বাংলারজমিন
রাণীনগরে ৩০ টাকার সিমেন কিনতে হয় ৫০০ টাকায়
রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি
৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, রবিবারনওগাঁর রাণীনগরে গবাদিপশুর জাত উন্নয়নে গরুর কৃত্রিম প্রজননে ৩০ টাকার সরকারি সিমেন খামারি ও পশুপালনকারীদের প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার দপ্তর থেকে কিনতে হচ্ছে ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকায়। এতে করে প্রতারিত হয়ে অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন স্থানীয় গবাদিপশু পালনকারীরা। অনেকেই অতিরিক্ত দামে সিমেন কিনে প্রজনন করতে না পারায় মান নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। ফলে দুধ, মাংস উৎপাদন এবং জাত উন্নয়নে স্থবির হয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। জানা গেছে, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার পরিসংখ্যান অনুযায়ী রাণীনগরে মোট ১ লাখ ১৫ হাজার ৫৬৩টি গবাদিপশু রয়েছে। এর মধ্যে মাংস উৎপাদনে গবাদিপশু রয়েছে ১৯ হাজার ৭৬৫টি এবং দুধ উৎপাদনে গাভী রয়েছে ৫৯ হাজার ৭৩৮টি। এসব গাভী থেকে জাত উন্নয়নে সরকারিভাবে কৃত্রিম প্রজননে প্রতি বছর প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কাছে সিমেন (বীজের) বরাদ্দ দেয়া হয় ১০ হাজার ৫০০টি। এই সিমেনগুলো পর্যায়ক্রমে উপজেলার ৮ ইউনিয়নে একজন উপ-সহকারী কর্মকর্তা ও ৮ জন মাঠ কর্মীর মাধ্যমে গবাদিপশুকে কৃত্রিম প্রজনন করানো হয়। সরকারিভাবে প্রতিটি ফ্রিজিয়ান এবং শাহীয়াল জাতের বীজ ৩০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। উপজেলার গুয়াতা বাঁকাপাড়া গ্রামের আলম সরদার বলেন, গরুর কৃত্রিম প্রজনন করাতে মাঠকর্মী ৫০০ টাকা নিয়েছে। সেই সিমেনে কোনো কারণে কাজ না হওয়ায় পরের বারে আবার ৫০০ টাকা নিয়েছে। এতে এক গাভীকে কৃত্রিম প্রজননে ১ হাজার টাকা দিতে হয়েছে।
গোনা ইউনিয়নের নান্দাইবাড়ী গ্রামের খামারি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, তার খামারে ছোট-বড় প্রায় ২০টি গরু রয়েছে। গরু প্রজননে সরকারি বীজ নিতে ৫০০ টাকা করে নেয়। বাধ্য হয়ে বেসরকারিভাবে কিছু টাকা কমে প্রজনন করে নিচ্ছি। রাণীনগর উপজেলার বড়গাছা ইউনিয়নের মাঠকর্মী জিল্লুর রহমান বলেন, কৃত্রিম প্রজননে কেন্দ্র থেকে দূরত্বের হিসাবে ৫০০-১০০০ টাকা নিয়ে থাকি। এ ছাড়া নির্ধারিত কেন্দ্রে আসলে ৭০ টাকা নেয়া হয়। আবার অনেক ক্ষেত্রে দুই/একটি গরুকে ফ্রি প্রজননও করে থাকি। রাণীনগর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা কামরুন্নাহার আকতার বলেন, মাঠকর্মীরা প্রতি মাসে সামান্য দুই হাজার টাকা করে সম্মানি পান। তারা অনেকটাই স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করেন। আমাদের নিকট থেকে কর্মীরা সিমেন নিয়ে সরকারি নির্ধারিত দামে প্রতি সিমেন ৩০ টাকা জমা দিয়ে থাকেন। গবাদিপশু নির্ধারিত কেন্দ্রে নিয়ে আসলে ৩০ টাকা করে নেয়ার কথা। এ ছাড়া কেন্দ্রের বাহিরে বা গবাদিপশুর মালিকদের বাড়িতে গেলে কতো টাকা নিতে পারবেন তা জানা নেই আমার।