শেষের পাতা
‘দাবি আদায় না করে বিএনপির নেতাকর্মীরা ঘরে ফিরবে না’
স্টাফ রিপোর্টার
২২ সেপ্টেম্বর ২০২২, বৃহস্পতিবার
জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে না দেয়া পর্যন্ত বিএনপি’র নেতাকর্মীরা ঘরে ফিরে যাবে না বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। গতকাল বিকালে রাজধানীর মিরপুর ৬ নং সেকশনের বি ব্লকের বায়তুল মোশাররফ জামে মসজিদের সামনে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। সারা দেশে দলের কর্মসূচিতে হামলা এবং তিন কর্মী নিহতের প্রতিবাদে এ সমাবেশের আয়োজন করে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি। ঢাকা মহানগরীতে জোনভিত্তিক ১৬টি স্থানে সমাবেশের অংশ হিসেবে ১১তম দিনে গতকাল মিরপুরে সমাবেশ করে দলটি। সমাবেশকে কেন্দ্র করে দুপুরের আগ থেকেই মিরপুর ৬নং এলাকার বিভিন্ন গলিতে অবস্থান নেয় বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন ব্যানার সম্বলিত মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে আসেন তারা। একপর্যায়ে সমাবেশস্থলে কয়েক হাজার নেতাকর্মী জড়ো হন। এদিকে সব ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবিলায় সতর্ক অবস্থানে ছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সমাবেশস্থলের আশেপাশের এলাকায় বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এ ছাড়া সতর্ক অবস্থানে ছিল সাদা পোশাকের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
আন্দোলনে যারা রক্ত দিয়েছেন তা বৃথা যাবে না। রক্ত দিয়েই গণতন্ত্র উদ্ধার করবো। বিএনপি’র এ নেতা বলেন, আন্তর্জাতিক বিশ্বকে আহ্বান জানাই গণতন্ত্র উদ্ধারে পাশে থাকুন। আমাদের ক্ষমতা এনে দিতে হবে না। কে ক্ষমতায় আসবে তা জনগণই ঠিক করবে। ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করেই বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেবে। নিশ্চিন্তে ভোট দেয়ার প্রস্তুতি নিন। রাজপথে নামুন, ওরা পরাজিত হবেই। জনগণ ভোটের মাধ্যমে যাদের দায়িত্ব দেবে তারাই দেশ চালাবে। যারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয় তাদের কাছে কোনো দাবি করে লাভ নেই। আজ জনগণের একটাই দাবি, সরকারের পদত্যাগ। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি দিয়ে কিছু হবে না। সবার হাতে মোটা লাঠি থাকতে হবে। তবে কাউকে আঘাত করার জন্য নয়, নিজেদের আত্মরক্ষার জন্য। আঘাত আসলে পাল্টা আঘাত করতে হবে। ওবায়দুল কাদেরকে উদ্দেশ্য করে গয়েশ্বর বলেন, বিএনপি’র নেতাকর্মীদের ওপর যারা হামলা করেছে সেসব অপরাধীকে জনসম্মুখে হাজির করেন। তা না হলে জনগণের কাঠগড়ায় আপনাদের বিচার হবেই। পাল্টা আঘাত শুরু করলে পালানোর জায়গা পাবেন না। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে রাজনীতি ছেড়ে দেয়ার যে কথা আগে বলেছিলেন, সামনে আবার সেইদিন আসছে। তিনি বলেন, লড়াই করে দেশ স্বাধীন করেছি, কাউকে আর স্বৈরাচারী কায়দায় দেশ শাসন করতে দেবো না। আমাদের এই আন্দোলন ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নয়, এই আন্দোলন জনগণকে শৃঙ্খলমুক্ত করার আন্দোলন।
প্রশাসনের উদ্দেশ্যে বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, এখনো সময় আছে জনগণের কাতারে আসেন, সব অন্যায় মাফ হয়ে যাবে। ভয় পাবেন না, ভুল বোঝানো হচ্ছে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে আপনাদের চাকরি চলে যাবে। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে কারও চাকরি যাবে না। নিরপেক্ষ থাকুন, নইলে সরে দাঁড়ান। তিনি বলেন, এই সরকারের অধীনে যারা নির্বাচন করতে চাইবে বা ভাগ-বাটোয়ারা নির্বাচন করতে চায়, সেটা আমার দলের হোক বা অন্য কোনো দলের হোক। রাজপথে তাদের প্রতিহত করতে হবে। আওয়ামী লীগের অধীনে নির্বাচন হবে না জানিয়ে গয়েশ্বর বলেন, এক কূটনীতিক (ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের বিদায়ী হাইকমিশনার) যাওয়ার সময় বলে গেছেন যে তারা ব্যক্তির পক্ষে নয়। তারা দেশের পক্ষে, জনগণের পক্ষে। এ সময় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) নিয়েও কঠোর সমালোচনা করেন বিএনপি’র এই নেতা।
বলেন, লুটপাট করতেই এই প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। কয়েকজনের পকেট ভারী হবে। সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি’র আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান বলেন, শান্তিপূর্ণ সমাবেশ বানচাল করার জন্য অনেক কারসাজি করা হয়েছে, আক্রমণ করা হয়েছে। কারণ বিএনপি জনগণের কল্যানে কথা বলে। আজকে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নেই। মিডিয়ার মুখে তালা মারতে চায়। এই স্বাধীন দেশটাকে অন্য জায়গায় বিক্রি করে দেয়ার ষড়যন্ত্র চলছে। এবার রাজপথে ফয়সালা হবে। আন্দোলনের মুখে সরকারের বিদায় নিতে হবে। বুক পেতে দেবো, রক্ত দেবো তবুও এই সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে দিবো না। তাই প্রশাসনকে বলবো নিরপেক্ষ হয়ে যান। না পারলে সরে যান। ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি’র সদস্য সচিব আমিনুল হকের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে সমাবেশে বিএনপি’র চেয়ারম্যান উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, যুব মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, কেন্দ্রীয় নেতা নাজিমুদ্দিন আলম, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি’র সদস্য তাবিথ আউয়াল প্রমুখ বক্তৃতা করেন।
মন্তব্য করুন
শেষের পাতা থেকে আরও পড়ুন

জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]