিয়েছে কোটি কোটি টাকা। নিঃস্ব করেছে বহু পুরুষকে। তবে শেষরক্ষা হয়নি খুলনার বহুল আলোচিত নারী সুলতানা পারভীন নীলা ওরফে বৃষ্টির। ২০২২ সালের ২৬শে সেপ্টেম্বর নীলাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তার আগে ঢাকার ১৪ নম্বর আদালতে হাজির হয়ে প্রতারণার মামলায় জামিন আবেদন করে সে। শুনানি শেষে আদালতের বিচারক মাইনুল হোসেন তাকে জেলে পাঠান। সেই থেকে সে কারাবাস করছিল কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে। এবার তাকে আনা হয়েছে খুলনা কারাগারে। সোমবার সকালে খুলনা জেলা কারাগারের জেলার এনামুল কবির বলেন, একটি চেক ডিজঅনার মামলায় জেরার জন্য নীলাকে রোববার গাজীপুরের কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে খুলনা কারাগারে আনা হয়েছে। মঙ্গলবার খুলনার আদালতে হাজির করা হয় তাকে। সাবেক এক স্বামী এম রহমানের মামলায় কাশিমপুর কারাগারে আটক ছিল নীলা। নীলা নিজে বাদী হয়ে খুলনাতে কয়েকটি মামলা দায়ের করে তার প্রাক্তন স্বামীদের বিরুদ্ধে। দায়েরকৃত সেই মামলাসমূহের মধ্যে একটি চেক ডিজঅনার মামলায় জেরার জন্য তাকে খুলনায় আনা হয়েছে। মামলার বিবাদীপক্ষের আইনজীবী এডভোকেট আশরাফুল ইসলাম বাচ্চু বলেন, নীলাকে মহানগর দায়রা জজ যুগ্ম-২ এর বিচারক মো. মনিরুজ্জামানের আদালতে মঙ্গলবার হাজির করা হয় ।
নীলার সাবেক স্বামীদের ভাষ্য, খুলনা নগরীর সোনাডাঙ্গা আবাসিক এলাকার সুলতানুল আলম বাদলের মেয়ে সুলতানা পারভীন নীলা শারীরিক গঠন ও রূপ-যৌবনকে পুঁজি করে প্রতারণা করতো। বিয়ের নামে ধনাঢ্য ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, চাকরিজীবীদের ফাঁদে ফেলে কোটিপতি বনে গেছে নীলা। যাদের সঙ্গে সম্পত্তি নিয়ে কথা কাটাকাটি হতো তাদের বিরুদ্ধে নির্যাতন-যৌতুক দাবি সংক্রান্ত একাধিক মামলা করতো খুলনার আলোচিত এ নারী। সর্বশেষ তার বিরুদ্ধে সম্পর্কের সূত্র ধরে চেক চুরি করে অপর এক নারীর ব্যাংক হিসাব থেকে ১০ লাখ টাকা উত্তোলনের ঘটনায় মামলা হয়।
একাধিক অভিযোগ ও অনুসন্ধান থেকে জানা গেছে, সুলতানা পারভীন নীলা বিয়ের পরপরই তার স্বামীদের কাছ থেকে দেনমোহরের টাকাসহ নানা কৌশলে বাড়ি-গাড়ি হাতিয়ে নিতো। পরে তালাক নিতো। এটি মূলত তার ব্যবসা।
জানা গেছে, সম্পদশালী ব্যবসায়ী, উচ্চপদস্থ চাকরিজীবী ও প্রবাসী পুরুষদের বিভিন্ন মাধ্যমে টার্গেট করতো নীলা। পরে তাদের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলতো। একটা সময় গিয়ে শারীরিক সম্পর্কে জড়াতো। এরপর থেকেই মূলত শুরু হতো তার দাবি-দাওয়া। এসব দাবির মধ্যে প্রথমেই থাকতো বিয়ে। বিয়ের পর স্বামীর সম্পদ নিজের নামে করে নেয়া। নগদ অর্থ, জমি, গাড়িও নিতো নীলা। পরবর্তীতে স্বামীর সঙ্গে বাক-বিতণ্ডা শুরু করতো। এটি থেকে সে পৌঁছাতো তালাক পর্যন্ত।