ভারত
রাষ্ট্রপতি শাসনে মণিপুরে শান্তি ফেরেনি, এবার জনপ্রিয় সরকারের তোড়জোড়
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা
(৫ দিন আগে) ২৮ মে ২০২৫, বুধবার, ৩:৩৩ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:১০ পূর্বাহ্ন
দীর্ঘ দুই বছরের বেশি জাতিগত সহিংসতার পর মণিপুরে কেন্দ্রীয় সরকার ১৩ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করে। তার আগেই মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং পদত্যাগ করেন। কিন্তু তিন মাসের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও মণিপুরে শান্তি ফেরেনি। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ও ওয়াংখেমের বিধায়ক মেঘচন্দ্র অভিযোগ করেছেন, ডাবল ইঞ্জিন সরকার ইতিমধ্যেই গত দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে মণিপুরকে ব্যর্থ রাজ্যে পরিণত করেছে। রাষ্ট্রপতি শাসনও মণিপুরকে ব্যর্থ করেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বারবার মণিপুরকে ব্যর্থ করেছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের পদত্যাগ করা উচিত। মণিপুরের রাজ্যপালকে প্রত্যাহার করা উচিত।
মণিপুরে গত কয়েকদিন ধরে গত সপ্তাহে একটি সরকারি বাসের উইন্ডশিল্ডে রাজ্যের নাম কাগজ দিয়ে ঢেকে দেবার ঘটনায় বিক্ষোভ চলছে। এজন্য রাজ্যপালের ক্ষমা দাবি করা হয়েছে। পাশাপাশি জাতিগত সহিংসতার কোনও বিরাম নেই। প্রায় প্রতিদিনই দাঙ্গার ঘটনা ঘটে চলেছে। অথচ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ রাষ্ট্রপতি শাসন জারির সময় প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, মণিপুরে শান্তি ফিরে আসবে।
এই আবহে মণিপুরে জনপ্রিয় সরকার গঠনের তোড়জোড় শুরু হয়েছে। মণিপুরে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হলেও বিধানসভাকে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছে। ২০২৭ সাল পর্যন্ত মেয়াদ রয়েছে বর্তমান বিধানসভার।
বুধবার ইম্ফলে রাজভবনে মণিপুরের রাজ্যপাল অজয় ভাল্লার সাথে ১০ জন বিজেপির নেতৃত্বাধীন জাতীয় গণতান্ত্রিক জোট এনডিএ বিধায়কদের একটি প্রতিনিধিদল দেখা করেন। তারা রাজ্যপালকে রাজ্যে একটি জনপ্রিয় সরকার গঠনের জন্য ৪৪ জন বিধায়কের সমর্থনের কথা জানিয়েছেন। এই ১০ জন বিধায়ক হলেন বিজেপির ইউমনাম রাধেশ্যাম সিং, থোকচোম রাধেশ্যাম সিং, লরেম্বাম রামেশ্বর মেইতেই, থাংজাম অরুণকুমার, খ রঘুমণি সিং, কংখাম রবীন্দ্রো সিং এবং পাওনাম ব্রোজেন সিং, এনপিপি থেকে শেখ নূরুল হাসান এবং জাংহেমলিউং এবং নির্দলীয় সাপম নিশিকান্ত। বিধায়কদের মধ্যে নয়জন মেইতেই-সংখ্যাগরিষ্ঠ উপত্যকা থেকে নির্বাচিত, অন্যদিকে পানমেই একজন নাগা।
রাজভবন থেকে বেরিয়ে থোকচম রাধেশ্যাম সিং বলেন, আমরা ৪৪ জন বিধায়কের মতামত জানিয়েছি। পরিস্থিতি যেভাবে এগোচ্ছে এবং জনগণের চাপের কারণে আমরা রাজ্যপালের কাছে জানিয়েছি যে, জনপ্রিয় সরকার প্রতিষ্ঠার এটাই সঠিক সময়। রাষ্ট্রপতি শাসন একটি জরুরি পদক্ষেপ এবং এটিই শেষ বিকল্প হওয়া উচিত। যদি নতুন জনপ্রিয় সরকার ব্যর্থ হয়, তাহলে আবারও রাষ্ট্রপতি শাসন পুরোপুরিভাবে জারি করা যেতে পারে।
তিনি বলেন, ১০ জন কুকি-জো বিধায়ক এবং পাঁচজন কংগ্রেস বিধায়ক ছাড়া আমরা মণিপুর বিধানসভার সব বিধায়কদের সমর্থন চেয়েছি। মণিপুর বিধানসভায় ৬০টি আসন রয়েছে, যার মধ্যে একজন বিধায়কের মৃত্যুর কারণে একটি আসন শূন্য রয়েছে। এর আগে গত
২৯শে এপ্রিল ২১ জন এনডিএ বিধায়ক রাজ্যে একটি জনপ্রিয় সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য প্রধানমন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছিলেন। এর মধ্যে সাবেক মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং বা তাঁর ঘনিষ্ঠ বিধায়কদের দল অন্তর্ভুক্ত ছিল না। বুধবার রাজ্যপালের সাথে দেখা করা ১০ জন বিধায়কও ছিলেন সেই ২১ জনের মধ্যে।
তবে, সাবেক মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংয়ের ঘনিষ্ঠ বিধায়কদের একজন এল সুসিন্দ্রো মেইতেই এই ঘটনা সম্পর্কে অবগত নন বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, বুধবারের রাজনৈতিক ঘটনাবলী সম্পর্কে আমার কোনও কিছু জানা নেই। তবে, কেবল সংখ্যাগরিষ্ঠতা দাবি করে একদল বিধায়কের এই ধরনের দাবি করা খুবই অনুচিত। সাধারণত, এটি দলের পরিষদীয় নেতার কাজ। তবে আমরা কৃতজ্ঞ যে, তারা রাজ্যের বিদ্যমান সমস্যা তুলে ধরেছেন।