শেষের পাতা
অবিশ্বাস্য জয় টাইগারদের
ইশতিয়াক পারভেজ
৫ ডিসেম্বর ২০২২, সোমবারহাতে ১ উইকেট, ৬৩ বলে প্রয়োজন ৫১ রান! ভারতের বোলিংয়ের সামনে এমন সমীকরণে জয় কি সম্ভব? তাও ২৪ বল বাকি থাকতে। জরিপ করলে ৯৯ শতাংশের মতামত হবে- না, জয় সম্ভব নয়। কিন্তু মেহেদী হাসান মিরাজ ও মোস্তাফিজুর রহমানের জুটিতে ১ উইকেটে ভারতকে হারিয়ে দেয় বাংলাদেশ! ফুটবল বিশ্বকাপ চলছে তাই ভারতীয় সংবাদকর্মীরা খুব একটা আসেনি এই সিরিজ কাভার করার জন্য। তবে প্রেসবক্সে ছিলেন দিল্লির সংবাদমাধ্যম স্পোর্টস ইয়ারির সংবাদকর্মী মনোজ। এমন একটি জয় দেখে তিনিও বিস্মিত। দৈনিক মানবজমিনকে তিনি বলেন, ‘হাতে একটি উইকেট। ৫০ এর বেশি রান প্রয়োজন। আমরা সবসময় দেখেছি বাংলাদেশ অল্প রান থাকলেও ভারতের বিপক্ষে অস্থির ক্রিকেট খেলে আউট হয়ে যায়। কিন্তু এবার তারা বদলে দিয়েছে তাদের ইতিহাস। আমি এ জয়কে বলবো অবিশ্বাস্য!’ ১৮৭ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই হোঁচট খায় টাইগাররা।
ম্যাচ শেষে অলরাউন্ডার মিরাজ বলেন, ‘আমি দারুণ খুশি যে, দলকে এমন একটা জয় এনে দিতে পেরেছি।’ এর আগে ওয়ানডের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক লিটন দাস ভারতকে টসে জিতে ব্যাট করার আমন্ত্রণ জানান। সাকিব আল হাসান ও ইবাদত হোসেনের দুর্দান্ত বোলিংয়ে রোহিত শর্মার দল অসহায় আত্মসমর্পণ করে। তারা অলআউট হয় মাত্র ১৮৬ রানে। জবাব দিতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি টাইগারদের। ব্যাট করতে নেমে প্রথম বলেই উইকেট বিলিয়ে দিয়েছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। এরপর ১৪ রান করে বিদায় নিলেন এনামুল হক বিজয়ও। ২৯ বল খেলেন তিনি। ভারতীয় পেসার মোহাম্মদ সিরাজের বলে মিড উইকেটে ক্যাচ তুলে দেন ওয়াশিংটন সুন্দরের হাতে।
দলীয় ২৬ রানে ২ উইকেট পড়ার পর দলকে এগিয়ে নেয়ার লক্ষ্যে লড়াই করেন অধিনায়ক লিটন দাস এবং অভিজ্ঞ ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। এরপর লিটন দাস ৪১ রান করে আউট হলে সাকিবের ব্যাটে জয়ের স্বপ্ন দেখে বাংলাদেশ। কিন্তু সাকিব থেকে শুরু করে একের পর এক উইকেট বিলিয়ে দিয়ে দল একধাপ হারের পথে এগিয়ে যায়। এরপর ৮ রানের মধ্যে মাহমুদুল্লাহ, মুশফিকুর রহীম, আফিফ হোসেন, ইবাদত হোসেন ও হাসান মাহমুদকে হারিয়ে হারের দুয়ারে পৌঁছে গিয়েছিল বাংলাদেশ। সেখান থেকে মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে ৫১ রানের জুটিতে দলকে অসাধারণ এক জয় এনে দিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ।
এর আগে ব্যাট হাতে ওপেনার ও অধিনায়ক রোহিত শর্মা ২৭ রান করেন। শিখর ধাওয়ান ও বিরাট কোহলি ১০ রানের কোটা পার হতে পারেননি। শ্রেয়াস আইয়ার করেন ২৪ রান। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৭৩ রানের ইনিংস খেলেন কেএল রাহুল। ওয়াশিংটন সুন্দরের ব্যাট থেকে আসে ১৯ রান। বাংলাদেশের হয়ে সাকিব ৩৬ রানে নিয়েছেন পাঁচ উইকেট। ভারতের বিপক্ষে তৃতীয় স্পিনার হিসেবে পাঁচ উইকেট নিয়েছেন তিনি। দ্বিতীয় ওয়ানডে খেলতে নামা ইবাদত ৪৭ রানে চার উইকেট নিয়েছেন।