রেকর্ড দামে রিয়াল মাদ্রিদে আর্জেন্টাইন তরুণ

আর্জেন্টিনার সর্বকনিষ্ঠ ফুটবলার হিসেবে গত সপ্তাহেই অভিষেক হয়েছে ফ্রাঙ্কো মাস্তানতুয়ানোর। চিলির বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে বদলি হিসেবে খেলার পর রিলিজ ক্লজের রেকর্ড দামে এই মিডফিল্ডারকে দলে টেনেছে রিয়াল মাদ্রিদ। আর্জেন্টাইন ক্লাব রিভার প্লেটের কাছ থেকে এই ১৭ বছর বয়সী প্রতিভাকে কেনার খবর শুক্রবার নিজস্ব ওয়েবসাইটে জানায় স্প্যানিশ জায়ান্ট ক্লাবটি। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে রিভার প্লেটের ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতা হিসেবে রেকর্ড গড়ার পর সবার নজরে চলে আসেন মাস্তানতুয়ানো। এরই মধ্যে ইউরোপের বড় বড় ক্লাবগুলো তাকে পেতে চেষ্টা চালায়। যদিও লস ব্লাঙ্কোসরা নাকি তার ওপর দুই বছর ধরেই নজর রাখছিল। আনহেল ডি মারিয়ার (২০১০) পর রিয়ালে নাম লেখানো প্রথম আর্জেন্টাইন ফুটবলার বনে গেলেন মাস্তানতুয়ানো। ট্রান্সফার ফি’র চুক্তির টাকার অঙ্কটা রিয়াল না জানালেও রিভার প্লেট ঠিকই জানিয়ে দিয়েছে। তাদের বিবৃতি বলা হয়েছে, চুক্তিটি ৬ কোটি ৩২ লাখ ইউরোতে সম্পন্ন হয়েছে, যার মধ্যে ৪ কোটি ৫০ লাখ সরাসরি ঢুকছে রিভার প্লেটের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে। কেননা, এটি মাস্তানতুয়ানোর রিলিজ ক্লজই ছিল। আর্জেন্টাইনদের মধ্যে এত দামে এর আগে আর কেউ দলদবদল করেননি। বাকি অর্থ বিভিন্ন কর, ফুটবলার অ্যাসোসিয়েশন, এএফএ ফান্ড ও অন্যান্য ফি হিসেবে খরচ হচ্ছে। অল হোয়াইটদের সঙ্গে তার চুক্তি ২০৩১ পর্যন্ত। জানা গেছে, প্রতি বছর তার নেট বেতন ধার্য হবে ৩৫ লাখ ইউরো। আর এই ১৭ বছর বয়সী আলবিসেলেস্তেকে ধরে রাখতে রিয়াল তার রিলিজ ক্লজ রেখেছে ১০০ কোটি ইউরো! আর্জেন্টাইন হিসেবে একই ক্লাব থেকে এর আগের সর্বোচ্চ দামের দলবদল ছিল এঞ্জো ফার্নান্দেজের। পর্তুগিজ ক্লাব বেনফিকা ২০২২-২৩ মৌসুমে তাকে ৪ কোটি ৫০ হাজার ইউরোতে রিভার প্লেট থেকে কিনে নেয়।
তবে আজ থেকে শুরু হতে যাওয়া ক্লাব বিশ্বকাপে মাস্তানতুয়ানো খেলবেন রিভার প্লেটের হয়েই। আগামী আগস্টে তার বয়সের কোটা ১৮ পূর্ণ করলেই রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দেবেন এই তরুণ তারকা।
মাস্তানতুয়ানোকে দেখে নিজের কথা মনে পড়ছে সাভিওলার
রিয়াল মাদ্রিদে নাম লেখানো ফ্রাঙ্কো মাস্তানতুয়োনোকে নিয়ে উচ্ছ্বসিত স্প্যানিশ দলটির সাবেক ফরোয়ার্ড হাভিয়ের সাভিওলা। ইউরোপের সফলতম ক্লাবটির জন্য এই তরুণ খুব মানানসই একজন খেলোয়াড় বলে মনে করেন আর্জেন্টিনার সাবেক এ ফরোয়ার্ড। রিভার প্লেট, বার্সেলোনা ও রিয়ালের হয়ে খেলা সাভিওলা স্প্যানিশ ক্রীড়া দৈনিক মার্কাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, এই অ্যাটাকিং মিডফিল্ডারকে দেখে নিজের ক্যারিয়ারের শুরুর দিকের কথা মনে পড়ছে তার। 
তিনি বলেন, ‘আমাকে আমার প্রথম পদক্ষেপের অনেক কথা মনে করিয়ে দেয় এটা (মাস্তানতুয়োনোর দলবদল)। রিভার প্লেটের হয়ে আমার অভিষেক হয় ১৬ বছর বয়সে এবং ১৯ বছর বয়সে আমি বার্সায় ছিলাম। মাস্তানতুয়োনো এখন একইরকম অভিজ্ঞতা অর্জন করছে।’ রিভার প্লেটে ও আর্জেন্টিনার বয়সভিত্তিক দলে দারুণ পারফরম্যান্সে ইউরোপের শীর্ষ ক্লাবগুলোর নজর কাড়েন মাস্তানতুয়োনো। রাইট উইংয়ের পাশাপাশি মাঝমাঠেও খেলতে পারেন সাচ্ছ্বন্দ্যে। চলতি মাসেই চিলির বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচ দিয়ে আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের জার্সিতে অভিষেক হয় তার। সবচেয়ে কম বয়সী খেলোয়াড় হিসেবে প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে আর্জেন্টিনার হয়ে অভিষেকের কীর্তি গড়েন তিনি। তার প্রশংসায় বার্সেলোনার তরুণ উইঙ্গার লামিন ইয়ামাল ও রিয়ালের সাবেক অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার হামেস রদ্রিগেসের প্রসঙ্গ টেনে আনেন সাভিওলা। তিনি বলেন, ‘আমার মতে, সে লামিন ইয়ামালের মতো নয়। তবে সে হামেস রদ্রিগেসের মতো। রিয়াল মাদ্রিদ যেমনটা পছন্দ করে, তেমন একজন খেলোয়াড় সে।’ ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই তুমুল প্রতিভাবান হিসেবে পরিচিত ছিলেন রদ্রিগেস। লাতিন আমেরিকান ফুটবলের বিস্ময় বালকদের একজন হয়ে আবির্ভাব ঘটেছিল এই কলম্বিয়ান ফরোয়ার্ডের। চার বছর তিনি ছিলেন রিয়াল মাদ্রিদে। যদিও তার ক্লাব ক্যারিয়ার প্রত্যাশিত গতি পায়নি মাঠের বাইরের নানা কারণে।