ঢাকা, ২ জুন ২০২৫, সোমবার, ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ৪ জিলহজ্জ ১৪৪৬ হিঃ

রাজনীতি

রাজনীতিতে এক ধরণের অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে: তারেক রহমান

স্টাফ রিপোর্টার

(৩ দিন আগে) ২৯ মে ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ৮:১৯ অপরাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ৩:৪৬ অপরাহ্ন

mzamin

জাতীয় নির্বাচনের সুস্পষ্ট তারিখ ঘোষণা না করায় রাষ্ট্র এবং রাজনীতিতে এক ধরণের অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বৃহস্পতিবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপির উদ্যোগে ‘সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাৎবার্ষিকী উপলক্ষে’ এক আলোচনা সভায় লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন। সভায় জিয়াউর রহমানের শাহাদাৎবার্ষিকীতে একটি ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়।

তারেক রহমান বলেন, হাজারো শহীদের রক্তস্নাত বাংলাদেশে দীর্ঘ দেড় দশকে ফ্যাসিবাদী শাসনের পতন হয়েছে। একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশ পরিচালনা করছে বর্তমানে। গণঅভ্যুত্থানের পর বিশেষ পরিস্থিতিতে দায়িত্ব নেয়া এই সরকার হয়তো বৈধ। তবে এই সরকার কোনভাবেই কিন্তু জবাবদিহিমূলক নয় এবং জনগণের কাছে এই সরকারের জবাবদিহি করার কোন সুযোগও নেই। দেশের বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ১০ মাসেও জাতীয় নির্বাচনের সুস্পষ্ট তারিখ ঘোষণা করেনি। ফলে রাষ্ট্র এবং রাজনীতিতে এক ধরণের অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে। এই অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হওয়ার কারণেই দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড স্থবির হয়ে পড়েছে। 

তিনি বলেন, দেশের জনগণ সরাসরি নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে একটি জবাবদিহিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠিত করতে প্রস্তুত। কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জনগণের আকাঙ্ক্ষা উপলব্ধি করতে ব্যর্থ হচ্ছে। গণতন্ত্রের পক্ষের প্রতিটি রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে লিখিতভাবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে সংস্কার প্রস্তাব এরই ভেতর দেয়া হয়েছে। সংস্কারের ব্যাপারে কোন রাজনৈতিক দলের তেমন কোন আপত্তি নেই। তবে সংস্কার নিয়ে অযথা সময়ক্ষেপণে আপত্তি অবশ্যই রয়েছে। শুধু রাজনৈতিক দলের নয়, রাজনৈতিক দলগুলো বাইরেও বিভিন্ন সংগঠনও এব্যাপারে তাদের আপত্তির কথা জানিয়েছে। একারণেই আমরা মনে করি, প্রস্তাবিত সংস্কার শেষ করে যদি ইনটেনশন সঠিক থাকে, গণতন্ত্রের পক্ষে থাকে- আমরা দাবি করেছি, ডিসেম্বরের ভেতরে নির্বাচন দিতে। তবে আমি এটাও মনে করি, বিভিন্ন বিষয় বিবেচনা করে সংস্কার প্রস্তাব শেষ করে যেহেতু কমবেশি সকল বিষয়, অধিকাংশ দলগুলোর মধ্যে একমত রয়েছে, ডিসেম্বরের আগেও নির্বাচন করা সম্ভব। 

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, আমি অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আবারও আহ্বান জানাই, জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে ধারন করুন। অবিলম্বে ডিসেম্বরের মধ্যেই সুনির্দিষ্ট দিনক্ষণ দিয়ে জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করুন। এখানে অন্তর্বর্তী সরকারের জয় বা পরাজয়ের কোন কিছুই নেই। বরং স্বাধীনতা প্রিয় জনগণকে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিয়ে গণতন্ত্রকেই বিজয়ী করুন, করতে সাহায্য করুন।   

তিনি আরও বলেন, জনগণের ভোটে নির্দিষ্ট মেয়াদের একটি স্থিতিশীল সরকার না থাকায় কাঙ্ক্ষিত বিনিয়োগও হচ্ছে না। গণমাধ্যমে আমরা দেখেছি, ব্যবসায়িক সংগঠনগুলো বলছে, নানা কারণে ইতিমধ্যে শত শত শিল্প কল-কারখানা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। আরও অনেক কল-কারখানা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়ে পড়ছে। ভিন্ন সেক্টরে এধরণের অস্থিরতা বিরাজ করছে। জনগণ তাদের সমস্যার কথা সরকারের কাছে তুলে ধরা বা বলার কোন সুযোগ তারা পাচ্ছে না।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের সঙ্গে স্বাভাবিক কারণেই জনগণের কোনই যোগাযোগ নেই। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সমস্যা সম্ভাবনা কিংবা দু:খ-দুর্দশা সম্পর্কে অনেক উপদেষ্টাই জানেন না। তারা অফিসে বসে ফাইল-পত্র দেশে জনগণের সমস্যা চিহ্নিত করে সমাধানের চেষ্টা হয়তো কেউ কেউ করছেন। জনগণের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ ছাড়া প্রশাসন নির্ভর, ফাইল নির্ভর হয়ে যদি সকল সমস্যা করাই যেতো তাহলে তো নিশ্চিয়ই রাজনৈতিক দল কিংবা রাজনীতি প্রয়োজন হতো না। 
তিনি বলেন, সত্যিকার অর্থে রাষ্ট্র এবং সরকার পরিচালনায় জনগণের স্বার্থ, জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে প্রাধান্য দেয়াই কিন্তু জরুরি। কারণ কোন সরকার কিংবা সরকার প্রধানের নিজেদের চিন্তা জনগণের উপর চাপিয়ে দেয়া প্রবণতা থেকেই কিন্তু শাসন, প্রশাসনে, মন-মগজে স্বৈরাচারের বীজ রোপিত হয়। রাষ্ট্র এবং সরকারে যাতে স্বৈরাচারের কবলে না পড়ে একারণেই রাষ্ট্রে জনগণের মালিকা প্রতিষ্ঠা করা অত্যন্ত জরুরি। জনগণের ভোটে জনগণের কাছে জবাবদিহিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে একমাত্র রাষ্ট্র এবং সরকারকে জনগণের কাছে দায়বদ্ধ করা যায়।  

জিয়াউর রহমানের প্রতি স্মৃতিচারণ করে তারেক রহমান বলেন, আজকে রাজনীতিতেও শহীদ জিয়া সমানভাবেই প্রাসঙ্গিক। শহীদ জিয়ার রাজনীতি এবং রাষ্ট্র পরিচালনায় নীতি ও পদ্ধতি এখনো আমাদের জন্য অনুকরণীয় ও অনুসরনীয়। শহীদ জিয়া মানেই একটি স্বনির্ভর, আত্মমর্যাদাশীল এবং গণতান্ত্রিক একটি বাংলাদেশ। শহীদ জিয়া তার কর্মের মাধ্যমেই বেঁচে আছেন, বেঁচে থাকবেন গণতন্ত্রকামী এই বাংলাদেশের মানুষে হৃদয়ে। তিনি জনগণের হৃদয়ে ভাস্কর হয়ে আছেন অর্জনে, গর্জনে নয়। স্বাধীনতার ঘোষক জিয়া ইতিহাসের পাতায় অবিনশ্বর।    

থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে চিকিৎসাধীন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে সভায় সভাপতিত্ব করেন। বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সঞ্চালনায় সভায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ড. আবদুল মঈন খান, সালাহউদ্দিন আহমেদ, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, মেজর অব. হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাবেক অধ্যাপক ও অর্থনীতিবিদ মাহবুব উল্লাহ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

পাঠকের মতামত

দ্রুত নির্বাচন চাই

Shahidul Alam
২৯ মে ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ৯:৩০ অপরাহ্ন

জী স্যার, ৭০% বাংলাদেশী এখন ভোট চায় না! বিচার, সংস্কার, নির্বাচন চলছে, চলবে.... জুলাই '৩৬, স্বাধীনতা ২, ০, সংস্কার, বিচার, নির্বাচন.... পরিবর্তন মেনে নিন, দেশের স্বার্থ আগে... জনস্বার্থ... ক্ষমতা....

No name
২৯ মে ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ৯:১৯ অপরাহ্ন

কোন অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়নি। বরং আপনারা ভয়ে আছেন, কি ভয়? ভয় হচ্ছে বিলম্ব হলে হয়ত আপনারা ক্ষমতায় আসতে পারবেন না। কিন্তু জনাব মনে রাখবেন সত্যের জয় নিশ্চিত। অতএব, আপনার কাজ হচ্ছে আপনার দলের নেতাকর্মীতের সততা, ন্যায়পরায়নতা শিক্ষা দিন। রাজনীতি মানে চাঁদাবাজি, ঘুষ, দূর্নীতির মাধ্যমে টাকা ইনকাম করা এই ধারনা বাদ দিতে বলেন তবেই ইনশাআল্লাহ, আপনাদের জয় হবে । আর যদি পূর্বেকার মতো এখনো চাঁদাবাজি, ঘুষ, দূর্নীতির মাধ্যমে টাকা ইনকাম করার ধান্দা থাকে তবে পরাজয়ও হতে পারে। কারণ জুলাই আন্দোলনে খুব কাছ থেকে দেখেছি, কি ধরনের লোকেরা আন্দোলনের সাথে জড়িত ছিল? এবং তাদের চাওয়া কি? সুতরাং জনাব আপনাকে বুঝতে হবে পরবর্তী সরকার অবশ্যই চাঁদাবাজি, ঘুষ, দূর্নীতির মাধ্যমে টাকা ইনকাম করার ধারনা বাদ দেওয়ার শপথ নিয়েই সরকার গঠন করতে হবে। জনগণের মাঝে এমন ভাবে বার্তা পৌছাতে হবে যেন তারা বিশ্বাস করে বিএনপি এখন আর চাঁদাবাজি, ঘুষ, দূর্নীতির মাধ্যমে টাকা ইনকাম করে না। তারা দেশকে দেশের মানুষকে ভালবাসে। মিটিং মিছিলে জনতার ঢল দেখে মনে করার কোন কারণ নেই, এখনই নির্বাচন হলে আপনারাই ক্ষমতায় আসবেন। So of course you have to remember it deeply.

aulad
২৯ মে ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ৮:৪৫ অপরাহ্ন

একদল খাইছে, আরেকদল খাওয়ার জন্য রেডি হয়ে আছে’, এই প্রসঙ্গে, ডঃ ইউনুস স্যার কীভাবে রাস্তায় সমস্ত মিছিল বন্ধ করতে সক্ষম হবেন, সে সম্পর্কে আপনার মতামত কি দয়া করে জানাতে পারেন? How can he run the country for another 5 years? Your explanation will be highly appreciated.

Nadim Ahammed
২৯ মে ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ৮:৩৫ অপরাহ্ন

রাজনীতি থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

রাজনীতি সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status