কাবরেরার পদত্যাগ দাবি করলেন বাফুফে’র এক সদস্য

 এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে জাতীয় স্টেডিয়ামে সিঙ্গাপুরের কাছে ২-১ গোলে হারের পর কোচ হাভিয়ের কাবরেরাকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন সাবেক ফুটবলাররা। টানা ব্যর্থতার কারণে তাকে আর কোচ হিসেবে চাইছেন না ফুটবল কর্তারাও। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) থেকে যদিও কাবরেরার ভবিষ্যৎ নিয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। গতকাল রাজধানীর রাওয়া ক্লাবে গণমাধ্যমের সঙ্গে মতবিনিময় করেন বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল ও কমিটির সদস্যরা। সিঙ্গাপুর ম্যাচের ভুল ত্রুটি আর আগামী ৬ মাসের কর্ম পরিকল্পনা নিয়েই বাফুফে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। সেখানেই কাবরেরার পদত্যাগ চেয়েছেন বাফুফে সদস্য ও জাতীয় দল কমিটির সদস্য শাখাওয়াত হোসেন ভূঁইয়া শাহীন। বাফুফের গতকালের এই আয়োজন ছিল মহাখালীর রাওয়া কমপ্লেক্সে। মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন ফেডারেশনের নির্বাহী কমিটির ১৪ সদস্য। এই আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য ছিল, আগামী ছয় মাসের পরিকল্পনা ও কার্যক্রম সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরা। ফেডারেশনের বেশিরভাগ কমিটির প্রধানেরা নিজেদের দায়িত্বসংক্রান্ত পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন। তবে আয়োজন জুড়েই ছিল পূর্বপরিচিত ছকের পুনরাবৃত্তি। সিঙ্গাপুর ম্যাচে টিকিট এবং দর্শক অব্যবস্থাপনাসহ বিভিন্ন অব্যবস্থাপনা থেকে শিক্ষা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সভাপতি তাবিথ আউয়াল। তবে বাফুফে’র আগামী ছয় মাসের কার্যক্রমে কোনো উল্লেখযোগ্য নতুন ঘোষণা বা ভিন্নমাত্রার উদ্যোগ তেমনভাবে উঠে আসেনি। একপর্যায়ে মঞ্চে মাইক্রোফোন হাতে পান বাফুফের নির্বাহী সদস্য সাখাওয়াত হোসেন ভূঁইয়া শাহিন। তাকে আহ্বান জানানো হয়েছিল মূলত বাফুফের অভ্যন্তরীণ অডিট ও সরকারি সম্পর্ক বিষয়ে আলোচনার জন্য। কিন্তু তিনি সরাসরি সে প্রসঙ্গে যাননি। বরং অডিট বা প্রশাসনিক প্রস্তাবের গণ্ডি ভেঙে তিনি বিস্ফোরক এক দাবি তোলেন। শাহিন বলেন, ‘আমার এজেন্ডা অডিট নয়। আমার একমাত্র এজেন্ডা জাতীয় দল। এই কমিটির একজন সদস্য হিসেবে স্পষ্ট করে বলছি, আমি কাবরেরার পদত্যাগ চাই। এটা ১৮ কোটি মানুষের দাবি। আমি ১৮ কোটি মানুষকে মুক্ত করতে চাই।’ ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে বাংলাদেশের কোচ হিসেবে আছেন কাবরেরা। বাংলাদেশ জাতীয় দলে সবচেয়ে দীর্ঘ সময় নিয়োগপ্রাপ্ত বিদেশি কোচ তিনি। কাবরেরার সঙ্গে বাফুফে’র চুক্তির মেয়াদ এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের শেষ ম্যাচ পর্যন্ত। এর মানে ২০২৬ সালের এপ্রিল পর্যন্ত। এখন তাকে বরখাস্ত করলে বাড়তি জরিমানা দিতে হবে বাফুফেকে। বাফুফে সূত্রে জানা গেছে, আপাতত কাবরেরাকে বরখাস্ত করছে না বাফুফে। তবে জাতীয় দল কমিটির পরবর্তী সভায় সিঙ্গাপুর ম্যাচ হারের কারণ জানতে চাওয়া হবে এই স্প্যানিশ কোচের কাছে। কাবরেরার পদত্যাগ দাবি করে বাফুফে সদস্যের দেওয়া বক্তব্য প্রসঙ্গে সভাপতি তাবিথ আউয়াল নিয়েছেন সতর্ক অবস্থান। তিনি বলেন, ‘বিষয়টা নিয়ে আমরা নিজেদের মধ্যে কথা বলবো। কোচের কাজের পর্যালোচনা হবে। সেটা হওয়ার পর কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রয়োজন হলে নেওয়া হবে। তার আগ পর্যন্ত যেভাবে চলছে সেভাবে চলবে।’ ১০ জুন সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচ শেষে পরদিনই স্পেনে ছুটিতে চলে গেছেন কাবরেরা। ম্যাচের আগে কয়েক দিন দলের সঙ্গে থাকা ছাড়া বেশির ভাগ সময় তিনি ছুটিতেই থাকেন। ২০২২ সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশ জাতীয় দলের হেড কোচ হিসেবে দায়িত্ব নেন কাবরেরা। তার অধীনে বাংলাদেশ দল ৩৩টি আন্তর্জাতিক ম্যাচে অংশ নিয়ে জিতেছে মাত্র ৯টিতে। সবশেষ সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে তার ভুল পরিকল্পনায় হেরে যায় বাংলাদেশ।