দেশ বিদেশ
সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়াতে সমাবেশ
স্টাফ রিপোর্টার
২৮ এপ্রিল ২০২৫, সোমবারসরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ করার দাবিতে সমাবেশ করেছেন চাকরির বয়সসীমা ৩৫ প্রত্যাশী সাধারণ শিক্ষার্থীদের একটি অংশ। গতকাল দুপুরে শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে এ সমাবেশ আয়োজন করেন তারা। এ সময় শ’খানেক শিক্ষার্থী সেখানে অবস্থান নেন। সমাবেশকারীরা বলছেন, গত বছর অক্টোবরে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত, সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ, পাবলিক, নন-ফাইন্যান্সিয়াল করপোরেশনসহ স্ব-শাসিত সংস্থাসমূহে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ বয়সসীমা নির্ধারণ অধ্যাদেশ, ২০২৪-এর খসড়া অনুমোদন দেয়া হয়। এতে চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩২ করার সিদ্ধান্ত হয়। চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ন্যূনতম ৩৫ বছর দাবিটি সম্পূর্ণ যৌক্তিক হলেও রাষ্ট্র এখন পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। আমরা চাই সরকার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সংস্কার কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী পুরুষ ৩৫, নারী ৩৭ বয়স বাস্তবায়ন করুক। এ সময় তারা ‘জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সুপারিশ ৩৫/৩৭ বাস্তবায়ন চাই’, ‘চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ন্যূনতম ৩৫ চাই’, ‘সুপারিশ যেমন প্রজ্ঞাপন চাই তেমন’, ‘বয়সসীমা বৃদ্ধি চাই, যোগ্যতা প্রমাণের সুযোগ চাই’- ইত্যাদি লেখা প্ল্যাকার্ড হাতে সরকারের সিদ্ধান্তের বিপক্ষে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।
সমাবেশে আসা আরিফুল ইসলাম নামের একজন বলেন, বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে দেশকে মুক্ত করে দিয়েছে ছাত্রসমাজ। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য আজকের দিনে এসেও বৈষম্য রয়েই গেছে। হাজার শিক্ষার্থী রাজপথে রক্ত দিয়েছে শুধু বৈষম্য দূর করার জন্য। এখনো পর্যন্ত রাষ্ট্র আন্দোলনসমূহের যৌক্তিক সমাধান করতে পারেনি। এমতাবস্থায় আমরা আমাদের ন্যায্য অধিকারের পক্ষে যদি মার খেতে হয় মার খাবো, রক্ত দিতে হলে রক্ত দেবো। তারপরও আমরা আমাদের দাবি বাস্তবায়ন করবো। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, এই চাকরির বয়স ৩৫ করার আন্দোলনের প্ল্যাটফরমের অসংখ্য সহযোদ্ধা হামলার শিকার হয়েছিল, জেল খেটেছিল, মামলা খেয়েছিল, এরপরও তাদেরকে কখনো দমিয়ে রাখতে পারেনি কেউ। এ দাবি যতক্ষণ পর্যন্ত বাস্তবায়ন হবে না, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না কেউ। এটা আমাদের জীবন-মরণের দাবি। আমরা এমন কিছু চাই না যেটা রাষ্ট্র আমাদের দিতে পারবে না। শুধুমাত্র চাকরিতে আবেদন করার সুযোগ চেয়েছি।
আহমেদ তানজিদ নামের আরেকজন বলেন, যদি সুপারিশ বাস্তবায়ন না করা হয় সরকার কেন সংস্কার কমিশন গঠন করলো? আগেও আমরা যমুনার সামনে অবস্থান নিলে সরকারের দুইজন উপদেষ্টা প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ হয়ে আমাদের আশ্বস্ত করেছিল অনতিবিলম্বে একটা সংস্কার কমিশন গঠন করবে। সে সংস্কার কমিশন যা সুপারিশ করবে সে সুপারিশ অনুযায়ী চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা নির্ধারণ করা হবে। তারা সংস্কার কমিশন গঠন করলো, সে কমিশন চাকরিতে প্রবেশের জন্য পুরুষের ক্ষেত্রে ৩৫ এবং নারীর ক্ষেত্রে ৩৭ বছর সুপারিশ করলো। কিন্তু কার পরামর্শে ও যুক্তিতে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২ করা হয়েছে একজন নাগরিক হিসেবে এ প্রশ্নের জবাব আমি চাই। আমরা যারা বিগত ১৬ বছর স্বৈরাচার সরকারের শাসনে পিষে গেছি, আমাদের আজকেও রাস্তায় দাঁড়িয়ে চিৎকার করতে হচ্ছে। মো. তাজুল ইসলাম বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানে অংশ নিয়ে সমন্বয়কদের কেউ কেউ উপদেষ্টার স্বাদ নিচ্ছে, কেউ প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি হওয়ার স্বপ্ন দেখছে অথচ আমাদের সরকারি চাকরিতে আবেদনের সুযোগ দিতে বাধা দিচ্ছে। যদিও আমরা ৩৫ প্রত্যাশীরা জুলাই অভ্যুত্থানে রাজপথে সরাসরিই ছিলাম।