খেলা
টেস্টে বাংলাদেশের ২৫ বছর উদ্যাপন করলো বিসিবি
স্পোর্টস রিপোর্টার
২৭ জুন ২০২৫, শুক্রবার
২০০০ সালের ২৬শে জুন, লন্ডনে অনুষ্ঠিত আইসিসি’র বোর্ড সভায় ১০ নম্বর দেশ হিসেবে টেস্ট খেলার মর্যাদা লাভ করে বাংলাদেশ। এরপর ১০ই নভেম্বর জাতীয় স্টেডিয়ামে প্রথম টেস্ট খেলতে নামে টাইগাররা। ঢাকায় বাংলাদেশের প্রথম টেস্টের প্রতিপক্ষ ছিল ভারত। টেস্ট মর্যাদা প্রাপ্তির দিন হিসেবে একে একে কেটে গেছে ২৫টি বছর। দীর্ঘ ২৫ বছরে ১৩৯টি টেস্ট এরইমধ্যে খেলে ফেলেছে বাংলাদেশ। কলোম্বোতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে যথন ১৪০তম টেস্ট খেলছেন শান্ত-লিটনরা, ঠিক তখনই টেস্ট ক্রিটেকের রজতজয়ন্তী উদযাপন করলো বাংলাদেশ। গতকাল মিরপুরের শেরে বাংলা স্টেডিয়ামের মিডিয়া প্লাজায় এক আনন্দ উৎসব অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিসিবি। অনুষ্ঠান শুরু হয় বিকাল ৪টায়, চলে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিসিবি সভাপতি মো. আমিনুল ইসলাম বুলবুল। অনুষ্ঠানে অভিষেক টেস্ট দলের সদস্যদের গায়ে জড়িয়ে দেয়া হয় স্মারক ব্লেজার ও ক্যাপ। পরে সংক্ষিপ্ত স্মৃতিচারণ করেন ক্রিকেটাররা। এরপর অভিষেক টেস্টের ক্রিকেটারদের নিয়ে কাটা হয় ২৫ পাউন্ড ওজনের বিশাল এক কেক। বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুলকে কেক খাইয়ে দেন ক্রীড়া উপদেষ্টা। এভাবেই বাংলাদেশের টেস্ট মর্যাদা প্রাপ্তির ২৫ বছর উদযাপন হলো মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামের নর্থ প্লাজায়।
২০০০ সালের ১০ই নভেম্বর দেশের ক্রীড়াকেন্দ্র ঐতিহাসিক ঢাকা স্টেডিয়ামে ভারত অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলীর সঙ্গে নাঈমুর রহমান দুর্জয়ের টসের মধ্য দিয়ে সূচিত হয় টেস্ট খেলুড়ে জাতি হিসেবে বাংলাদেশের আনুষ্ঠানিক যাত্রা। পুরো দেশ ও জাতির স্বপ্ন পূরনের সারথী হন ১১ ক্রিকেট যোদ্ধা- শাহরিয়ার হোসেন বিদ্যুৎ, মেহরাব হোসেন অপি, হাবিবুল বাশার সুমন, আমিনুল ইসলাম বুলবুল, আকরাম খান, নাঈমুর রহমান দুর্জয় (অধিনায়ক), আল শাহরিয়ার রোকন, খালেদ মাসুদ পাইলট, মোহাম্মদ রফিক, হাসিবুল হোসেন শান্ত ও বিকাশ রঞ্জন দাস (পরবর্তীতে ধর্মান্তরিত মাহমুদুল হাসান রানা)। এই ১১ জনের মধ্যে গতকাল উপস্থিত হতে পারেননি অধিনায়ক নাইমুর রহমান দুর্জয়। খেলোয়াড়ি ক্যারিয়ার শেষে বিসিবি’র পরিচালক ছিলেন দুর্জয়, হয়েছিলেন সংসদ সদস্যও। তবে গত বছরের ৫ই আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর আড়ালে চলে গিয়েছেন তিনি। দাওয়াত পাওয়ার পরেও তিনি উপস্থিত ছিলেন না এই টেস্ট ক্রিকেটের রজতজয়ন্তী উদযাপনের এই অনুষ্ঠানে। আর ব্যক্তিগত কারণে দেশের বাইরে থাকায় উপস্থিত ছিলেন না আকরাম খান, খালেদ মাসুদ পাইলট, আল শাহারিয়ার রোকন ও মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড এই দিনটাকে বিশেষভাবে পালন করার চেষ্টা করেছে। আরও বেশ কয়েকদিন আগে থেকে ‘বাংলাদেশ, সেলিব্রেটিং ২৫ ইয়ার ইন টেস্ট ক্রিকেট’ শিরোনামে বিভাগীয় শহরগুলোতে নানা আয়োজনে রজতজয়ন্তী উদযাপন করে বিসিবি। টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার মাইলফলকের দিনটাকে স্মরণীয় করে রাখতে কেন্দ্রীয় আয়োজন রাখা হয় হোম অব ক্রিকেট, মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য বিসিবি সভাপতি এবং বাংলাদেশের অভিষেক টেস্টের অন্যতম সদস্য ও প্রথম সেঞ্চুরিয়ান আমিনুল ইসলাম বুলবুল বলেন,‘আমরা ভাগ্যবান ছিলাম, প্রথম টেস্টটা খেলেছিলাম।’ প্রধান অতিথির বক্তব্যে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া সারা দেশে ক্রিকেট ছড়িয়ে দিতে দেশের ১০০ স্কুলে সিনথেটিক পিচ তৈরি করার ঘোষণা দেন।
সবশেষ জিম্বাবুয়ে সিরিজে ফাইফার পাওয়ার পর দেশের কোনো স্টেডিয়াম অনার্স বোর্ড না থাকায় হতাশা প্রকাশ করেছিলের মেহেদী হাসান মিরাজ। সেই সঙ্গে স্টেডিয়ামে অনার্স বোর্ড তৈরির জন্য বিসিবিকে আহ্বান জানিয়েছিলেন তিনি। মিরাজের সেই কথা শুনেছেন নতুন সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল। প্রথমবারের মতো দেশে অনার্স বোর্ড চালু করেছেন তিনি। শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের নর্থ প্লাজায় টেস্ট ক্রিটেকের রজতজয়ন্তীর সংবর্ধনা শেষে অনার্স বোর্ডের উদ্বোধন করেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।