বাংলারজমিন
ক্ষেতলালে তুলশীগঙ্গা নদীর তীরে ২০০ বছরের ঘুড়ির মেলা
ক্ষেতলাল (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি
১৪ জুন ২০২৫, শনিবার
জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার তুলশীগঙ্গা নদীতীরবর্তী সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সন্ন্যাস মন্দিরে পূজা উদ্যাপন উপলক্ষে বসে দু’দিনব্যাপী ঘুড়ির মেলা। গ্রামীণ এ মেলা সন্ন্যাসতলীর ঘুড়ির মেলা হিসেবে পরিচিত। মেলার সঠিক ইতিহাস কেউ বলতে না পারলেও জনশ্রুতি রয়েছে সন্ন্যাসী পূজাকে ঘিরে ২০০ বছরের অধিক সময় আগে মেলাটির উৎপত্তি ঘটে। সেই থেকে পঞ্জিকা অনুসারে প্রতিবছর বাংলা জ্যৈষ্ঠ মাসের শেষ শুক্রবার বিকালে বসে গ্রামীণ এ মেলা। মেলায় আশপাশের গ্রাম ছাড়াও দূর-দূরান্ত থেকে হাজার হাজার মানুষের আগমন ঘটে। জয়পুরহাটের ক্ষেতলালের এই সন্ন্যাসতলীতে সনাতন ধর্মের লোকজন মন্দিরে সন্ন্যাসীকে পূজা দিয়ে দিনটি উদ্যাপন করলেও এটি মূলত হিন্দু-মুসলিমের একটি মিলনমেলা। বিকালের পর সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে মেলায় মানুষের ঢল নামে। মেলাকে ঘিরে জামাই এবং স্বজনদের আপ্যায়ন চলে মেলা সংলগ্ন আশপাশের কয়েক গ্রামে। রঙ-বেরঙের ঘুড়ি মেলার মূল আকর্ষণ হলেও বর্তমানে মেলায় বসে রকমারি মিষ্টির দোকান। যেখানে বিভিন্ন ধরনের মিষ্টি ও চিনির শাহী জিলাপি আকৃষ্ট করে মেলায় আসা দর্শকদের। মেলায় বাঁশ-কাঠ ও লোহার তৈরি সংসারের বিভিন্ন সামগ্রী ও মাছ ধরার নানা যন্ত্রের আমদানিও নজর কাড়ে মানুষের। শিশুদের খেলাধুলার জিনিসপত্র এবং কসমেটিকসের দোকানও বসে দুইদিনের এ মেলায়। জামাই-মেয়ের পাশাপাশি স্বজনদের আপ্যায়নের রীতি এলাকায় চলে আসছে এ মেলাকে ঘিরেই। স্থানীয় মহব্বতপুর গ্রামের দুলাল, জিয়াপুরের কাজী রফিকুল বলেন- আমাদের বাবা-দাদারা এই মেলা করতে এসেছিল আমরাও এই মেলাতে কেনাকাটা করতে আসি। মেলাকে ঘিরে আশপাশের জেলা থেকে অনেক মানুষের সমাগম ঘটে। মেলাতে আসা সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার ফারুক হোসেন, বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার নিতাই চন্দ্র, দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলা আলিফ হোসেন বলেন, প্রতিবছর এই সন্ন্যাসতলী মেলাতে আসি আমরা শুধু ঘুড়ি কিনতে। ঘুড়ি ছাড়াও এখানে সবধরনের জিনিসপত্র পাওয়া যায়। সন্ন্যাস মন্দির কমিটির সভাপতি মন্টু চন্দ্র বলেন, প্রতি বছরের মতো এবারেও বসেছে সন্ন্যাসতলী মেলা। এই মেলা প্রায় দু’শ’ বছরের পুরাতন মেলা। এ মেলা হিন্দু-মুসলিম সবাই মিলে পরিচালনা করে থাকি। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা এ মেলায় আসেন। উপজেলার মামুদপুর ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি মামুন বলেন, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের এই সন্ন্যাসতলী মেলার মূল আকর্ষণ ঘুড়ি। এ মেলাকে ঘিরে আশেপাশের জেলা থেকে অনেক মানুষের সমাগম ঘটে।