প্রথম পাতা
ইসলামী দলগুলোর নির্বাচনী সমঝোতার চেষ্টা
স্টাফ রিপোর্টার
২৬ এপ্রিল ২০২৫, শনিবারসংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচনী সমঝোতার চেষ্টা করছে ইসলামী দলগুলো। মূল লক্ষ্য হচ্ছে নির্বাচনে ইসলামপন্থিদের একক প্রার্থী এবং ধর্মভিত্তিক দলগুলোর ভোট এক বাক্সে আনা। ধর্মভিত্তিক দলগুলোকে এক কাতারে আনতে এর আগে অনানুষ্ঠানিকভাবে একাধিকবার আলোচনা করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে চারটি নিবন্ধিত ইসলামী দলের সঙ্গে বৈঠক করে সংগঠনটি। ওদিকে নির্বাচনী সমঝোতা নিয়ে আশাবাদী ইসলামী আন্দোলন। জামায়াতে ইসলামীও এই উদ্যোগের সঙ্গে একমত। তবে ‘জোটবদ্ধ’ শব্দে আপত্তি দলগুলোর। এর পরিবর্তে অন্য কোনো নামে জনগণের সামনে আত্মপ্রকাশ করতে মতামত দিয়েছে ইসলামী দলগুলো। এ ছাড়া ইসলামী দল ছাড়াও আরও কিছু দলকে এই সমঝোতায় আনার চেষ্টা করছে ইসলামী আন্দোলন।
ইসলামী আন্দোলনের দলীয় সূত্র জানায়, এ পর্যন্ত দেশে নির্বাচনী জোট অনেক হয়েছে। সেখানে ভুল বোঝাবুঝি অনেক ছিল। এজন্য এই শব্দটি তারা ব্যবহার করতে চাচ্ছে না। এর পরিবর্তে সমঝোতার ভিত্তিতে নির্বাচনে অংশগ্রহণ কিংবা অন্য কোনো নামে ধর্মভিত্তিক দলগুলো ভোটে অংশ নেবে। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলমান রয়েছে। আলোচনা ও সমঝোতা শেষে জনগণের সামনে তাদের লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য তুলে ধরবে।
ইসলামী আন্দোলনের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, ধর্মভিত্তিক দলগুলোর সমঝোতার বিষয়ে জামায়াতের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা চলমান রয়েছে। আলোচনার দরজা জামায়াতও বন্ধ করে দেয়নি, ইসলামী আন্দোলনও বন্ধ করেনি।
গত বুধবার রাজধানীর পুরানা পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ৪টি নিবন্ধিত ইসলামী দলের সঙ্গে বৈঠক করেন ইসলামী আন্দোলনের আমীর ও চরমোনাইয়ের পীর সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম। দলগুলো হলো- বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, নেজামে ইসলাম পার্টি ও খেলাফত মজলিস। এদিন গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গেও বৈঠক করেছে ইসলামী আন্দোলন। শিগগিরই আরও কয়েকটি দলের সঙ্গে বৈঠক হওয়ার কথা। এর আগে বরিশালে চরমোনাইয়ের পীরের সঙ্গে এক অনানুষ্ঠানিক বৈঠক করেন জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান। বুধবার বৈঠকে একটি লিয়াজোঁ কমিটি গঠন করার সিদ্ধান্ত হয়। পাঁচটি দল থেকে দু’জন করে মোট ১০ সদস্যের লিয়াজোঁ কমিটি করা হবে।
বৈঠকে দলগুলো ৫টি বিষয়ে একমত পোষণ করে। সেগুলো হলো- নির্বাচনে ইসলামপন্থিদের আসনভিত্তিক একক প্রার্থী দেয়ার বিষয়ে কৌশলগত আলোচনা এগিয়ে নেয়া, আধিপত্যবাদ ও সাম্রাজ্যবাদমুক্ত একটি ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্র তৈরির ব্যাপারে ঐক্যবদ্ধ হওয়া, ফ্যাসিবাদী দল হিসেবে আওয়ামী লীগ ও গণহত্যার সঙ্গে জড়িতদের বিচার নিশ্চিত করা, প্রয়োজনীয় ও মৌলিক সংস্কার শেষে যৌক্তিক সময়ের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান করা এবং নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন বাতিল করা।
বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে রেজাউল করীম বলেন, ইসলামী রাজনৈতিক দল একত্র হয়ে কতোগুলো মৌলিক বিষয়ে আমরা ঐকমত্যে পৌঁছাতে পেরেছি। জাতীয় নির্বাচনে ইসলামী দলগুলো একটি বাক্সে যেন ভোট পাঠাতে পারি, সে বিষয়ে কাজ অনেক দূর এগিয়েছে। আলোচনায় আমরা সন্তুষ্ট।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুস আহমেদ মানবজমিনকে বলেন, আমরা ইসলামী দলগুলো সমঝোতার ভিত্তিতে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে চাচ্ছি। এরই অংশ হিসেবে এই বৈঠক। তবে আলোচনা এখনো শেষ হয়নি। আলোচনা চলমান রয়েছে। আর আমরা এটাকে জোট বলতে চাচ্ছি। সমঝোতার ভিত্তিতে নির্বাচনে অংশগ্রহণ কিংবা অন্য কোনো নামে জনগণের সামনে এটা আত্মপ্রকাশ করা হবে।
পাঠকের মতামত
আলহামদুলিল্লাহ। শুভ কামনা রইল।