বিশ্বজমিন
অবৈধ অভিবাসন ঠেকাতে আসাম ও মিজোরামের কঠোর পদক্ষেপ
মানবজমিন ডেস্ক
(৬ ঘন্টা আগে) ২৯ জুন ২০২৫, রবিবার, ১২:২৩ অপরাহ্ন

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসাম ও মিজোরাম নতুন করে কঠোর অভিবাসন বিষয়ক পদক্ষেপ গ্রহণের ঘোষণা দিয়েছে। এর উদ্দেশ্য বাংলাদেশ ও মিয়ানমার থেকে যাওয়া অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করা ও নিয়ন্ত্রণে আনা। দুই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা স্পষ্ট করে বলেছেন- তারা এখন থেকে শুধু স্থানীয় নয়, বরং জাতীয় নিরাপত্তার দিক বিবেচনা করেও এই নীতি কার্যকর করবেন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আউটলুক ইন্ডিয়া। আসাম সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এখন থেকে নতুন কোনো প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিককে আধার কার্ড দেওয়ার ক্ষমতা শুধু জেলা প্রশাসকের অধীনে থাকবে। মুখ্যমন্ত্রী হিমান্ত বিশ্ব শর্মা জানান, এ সিদ্ধান্ত রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে গৃহীত হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা ইতিমধ্যেই ১০০ ভাগ আধার কভারেজ অর্জন করেছি। তাই এখন যদি কেউ আধার কার্ড চায়, আমরা ধরে নেব তারা নতুনভাবে আসছে। আর যদি কেউ বাংলাদেশ থেকে আসে, তাকে ঠেকানো অনেক সহজ হবে। তিনি আরও বলেন, এই নীতির ফলে বাংলাদেশিদের আধার কার্ড পাওয়া কঠিন হবে এবং তাদের চিহ্নিত করে ফিরিয়ে দেওয়া সহজ হবে। আসাম সরকার ১৯৫০ সালের ইমিগ্রেন্টস (এক্সপালসন ফ্রম আসাম) অ্যাক্ট অনুযায়ী অভিবাসীদের দ্রুত বহিষ্কারের প্রস্তুতি নিচ্ছে। আসাম চুক্তি (১৯৮৫) অনুযায়ী, ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চের পর যেসব ব্যক্তি বাংলাদেশ থেকে ভারতে গিয়েছেন, তাদের অবৈধ অভিবাসী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ২০২৪ সালে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট এই সাংবিধানিক ধারা বৈধ বলে রায় দিয়েছে। ফলে এ উদ্যোগে বেশির ভাগই টার্গেট হচ্ছেন শ্রমজীবী জনগণ, যারা বারবার ঠিকানা পরিবর্তন করেন।
মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী লালদুহোমা বলেছেন, মিয়ানমারের যেসব নাগরিক যুদ্ধাবস্থার সুযোগে প্রায়ই সীমান্ত পারাপার করছে, তাদের পরিচয়পত্র জব্দ করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। তাদের মধ্যে অনেকেই শৃঙ্খলাবদ্ধ। তবে কিছু লোক সংকটের সুযোগ নিচ্ছে। তিনি আরও জানান, মিয়ানমার থেকে যাওয়া শরণার্থীদের বায়োমেট্রিক ডেটা সংগ্রহের পরিকল্পনাও গ্রহণ করা হয়েছে। এই অবস্থান কেন্দ্রীয় সরকারের সাম্প্রতিক নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে, যেখানে সব রাজ্যকে বলা হয়েছে অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসীদের আটক ও ফেরত পাঠাতে।
এই কঠোর পদক্ষেপগুলো যদিও অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা রক্ষার স্বার্থে গৃহীত হচ্ছে বলে দাবি করা হচ্ছে, তবে এর বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগও উঠেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বহু অভিবাসী রাজনৈতিক ও ধর্মীয় নিপীড়নের কারণে সীমান্ত পাড়ি দিচ্ছেন। বিচার না করেই ‘বিদেশি’ ঘোষণা করা হচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক মানবিক আইন অনুযায়ী প্রশ্নবিদ্ধ।