বাংলারজমিন
দফায় দফায় বৈঠকেও হয়নি সমাধান পায়নি বিএটি
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
১৭ মে ২০২৫, শনিবার
শ্রমিক অসন্তোষে কুষ্টিয়া বৃটিশ আমেরিকান টোব্যাকো কুষ্টিয়ার লিফ ফ্যাক্টরির সামনে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালন করে চলেছেন কোম্পানিটির মৌসুমি শ্রমিকরা। তাদের ২২ দফা দাবি পূরণের আশায় চলমান কর্মসূচি পালন করছে যা ২৩ দিন অতিক্রম করেছে। ফ্যাক্টরির প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান কর্মসূচি চলার কারণে কর্তৃপক্ষ অনির্দিষ্টকালের জন্য ফ্যাক্টরিটি বন্ধ রেখেছেন। অবস্থান কর্মসূচি ২৩ দিন পার হলেও এখন পর্যন্ত কোম্পানির পক্ষ থেকে সমাধানের কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। এদিকে শ্রমিকদের ২২ দফা দাবি পূরণের জন্য সরকার থেকে নির্দেশনা প্রদান করেছে কোম্পানির কাছে। তারপরও এখন পর্যন্ত সরকারের নির্দেশনা কর্ণপাত না করে নিজস্ব সিদ্ধান্তের ওপরে অটল রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন মৌসুমি শ্রমিকরা।
জানা গেছে, সরকারি নির্দেশনা অমান্য করেছে দেশের বহুজাতিক তামাক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান কুষ্টিয়া বৃটিশ আমেরিকান টোব্যাকো লিফ ফ্যাক্টরি। সেই সঙ্গে শ্রম আইনের ৪৫ ধারা লঙ্ঘন করেছে কোম্পানিটি। এতে মৌসুমী শ্রমিকদের মাঝে অসন্তোষের দেখা দিয়েছে। সরকারি নির্দেশনা অমান্য করায় কোম্পানির চার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নামে শ্রম আদালতে মামলা করেছে সরকার। শ্রমিক অসন্তোষ ও ফ্যাক্টরি বন্ধের বিষয়ে একটি শান্তিপূর্ণ সমাধানের আশায় কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক তৌফিকুর রহমান দুই দফায় তিনবার উদ্যোগ নেন। কিন্তু সেই উদ্যোগও ভেস্তে গেছে। গত ২৮শে এপ্রিল কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসকের উদ্যোগে বৃটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর ঊর্ধ্বতন একাধিক কর্মকর্তা ও শ্রমিকদের নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সমাধানের জন্য আলোচনায় বসেন। কিন্তু শ্রমিকরা তাদের যৌক্তিক দাবিতে অটল থাকায় এবং বিএটি কর্তৃপক্ষের ছাড় দেয়ার মনোভাব না থাকার কারণে কোনো সমাধান হয়নি। গত মঙ্গলবার আবার দু’পক্ষকে নিয়ে বসেন কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক। এদিন সকাল ১১টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত আলোচনা হলেও কোনো সমাধানে আসেনি। বিরতি দিয়ে দুপুর সাড়ে ৩টা থেকে সাড়ে ৬টা পর্যন্ত আবার দু’পক্ষকে নিয়ে আলোচনায় বসেন জেলা প্রশাসক। দীর্ঘ এই আলোচনায়ও শ্রমিকদের ন্যায্য দাবিগুলো মেনে নিতে অপারগতা প্রকাশ করে বিএটি কর্তৃপক্ষ। ফলে সমাধানের পথ এ দিনও বন্ধ হয়ে যায় বলে জানা গেছে।
আলোচনা শেষে মৌসুমি শ্রমিকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বৃটিশ আমেরিকান টোব্যাকো আমাদের সঙ্গে তামাশা করছে। জেলার সর্বোচ্চ নিতি নির্ধারক ব্যক্তি জেলা প্রশাসক আমাদের দু’পক্ষকে ডেকেছিলেন শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য। কিন্তু আমাদের যৌক্তিক দাবিগুলো তাদের কখনোই পছন্দ হয় না। এর আগে ২০২৩ সালে এমন ঘটনা ঘটেছিল। তখনো তারা বলেছিল, ফ্যাক্টরি চালু হোক আপনাদের দাবিদাওয়া আমরা আস্তে আস্তে মেনে নেবো। কিন্তু কোনো দাবি না মেনে উল্টো আমাদের ৫ ভাইসহ ১৬ জনকে চাকরি থেকে বাদ দিলো। দাবি না মানা পর্যন্ত আমরাও আমাদের অবস্থান কর্মসূচি থেকে পিছু হটবো না। এদিকে, এক বিবৃতিতে কোম্পানিটি জানিয়েছে, শ্রমিক অসন্তোষ অব্যাহত থাকলে কুষ্টিয়ার ফ্যাক্টরি স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেয়া হবে। আর তাতেই শ্রমিকরা ফুঁসে উঠেছে। এ ব্যাপারে বিএটিবি’র পক্ষ থেকে কোনো উত্তর জানা সম্ভব হয়নি।