দেশ বিদেশ
যুবলীগ নেতা পেলেন জুলাই যোদ্ধার অনুদান
স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা থেকে
১৯ মে ২০২৫, সোমবার
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালাতে গিয়ে আহত এক যুবলীগ নেতা জুলাই যোদ্ধা হিসেবে অনুদান পেয়েছেন। গত ১৪ই মে খুলনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে আহত জুলাই যোদ্ধা হিসেবে ‘সি ক্যাটাগরিতে’ এক লাখ টাকার চেক গ্রহণ করেন তিনি। অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম মো. মিনারুল ইসলাম। তিনি খুলনার তেরখাদা উপজেলার মধুপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। গত বছরের ৪ঠা আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান চলাকালে খুলনার আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে শিক্ষার্থীদের ওপর গুলিবর্ষণ ও হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় ছাত্রদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীদের ধাওয়ায় কার্যালয় থেকে পালাতে গিয়ে আহত হন মিনারুল ইসলাম। তার চেক প্রাপ্তির ছবি ছড়িয়ে পড়লে ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকে। জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে জানা গেছে, আহত জুলাই যোদ্ধা সি ক্যাটাগরিতে খুলনায় ৬৩ জনের নামে চেক এসেছে। তাদের মধ্যে ৫০ জন এক লাখ টাকার চেক নিয়েছেন। গত ১৪ই মে খুলনার জেলা প্রশাসক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের হাত থেকে চেক গ্রহণ করেন মিনারুল ইসলাম।
খুলনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বিতান কুমার মণ্ডল জানান, উপজেলা পর্যায়ে আবেদন করলে পুলিশ, জুলাই আন্দোলনের নেতৃত্ব দেয়া ছাত্র প্রতিনিধি, হাসপাতালসহ বিভিন্নভাবে যাচাই-বাছাই করা হয়। পরে জেলা কমিটির সভায় আরেক দফা যাচাই-বাছাই করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। মিনারুল নামের ব্যক্তি সরাসরি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন। মন্ত্রণালয় থেকে তার আবেদন যাচাই-বাছাই করে গেজেট প্রকাশ করে চেক খুলনায় পাঠিয়েছে। এজন্য তার আবেদনের বিষয়ে খুলনায় কোনো তথ্য নেই। তিনি বলেন, কেউ যদি তার বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দেয়, তাহলে সেটি যাচাই করে মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন পাঠানো হবে। তখন গেজেট থেকে নাম বাদ দেয়া হবে। তেরখাদা উপজেলা যুবলীগের সভাপতি এফএম মফিজুর রহমান বলেন, তেরখাদা উপজেলার মধুপুর ইউনিয়ন কমিটির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন মিনারুল ইসলাম।
২০২৩ সালের ১৭ই অক্টোবর জেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে অবস্থান নিলে তাকে বহিষ্কার করা হয়। জুলাই আন্দোলনের সময় সে মধুপুরের বাড়িতেই ছিল। ৪ঠা আগস্ট খুলনায় দলীয় কার্যালয়ে সমাবেশে যোগ দিতে যায়। সেখানে পালাতে গিয়ে টিনের চালে ঝাঁপ দিলে পায়ে কী সমস্যা হয়েছে বলে শুনেছিলাম। গত বছর ৪ঠা আগস্ট আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে ছিলেন খুলনা জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মো. কামরুজ্জামান জামাল। আত্মগোপনে থাকা জামালের সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ৪ঠা আগস্ট মিনারুল ইসলাম আমাদের সঙ্গেই ছিল। ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হলে সে কার্যালয় থেকে লাফিয়ে পড়ে আহত হন। তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। ৫ই আগস্টের পর থেকে তার সঙ্গে যোগাযোগ নেই। এ ব্যাপারে মুঠোফোনে মিনারুল ইসলাম বলেন, জরুরি মিটিংয়ে আছি। ১০ মিনিট পরে ফোন ব্যাক করছি। এরপর অসংখ্যবার তাকে ফোন দেয়া হলেও তিনি তা রিসিভ করেন নি। একপর্যায়ে মোবাইল বন্ধ করে দেন।
পাঠকের মতামত
আসলে এটাই লীগের প্রকৃত চরিত্র।।
JARA PURUSKER POWER TADER NATIYE JARA HOTTAR SATHE JORITO TARA PURUSKER PAYE HAI DESH TORA MANUS HO.
এধরণের হটকারীতা ক্ষমার অযোগ্য।
এত যাচাই বাছাই কারা, কিভাবে করলো ? যাচাই বাছাই কি তা তো বুঝলাম না! হায়রে অভাগা দেশ! আক্রমণ কারী পাল্টা আক্রমনে আহত বা ধাওয়া খেয়ে নিজেই আহত হয়ে অনুদানের টাকা পায়! আশ্চর্য এই দেশ, আশ্চর্য এই দেশের মানুষ ! আল্লাহর গজব কি এদের দেখে না ?