ঢাকা, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

বিশ্বজমিন

সৌদি আরবে ধীর ও মসৃণ গতিতে চলছে ক্ষমতা হস্তান্তর

মানবজমিন ডেস্ক

(১ বছর আগে) ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২, বৃহস্পতিবার, ৪:৩৩ অপরাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ২:৫০ অপরাহ্ন

mzamin

ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান। একই সঙ্গে তিনি সৌদি আরবের অর্থনীতি, প্রতিরক্ষা, তেল এবং আভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিষয়ক দায়িত্ব পালন করেন। তার ওপর মঙ্গলবার এক ডিক্রিবলে তার পিতা বাদশা সালমান তাকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেছেন। ফলে ক্রাউন প্রিন্স খেতাবের চেয়ে এখন বড় করে দেখা উচিত তার এই পদকে। আগে এই পদে দায়িত্বে ছিলেন বাদশা সালমান নিজে। কিন্তু এখন তার বয়স ৮৬ বছর। তিনি নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন। মঙ্গলবার সেই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি ক্রাউন প্রিন্সকে নিয়োগ দিয়েছেন। আল জাজিরা লিখেছে- একে দেখা হচ্ছে ধীরে, তবে মসৃণগতিতে সৌদি আরবে ক্ষমতা হস্তান্তর হিসেবে। কি কারণে তাকে এই পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে ডিক্রিতে তা উল্লেখ করা হয়নি।

বিজ্ঞাপন
তবে রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা এসপিএ বলেছে, এখনও রাষ্ট্রের প্রধান বাদশা সালমান। তিনিই মন্ত্রীপরিষদের মিটিংয়ে অব্যাহতভাবে উপস্থিত থাকবেন। আল জাজিরা সহ মধ্যপ্রাচ্যের অনেক মিডিয়া এ ঘটনাকে ফলাও করে প্রকাশ করেছে। 

বিশ্বে সবচেয়ে বেশি তেল রপ্তানিকারক দেশ সৌদি আরবের ক্ষমতার মূলে এরই মধ্যে উঠে এসেছেন প্রিন্স মোহাম্মদ। আনুষ্ঠানিকভাবে তাকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করায় সরকারে তার ভূমিকা বৃদ্ধি পেলো। এর আগে তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন উপপ্রধানমন্ত্রী এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে। তবে প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে তার স্থানে নতুন করে বসানো হয়েছে তার ছোটভাই খালিদ বিন সালমানকে। তিনি এর আগে ছিলেন উপ-প্রতিরক্ষামন্ত্রী। মঙ্গলবার রাজকীয় ডিক্রিতে মন্ত্রীপরিষদে আরও কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী করা হয়েছে প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান আল সাউদকে। অর্থমন্ত্রী বানানো হয়েছে মোহাম্মদ আল জাদানকে। বিনিয়োগ মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে খালিদ আল ফালিহ’কে। 

২০১৬ সালের এপ্রিলে প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান ভিশন ২০৩০ উপস্থাপন করেন। এতে সৌদি আরবের ভবিষ্যত তুলে ধরা হয়। তাতে সৌদি আরবকে আরব এবং ইসলামী বিশ্বের প্রাণকেন্দ্র, বিনিয়োগের পাওয়ারহাউজ এবং এমন একটি কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার কথা বলা হয়েছে- যা তিনটি মহাদেশকে সংযুক্ত করবে। এই উদ্যোগের দৃষ্টিভঙ্গি হলো অর্থনীতিকে উন্মুক্ত করে দেয়া এবং বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেয়া। একই সঙ্গে এর লক্ষ্য হলো তেলের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে আনা। ২০৩০ সালের মধ্যে এই উদ্যোগে একটি ই-গভর্নমেন্ট সিস্টেম প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য রয়েছে। 

২০১৭ সালে ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান সিংহাসনের উত্তরাধিকারী হন। এর আগে তিনি ছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী। প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে তার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ ছিল ইয়েমেনে হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে সৌদি আরব নেতৃত্বাধীন জোটের অপারেশন ডিসিসিভ স্টর্ম। ২০১৫ সালের মার্চে এই অভিযান শুরু হয়। আঞ্চলিক প্রতিপক্ষ ইরানের প্রভাব কাটিয়ে উঠতে তিনি নিয়েছেন অধিক আগ্রাসী পররাষ্ট্রনীতি। তিনি ক্ষমতায় এসে মৌলিকভাবেই বদলে দিয়েছেন সৌদি আরবকে। তেলের ওপর নির্ভরতা থেকে অর্থনীতিতে এনেছেন বৈচিত্র। নারীদের গাড়ি চালানোর অধিকার দিয়েছেন। 

সংস্কারমূলক কর্মকাণ্ডে তিনি ভিন্নমতাবলম্বী, অধিকারকর্মী, রাজপরিবারের ভিন্নমতাবলম্বী, নারী অধিকারকর্মী এবং ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক দমনপীড়ন চালিয়েছেন। অনেককে জেলে পাঠিয়েছেন। ২০১৭ সালের নভেম্বরে চারজন মন্ত্রী, ১১ জন প্রিন্স এবং বেশ কিছু উচ্চ পদস্থ উদ্যোক্তাকে মোহাম্মদ বিন সালমানের নির্দেশে আটক করা হয়। দুর্নীতি বিরোধী বলে একে বৈধতা দেয়া হয়। সরাসরি তার প্রতিদ্বন্দ্বী এমন অনেক ব্যক্তিকে টার্গেট করে তিনি যে পদক্ষেপ নিয়েছেন, তাতে সৌদি আরবে তার ক্ষমতা সুসংহত হয়েছে। এ বছরের শুরুতে সৌদি আরবে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে স্বাগত জানান। ২০১৮ সালে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি এজেন্টরা ওয়াশিংটন পোস্টের সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে নৃশংসভাবে হত্যা করে। এর ফলে সৌদি আরবের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের দূরত্ব সৃষ্টি হয়। জো বাইডেনের সফরের মাধ্যমে তা কমিয়ে আনার চেষ্টা করেছেন মোহাম্মদ বিন সালমান।  

বিশ্বজমিন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

বিশ্বজমিন সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status