খেলা
সিমন্সের আশা-হতাশা
স্পোর্টস রিপোর্টার, কলম্বো শ্রীলঙ্কা থেকে
২৭ জুন ২০২৫, শুক্রবার
কলম্বো টেস্টে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার টপ অর্ডারের ব্যাটিংই ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ করতে চলেছে। ওপেনিং জুটিতে পাথুম নিশাঙ্কা ও লাহিরু উদারা ৮৮ রান করে দলকে একটি মজবুত শুরু এনে দেন। নিশাঙ্কা ১৪৬ রানের অপরাজিত ইনিংসটা ছিল অসাধারণ। তিনি ধৈর্য, নিয়ন্ত্রণ এবং প্রয়োজনে আক্রমণাত্মক মনোভাবের মিশ্রনে দলকে পথ দেখান। তিনি এক প্রান্ত ধরে রেখে বড় স্কোর গড়েছেন এবং দলের জন্য একটি বিশাল লিড নেওয়ার পথ তৈরি করেছেন। তার এই ইনিংসটি টেস্ট ক্রিকেটে একজন ওপেনারের আদর্শ ব্যাটিংয়ের উদাহরণ। ওপেনিং জুটির পর মিডল অর্ডারও দারুণ পারফর্ম করেছে। নিশাঙ্কার সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেটে দিনেশ চান্ডিমাল ১৯৪ রানের বিশাল জুটি গড়েন। শ্রীলঙ্কার টপ অর্ডার ছিল অত্যন্ত সুসংগঠিত এবং কার্যকর। সেই তুলনায় বাংলাদেশ দেখেছে বিপরীত চিত্র। ওপেনার এনামুল হক বিজয় ১০ বল খেলে আউট হয়েছেন কোনো রান না করেই। দুই বার জীবন পেয়েছেন তাতেও দলের জন্য অবদান রাখতে ব্যর্থ। আরেক ওপেনার সাদমান ইসলাম ৪৭ রান করে আউট হন। আর মিডল অর্ডারের ব্যর্থতা স্কোর বোর্ডে হাহাকারে শেষ হয়েছে প্রথম ইনিংস। শুধু কি তাই! লঙ্কানদের মাত্র দুই উইকেট নিতে পেরেছে বোলাররা। দলের প্রধান কোচ ফিল সিমন্স ভীষণ হতাশ। অবশ্য আশায় বুকও বেঁধেছেন তিনি। তার বিশ্বাস টাইগার বোলাররা তৃতীয় দিন ঘুরে দাঁড়াবে। তিনি বলেন, ‘আমরা আগামীকাল ফিরে আসব, উইকেটের আচরণ মূল্যায়ন করব এবং নিশ্চিত করব যে আমরা সঠিক জায়গায় শুরু করছি, আজকের (দ্বিতীয় দিন) সকালের মতো নয়, বরং আরও ভালো এবং উইকেট নেওয়ার অবস্থানে নিজেদের রাখব।’
কলম্বো টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে বাংলাদেশ দলের প্রধান কোচ ফিল সিমন্স ম্যাচ পরিস্থিতি নিয়ে তার মূল্যায়ন তুলে ধরেছেন। তার মতে, দ্বিতীয় দিনটি বাংলাদেশের জন্য কঠিন ছিল, কারণ উইকেট ব্যাটিংয়ের জন্য অনেক সহজ হয়ে গিয়েছিল এবং বোলাররা উইকেট নিতে সংগ্রাম করেছেন। তিনি মনে করেন, উইকেট প্রথম দিনের চেয়ে দ্বিতীয় দিনে অনেক ভালো হয়ে গিয়েছিল। প্রথম দিনে যেখানে উইকেট কিছুটা আঠালো এবং দুই গতির ছিল, দ্বিতীয় দিনে তা ব্যাটিংয়ের জন্য মসৃণ হয়ে ওঠে। এর ফলে ব্যাটসম্যানদের জন্য রান করা সহজ হয় এবং গতকালের মতো স্পিনও উইকেটে ছিল না। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি এটি টেস্ট ক্রিকেটের একটি কঠিন দিন ছিল। উইকেট অনেক সহজ হয়ে গেছে। আজ ব্যাট করাটা চমৎকার ছিল। উইকেট পেতে আমরা সংগ্রাম করেছি, যা একটি ভালো পিচে প্রত্যাশিত, তাই বোলারদের জন্য এটি কঠিন দিন ছিল।’
অন্যদিকে দিকে দলের ব্যাটিং ব্যার্থতা নিয়ে বেশ হতাশ সিমন্স। কোচ মনে করেন, বাংলাদেশ প্রথম দিনে বড় জুটি গড়তে ব্যর্থ হওয়ায় দ্বিতীয় দিনে মাত্র দুই-তিনটি উইকেট হাতে নিয়ে মাঠে নামে, যা তাদের জন্য চাপ সৃষ্টি করে। তিনি বলেন, ‘আমরা যেখানে ভুল করেছি তা হলো গতকাল বড় জুটি গড়তে না পারা। ফলস্বরূপ, আজ আমরা মাত্র দুই-তিনটি উইকেট হাতে নিয়ে মাঠে নেমেছিলাম। এটি আমাদের ব্যাটিং এবং বড় জুটি গড়তে ব্যর্থতার ফল।’ লঙ্কান ওপেনার নিশাঙ্কার কাছ থেকে শেখার আছে টাইগারদের। তার কাছ থেকে ব্যাটসম্যানদের শিক্ষা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে সিমন্স। তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি নিশাঙ্কা কতটা ভালো ব্যাট করেছেন, আমরা তা নোট করেছি এবং দ্বিতীয় ইনিংসে আমরা বড় রান করার লক্ষ্যে মাঠে নামব।’