বাংলারজমিন
দেওয়ানগঞ্জে চার বছরেও শেষ হয়নি রেলসেতু সংস্কারের কাজ
দেওয়ানগঞ্জ (জামালপুর) প্রতিনিধি
১৪ জুন ২০২৫, শনিবার
ঢাকা-দেওয়ানগঞ্জ রেলপথের জিল বাংলা চিনিকলের পাশে দিঘলকান্দি রেলসেতুটির কাজ চার বছরেও শেষ হয়নি। সেতু নির্মাণকাজের চুক্তির মেয়াদ ছিল ৯ মাস। অভিযোগ রয়েছে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতিতে দীর্ঘদিন ধরে আটকে আছে ৬০ ফুট দৈর্ঘ্যের সেতুটির কাজ। তবে ঠিকাদার বলছেন, রেল কর্তৃপক্ষ সময়মতো গার্ডার সরবরাহ করতে না পারায় কাজ শেষ করা যায়নি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সেতুটি ২০২০ সালের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ওই পথে রেল চলাচল সচল রাখতে ও ঝুঁকিমুক্ত করতে একই বছর রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলীর কার্যালয় সেতুটি পুনঃনির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করে। নির্মাণে ব্যয় ধরা হয় ২ কোটি ২৭ লাখ টাকা। কাজ পায় এসএস ইঞ্জিনিয়ারিং ট্রেড সেন্টার নামে ঢাকার একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। নির্মাণের জন্য ৯ মাস সময় দিয়ে কার্যাদেশ দেয়া হয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে। ২০২১ সালের শুরুতে সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হলেও চার বছরেও সম্পন্ন হয়নি সেতুটির সংস্কার।
জানা যায়, ঢাকা-দেওয়ানগঞ্জ রেলপথের সর্বশেষ স্টেশন দেওয়ানগঞ্জ। এই পথে প্রতিদিন তিস্তা এক্সপ্রেস, ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস, দেওয়ানগঞ্জ কমিউটার ও জামালপুর কমিউটার নামে চারটি ট্রেন যাতায়াত করে। যাওয়া-আসায় প্রতিবারই ট্রেনগুলোকে নির্মাণাধীন সেতুর ওইস্থানে দাঁড়াতে হয় এবং দায়িত্বরত রেলকর্মীর অনুমতিপত্র নিয়ে সেতুটি পার হতে হয়। সেতুটিতে এখনো বসানো হয়নি স্টিলের গার্ডার ও ওয়াল ক্যাপ। সেতুটির উপর রেললাইনে স্লিপারে কাঠের বিটের পাত লাগানো হলেও তা নড়বড়ে।
দেওয়ানগঞ্জ রেলস্টেশনে ব্রহ্মপুত্র ট্রেন থেকে নেমে যাত্রীদের অনেকেই জানান, দীর্ঘদিন ধরে রেলসেতুটির নির্মাণকাজ চলছে। এতে বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন ট্রেনযাত্রীরা। দীর্ঘদিন ধরে এ অবস্থা চললেও প্রতিকারে কোনো ব্যবস্থা নেই। এ বিষয়ে সেতুটির নির্মাণকাজের ঠিকাদার সোহাগ বলেন, গার্ডার পাওয়া যাচ্ছিল না, সেজন্য রেল কর্তৃপক্ষ গার্ডার দিতে বিলম্ব করেছে। তবে এখন কাজ চলছে। শিগগিরই শেষ হবে।
দেওয়ানগঞ্জ স্টেশন মাস্টার আব্দুল বাতেন বলেন, রেলসেতুটি নির্মাণ করা খুব জরুরি। সেতুর ওইস্থানে একজন রেলকর্মী রাখা হয়েছে। তিনি ট্রেন চলাচলের সময় ঝুঁকির বিষয়টি দেখেন। তাতেও ঝুঁকি থেকে যায়। দ্রুত গতিতে সেতুটি নির্মাণকাজ শেষ করা প্রয়োজন। রেলওয়ের ঢাকা বিভাগীয় প্রকৌশলী সিরাজ জিন্নাত বলেন, সেতু নির্মাণ করতে আনুষঙ্গিক যে উপকরণ প্রয়োজন, তা ওইস্থানে নেয়া হয়েছে। ৬০ ফুট একটি গার্ডার ওই সেতুতে প্রয়োজন, যা রেলপথে বহন করতে না পারায় কাজটি বিলম্বিত হলো। গার্ডারটি কেটে ছোট করে সেতুর ওই জায়গায় নেয়ার প্রস্তুতি চলছে। আশাকরি স্বল্প সময়ে শুরু করা সম্ভব হবে।