মোরেলগঞ্জে চাচার বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে নিশানবাড়ীয়া ইউনিয়নে ভাতিজার জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে আপন চাচার বিরুদ্ধে। প্রভাবশালী চাচার অব্যাহত হুমকিতে পরিবার নিয়ে আতঙ্কে রয়েছে ওই পরিবারটি। বিচারের জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরছে অসহায় পরিবারটি। তাদের দাবি, পৈতৃক ভিটেমাটি ফিরে পাওয়ার। এ ঘটনায় গতকাল মোরেলগঞ্জ থানায় লিটন হাওলাদার বাদী হয়ে আপন চাচা আলতাফ হোসেনের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
প্রাপ্ত অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলার নিশানবাড়ীয়া ইউনিয়নের হরতকিতলা গ্রামের মৃত আব্দুল আউয়াল হাওলাদারের পৈতৃক ৩ শতক জমি দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে জোরপূর্বক দখল করে নিয়েছে তারই আপন সেজ ভাই আলতাফ হোসেন হাওলাদার। ২০১৪ সালে আউয়াল হাওলাদারের মৃত্যুর পরে অসহায় স্ত্রী গোলবানু বেগম ৫ ছেলে-মেয়েকে নিয়ে পেটের তাগিদে ঢাকায় দিনমজুরের কাজ করে কোনোরকম দিনযাপন করেন। পরবর্তীতে গ্রামের বাড়িতে ছেলে-মেয়েদের নিয়ে ফিরে এলে প্রভাবশালী আলতাফ তাদের মারধর করে তাড়িয়ে দেয়। এ ঘটনায় ইউনিয়ন পরিষদসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েও তার স্বামীর ভিটেমাটি ফেরত পাননি। সর্বশেষ ১০ই জুন গোলবানু বেগমের ছেলে লিটন হাওলাদার ও তার বোন আসমা বেগম চাচার নিকট তার বাবার জমি ফেরত চাইলে আসমাকে মারধরসহ এলাকা ছেড়ে যাওয়ার হুমকি অব্যাহত রাখে। প্রভাবশালী চাচার আতঙ্গে এখন গোটা পরিবার বিচারের জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরছে।
অসহায় বৃদ্ধ গোলবানু বেগম বলেন, ১১ বছর আগে স্বামী মারা গেছে। ছোট ছোট ৫টি ছেলে-মেয়ে নিয়ে দুমুঠো ভাতের জন্য মানুষের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরেছি। প্রভাবশালী চাচা বিগত সরকারের দলীয় প্রভাবে গ্রামের বাড়িতে ঢুকতে দেয়নি। দখল করে নিয়েছে স্বামীর ভিটেমাটিটুকুও। স্বামী আব্দুল আউয়ালের নামের ৮ম শ্রেণির সার্টিফিকেট চুরি করে নিজেকে আউয়াল হাওলাদার পরিচয় দিয়ে আলতাফ হোসেন সেনাবাহীনীতে চাকরি নিয়েছিল। জাতিসংঘ মিশনসহ সেনাবাহিনীর সকল সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করে অবসরেও গেছে। নিজের প্রকৃত পরিচয় গোপন করে আলতাফ হোসেন নাম বাদ দিয়ে বড় ভাই আব্দুল আউয়াল হাওলাদার নাম ব্যবহার করে জাতীয় পরিচয়পত্র করেছেন। কীভাবে একই পিতার দুই সন্তানের একই নামে জাতীয় পরিচয়পত্র হয়? তিনি এ বিষয়ে তদন্তের জন্য ঊর্ধ্বতন প্রশাসনের প্রতি দাবি জানান। অসহায় এ পরিবারটি তাদের ভিটে মাটি ফেরত পেতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আলতাফ বলেন, এনআইডি অনুযায়ী আব্দুল আউয়াল হাওলাদার নামে তিনি সেনা বাহিনীতে চাকরি নেয়ার সময় ভেরিফিকেশনে অনেক যাচাই-বাছাইয়ের পরেই তার চাকরি হয়েছে। তার ডাক নাম আলতাফ হোসেন। বড় ভাই আব্দুল আউয়াল পৌনে ২ কাঠা জমি তার নিকট বিক্রি করার কথা বলে টাকা নিয়েছে লিখিতও রয়েছে। তবে রেজিস্ট্রি করে দেয়নি। তিনি কারও জমি দখল করেননি। তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা।
এ সম্পর্কে মোরেলগঞ্জ থানার ওসি মো. মতলুবুর রহমান বলেন, নিশানবাড়ীয়ায় পারিবারিক জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধে লিটন হাওলাদার একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।