শেষের পাতা
ইরানে ভয়াবহ বিস্ফোরণ নিহত ৪, আহত ৫১৬
মানবজমিন ডেস্ক
২৭ এপ্রিল ২০২৫, রবিবার
ইরানের বন্দর আব্বাসে ভয়াবহ বিস্ফোরণে ৪ জন নিহত ও কমপক্ষে ৫১৬ জন আহত হয়েছেন। বিস্ফোরণের পরপরই সেখানে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ধসে পড়ে একটি আধাপাকা ভবন। এর নিচে কিছু মানুষ আটকা পড়েছেন। তবে তাদের পরিণতি কি হয়েছে তা জানা যায়নি। ঘটনাস্থলের ফুটেজ থেকে দেখা যায়, সেখানে ধোঁয়া উড়ছে। এটা আকস্মিক বিস্ফোরণ নাকি হামলা তা তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। বিস্ফোরণ এতটাই শক্তিশালী ছিল যে, তার শব্দ ৫০ কিলোমিটার দূর থেকেও শোনা গেছে। বার্তা সংস্থা তাসনিম, ফার্স’কে উদ্ধৃত করে এ খবর দিয়েছে টাইমস অব ইসরাইল। স্থানীয় অধিবাসীরা বলেছেন, বন্দর থেকে অনেক দূরে মাটিতে কম্পন অনুভূত হয়েছে। বন্দরের বেশ কিছু ভবন মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইরানে বেশির ভাগ দুর্ঘটনা হয়ে থাকে বহু পুরনো তেলক্ষেত্রগুলোতে। এসব তেল বিষয়ক প্রতিষ্ঠান আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞায় ভুগছে। ফলে দুর্বল স্থাপনা ধ্বংস বা ক্ষতি হওয়ার বিষয় উড়িয়ে দিয়েছে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন। রাষ্ট্র মালিকানাধীন ন্যাশনাল ইরানিয়ান ওয়েল প্রোডাক্টস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি এক বিবৃতিতে বলেছে, শহীদ রাজাই বন্দরে বিস্ফোরণের সঙ্গে কোনো তেল শোধনাগার, জ্বালানি ট্যাংক, বিতরণ বিষয়ক কোনো ভবন বা তেলের পাইপলাইনের কানেকশন নেই। কোনো রকম বিঘ্ন ছাড়াই বন্দর আব্বাস তেল স্থাপনা বর্তমানে সচল রয়েছে। ইসমাইল মালেকিজাদেহ নামের আঞ্চলিক এক বন্দর কর্মকর্তা রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনকে বলেন, শহীদ রাজাই বন্দর ডকের একটি অংশে ওই বিস্ফোরণ ঘটে। আমরা আগুন নেভানোর চেষ্টা করছি। হরমোজান রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির প্রধান মুখতার সালেহ সার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনকে বলেন, বিস্ফোরণের পরপরই আহতদের দ্রুত চিকিৎসা দেয়ার জন্য সেখানে চারটি দল পাঠানো হয়। উল্লেখ্য, ‘শহীদ রাজাই’ বন্দর রাজধানী তেহরান থেকে ১ হাজার কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত। এ ছাড়া বন্দর আব্বাস থেকে ২৩ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত। এটি ইরানের সবচেয়ে উন্নত কন্টেইনার বন্দর। ওই বন্দর দিয়ে বিশ্বের তেল উৎপাদনের এক পঞ্চমাংশ সরবরাহ করা হয়। সংকট ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের প্রধান মেহেরদারদ হাসানজাদেহ রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনকে নিশ্চিত করেন, একাধিক কন্টেইনারের বিস্ফোরণে ওই দুর্ঘটনা ঘটে। আরও বলেন, আমরা বর্তমানে আহতদের সরিয়ে নিকটস্থ চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যাচ্ছি। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কেউ নিহত হয়েছেন কিনা তা জানা যায়নি। তবে ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, রাস্তার উপর আহত মানুষ শুয়ে আছেন। একটি আধাপাকা ভবন ধসে পড়েছে। তার নিচে লোকজন আটকা পড়ে আছেন বলে রিপোর্ট পাওয়া যাচ্ছে। এর আগে সেপ্টেম্বরে ইরানের পূর্বদিকে তাবাস এলাকায় একটি কয়লাখনিতে গ্যাস লিক হয়ে বিস্ফোরণে নিহত হন কমপক্ষে ৫০ জন। ওদিকে তেহরানের দ্রুতগতিতে পারমাণবিক কর্মসূচিতে এগিয়ে যাওয়া নিয়ে ওমানে শনিবার যখন তৃতীয় দফার বৈঠক শুরু হয়, তখন বন্দরে ওই ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণের কারণ অনুসন্ধানে এরইমধ্যে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ রেজা আরেফ। উল্লেখ্য, এর আগে ২০২০ সালে একই বন্দরে সাইবার হামলার শিকার হয়। ওই সময় ওয়াশিংটন পোস্ট রিপোর্ট করে যে, ইরানের শত্রু ইসরাইল এই হামলার নেপথে থাকতে পারে। তারা ইরানের সাইবার হামলার জবাবে প্রতিশোধ নিয়ে থাকতে পারে। ওদিকে ইরানে এই বিস্ফোরণের পর ইসরাইলি সেনাবাহিনী বা প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।